- শিক্ষা
- পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন ও অবহেলা খুঁজতে দুই কমিটি
পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন ও অবহেলা খুঁজতে দুই কমিটি

নতুন পাঠ্যবইয়ে ভুল-ভ্রান্তি, তথ্য বিভ্রাট ও ধর্মীয় উস্কানি আছে কিনা- তা বের করে সংশোধন এবং গাফিলতি ও ইচ্ছাকৃতভাবে এসবে কেউ জড়িত থাকলে তাদের খুঁজে বের করতে উচ্চ পর্যায়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করছে সরকার। এ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আগামী রোববারের মধ্যে এ দুই কমিটির বিস্তারিত রূপরেখা তুলে ধরা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
দীপু মনি বলেন, পাঠ্যবইয়ে থাকা যেসব ভুল-ভ্রান্তি চিহ্নিত হচ্ছে, সেটা আমরা খুব ইতিবাচকভাবেই দেখছি। এ ভুলগুলো শনাক্ত করতে আমরা দুটি কমিটি করছি। একটি কমিটিতে আমাদের বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। একই সঙ্গে পাঠ্যবই সংশোধনীতে একটি অনলাইন ফরম সরবরাহ করবে মন্ত্রণালয়। এ ফরমে বিষয়ভিত্তিক বইগুলোর ভুল বা অসংগতি সম্পর্কে দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে অবহিত করার সুযোগ থাকবে। ভুলগুলো আমলে নিয়ে আমাদের কমিটির বিশেষজ্ঞরা তা সমাধান করবেন; প্রয়োজনীয় সংশোধনী দেবেন। সেসব সংশোধনী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, অন্য কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধিসহ শিক্ষাসংশ্নিষ্ট সরকারের দুই মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, এনসিটিবির প্রতিনিধি ও সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সংযুক্ত থাকবেন। তাঁরা পাঠ্যবইয়ের এসব অসংগতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করবেন।
এ বছরের পাঠ্যবইয়ের মান-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে কাগজ ও বিদ্যুতের সংকট থাকার পরও আমরা ১ জানুয়ারিতে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। পাঠ্যপুস্তককে কেন্দ্র করে যেন কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, আজকাল সামাজিক মাধ্যম অনেক সরব। সেই মাধ্যম থেকে শুরু করে, গণমাধ্যম, রাজনীতির মাঠ- সব জায়গা থেকেই আমরা বইয়ের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা শুনছি। আমরা আগেও বলেছি, আমাদের এই বইগুলো নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষামূলকভাবে প্রণয়ন করেছি। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে মতামত পাচ্ছি, সব জায়গা থেকে পাচ্ছি। আমরা শিক্ষার দায়িত্বে যাঁরা আছি, এই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যাঁরা আছি, মানুষের মধ্যে বইগুলো নিয়ে যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে- সেটিকে আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি।
ডা. দীপু মনি বলেন, হয়তো শর্ষের মধ্যে কোথাও ভূত আছে। এনসিটিবির ভেতরেও যদি কেউ থেকে থাকে, যে কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ভুলগুলো করেছে। বই ছাপানোর বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে ভুল করার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কোথাও কারও গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক কোনো দিকে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে থাকলে তা খুঁজে বের করতে আমরা কাজ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন