অল্প বয়সে চলচ্চিত্রে এসেছি, জীবনের অনেক শখই পূরণ হয়নি: ববিতা

এমদাদুল হক মিলটন
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২২ | ০০:৩৩
ববিতা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রীর জন্মদিন আজ। ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক থাকেন কানাডায়। ছেলেকে দেখতে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় পর সেখানে ছুটে যান এই অভিনেত্রী। কয়েক মাস কাটিয়ে ফেরেন দেশে। বর্তমানে তিনি কানাডায় আছেন। সেখান থেকে জন্মদিন, অভিনয় জীবন এবং চলচ্চিত্র অঙ্গনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় তাঁর সঙ্গে-
শুভ জন্মদিন। সমকাল পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাকে শুভেচ্ছা। গেল বছরের মতো এবারও জন্মদিন ছেলে অনিকের কাছে কানাডায় কাটছে, কেমন লাগছে?
ধন্যবাদ। বরাবরের মতো মা-ছেলে মিলে এবার সুন্দর সময় কাটবে। ছেলে আমার এখন অনেক বড় হয়েছে। ও তো সারপ্রাইজ প্ল্যান করাও শিখেছে। তাই বলতে পারি, প্রতিবছরের মতো এবারও আমার জন্য কিছু একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে। এখন দেখার বিষয় কী সেটা।
আজকের দিনটি কীভাবে কাটানোর পরিকল্পনা করছেন?
সত্যি বলতে কি জন্মদিন নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা কখনও করিনি। ঢাকায় থাকলে কাটে একরকম, কানাডায় এলে কাটে অন্যরকম। কারণ ছেলে তার মায়ের জন্য নানা কিছু করতে চায়। দিনের বেলা ঘোরাঘুরির পাশাপাশি রাতে থাকে ওর স্পেশাল ডিনার।
জন্মদিনে ঢাকার কী মিস করবেন?
কয়েক বছর ধরে ডিসিআইআইয়ের [ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল] শুভেচ্ছাদূত হওয়ায় আমার জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা আসত। তাদের নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াতাম। ওরা আমাকে গান শোনাত, নেচে দেখাত, কাগজ দিয়ে ফুল, ফলসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করে আমায় দিত। পাশাপাশি আমার জন্য নানা ধরনের উপহার আনত। এবার ওদের মিস করব। এ ছাড়া চলচ্চিত্রের আমার অনুজ অনেকে বাসায় আসত, তাদেরও ভীষণভাবে মিস করব।
জন্মদিন নিয়ে আপনার উপলব্ধি কী?
জন্মদিন আমার কাছে শুধু আনন্দের তা নয়, ভাবনারও। কারণ আরও একটি বছর জীবন থেকে পার হয়ে গেল। তার পরও বলতে হয়, সবার দোয়ায় ভালো আছি। সুস্থ আছি। এটাই আনন্দের।
এই এক জীবনে আপনার সবচেয়ে বড় পাওয়া কী?
জীবনে যা চেয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। বিশ্বের বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি। নানান সম্মাননা পেয়েছি। এগুলোর চেয়ে সবচেয়ে বেশি যা পেয়েছি, তা হলো ভালোবাসা। ভক্তদের এত ভালোবাসার যোগ্য আমি না। তার পরও পেয়েছি। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে।
শুনলাম, ছেলের জন্য আমের আচার নিয়ে গেছেন?
ঠিকই শুনেছেন। অনিক আমার হাতে বানানো যে কোনো আচার খুব পছন্দ করে। তাই প্রায়ই ওর জন্য নানা ধরনের আচার বানাই। এবার আমার গুলশানের বাসার ছাদবাগানে লাগানো গাছের আম দিয়ে আচার বানিয়েছিলাম, সেটাই নিয়ে এসেছি।
ঢাকায় ফিরছেন কবে?
আমার দুই ভাই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁদের ছেলেমেয়েরাও আছে। অনিকের কাছে কয়েকটা দিন থাকার পর ভাইদের ওখানে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। সেখানে কিছুদিন ঘুরেফিরে আবার ছেলের কাছে ফিরে যাব। এরপর মা-ছেলে মিলে ঘোরাঘুরি শেষ হলেই ঢাকায় ফিরব। সত্যি বলতে কি, খুব অল্প বয়সে চলচ্চিত্রে এসেছি, অনেক শখ পূরণ হয়নি। এখন হাতে যতটুকু সময়, সেসময়ে চেষ্টা করব অপূর্ণ ইচ্ছাগুলো পূরণ করার। সবাই আমার আর আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
অভিনয়ে আর ফিরবেন না?
আমি অভিনয়ের মানুষ। তাই অভিনয় থেকে দূরে থাকা কঠিন। সব সময় ভালো চরিত্রের অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু আমাকে কাজে লাগানো যায়- এ রকম গল্প ও চরিত্র নিয়ে নির্মাতারা ভাবছেন না। ক্যারিয়ারের এই সময়ে গড়পড়তা কাজে নিজেকে জড়ানোর ইচ্ছা নেই। যেজন্য চলচ্চিত্রে কাজ করা হচ্ছে না। জুতসই গল্প ও চরিত্র পেলে অবশ্যই চলচ্চিত্রে ফেরার ইচ্ছা রয়েছে।