- বিনোদন
- ‘আমি মনে করি আমার গ্ল্যামার নেই’
‘আমি মনে করি আমার গ্ল্যামার নেই’

শবনম ফারিয়া। মডেল ও অভিনেত্রী। সম্প্রতি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র 'দেবী'। করোনাভাইরাসের কারণে এখন ঘরে থেকেই সব কাজ করছেন এই অভিনেত্রী। বর্তমান সময়, নাটক, চলচ্চিত্র ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তার সঙ্গে-
করোনাভাইরাসের কারণে বাসায় আছেন, সময় কীভাবে কাটছে?
টুকটাক ঘরের কাজ যেমন করছি। তেমনি ঘুম, খাওয়া-দাওয়া, বই পড়া আর টিভি দেখার মধ্য দিয়ে সময় কেটে যাচ্ছে। এসবের ফাঁকে শুটিংয়ের সব কস্টিউম গোছাচ্ছি। কখনও আবার কাগজ-পেনসিল দিয়ে কস্টিউমের ডিজাইন করছি। শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত বাসায় ইয়োগা চলছে। এভাবেই কত কী যে করছি, তার হিসাব দেওয়া কঠিন। বাসায় থাকা মানেই কাজকর্মহীন থাকা তা নয়। বাসায় থেকেও অনেক কিছু করা যায়- তা নতুন জানলাম এবার।
শুনলাম নতুন নতুন রান্নার কৌশলও আয়ত্ত করছেন?
হ্যাঁ। কয়েক মাস আগেও আমি একদমই রান্না পারতাম না। কিন্তু এই ক'দিনে ইউটিউব দেখে অনেক রান্না শিখেছি। প্রায়ই বিভিন্ন রকমের কেক বানাচ্ছি। মায়ের হাতের যেসব রান্না পছন্দ ছিল, তা শিখে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আসলে এতদিন এভাবে বাসায় থাকার অভিজ্ঞতা হয়নি। প্রথমে বেশ বিরক্ত লাগছিল। সেই বিরক্তি কাটাতে নানা ধরনের কাজ করা শুরু করেছিলাম। তখনই রান্নার বিষয়টি মাথায় আসে। শুরু করি বিভিন্ন খাবার রান্না। আর রান্না করতে গিয়েই ঘরবন্দির বিরক্তিভাব কেটে গেছে।
নাটক ও চলচ্চিত্রের কাজ আবারও শুরু হয়েছে। আপনি ফিরবেন কবে?
নাটকের কাজে অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু আমি এখনই কাজে ফিরছি না। কারণ বাসায় আমার আম্মুসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও রয়েছে। আম্মুর ডায়াবেটিস রোগ আছে। যে কারণে এই সময়ে শুটিংয়ে গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের বিপদে ফেলতে চাই না। প্রয়োজনে আর একটু সময় নেব। আমার কাছে জীবন আগে, পরে জীবিকা।
লকডাউনের আগে তৌকীর আহমেদের 'রূপালি জোছনায়' ধারাবাহিকের কাজ করেছেন। কেমন ছিল সে অভিজ্ঞতা?
তৌকীর আহমেদ ভাইয়ের অভিনয়ের চেয়ে তার নির্মিত কাজগুলো আমার বেশি দেখা হয়েছে। এ রকম একজন গুণী মানুষের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাই অন্যরকম। সৌভাগ্যও বলতে পারেন। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে। শুটিংয়ের সময় বেশ আনন্দ নিয়ে কাজটি করেছি। শুনেছি শিগগিরই চ্যানেল আইয়ে ধারাবাহিকটি প্রচার হবে।
দেবীর পর আর সিনেমায় দেখা যায়নি কেন?
দেখুন, আমার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র 'দেবী'র মাধ্যমে দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি। সে কারণে আগামীতে কাজের ব্যাপারে অনেক সতর্ক করে তুলেছে। সিনেমায় বুঝেশুনেই অভিনয় করতে চাই। যে জন্য নতুন সিনেমায় অভিনয়ে একটু সময় নিচ্ছি। এফডিসি ঘরানার সিনেমাগুলোতে কাজের আগ্রহ নেই। কারণ ওইসব ছবিতে গ্ল্যামার লাগে। আমি মনে করি আমার গ্ল্যামার নেই, অভিনয়ের সামান্য কিছু ক্ষমতা আছে। এটাই কাজে লাগাতে চাই। তাছাড়া 'দেবী'র মতো মানসম্পন্ন সিনেমার প্রস্তাব এখনও পাইনি। তাই কবে নাগাদ নতুন ছবিতে অভিনয়ের ঘোষণা দিতে পারব, সেটাও বলতে পারছি না। তবে আশার কথা হলো, এখন আগের চেয়ে ভালো সিনেমা নির্মিত হচ্ছে। সে হিসেবে অনেকদিন ধৈর্য ধরে থাকতে হবে বলেও মনে হয় না। ভালো কাজের সুযোগ একসময় না একসময় আসবেই।
ঘরে বসে অনেকে অনলাইনে কাজ করছেন। আপনাকে এ মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ কী?
বাসায় নিজের মতো থাকতেই ভালো লাগে। ক্যামেরা দিয়ে দৃশ্য রেকর্ড করে দেওয়ার মতো বাসায় আমার কেউ নেই। তা ছাড়া অনলাইনের কাজ আমার অপছন্দের। অনলাইনের অনেক কাজ দেখেছি কিন্তু তা কোয়ালিটিফুল মনে হয়নি। তাই এতে মন টানে না।
শুটিংয়ে অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিন কাটত। বাসায় বসে সেই দিনগুলোর কথা মনে হয়?
মনে না হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। সহকর্মীদের খুব মিস করি। তারাও আমার পরিবারের সদস্যের মতো। শুটিং না করলেও ক্যামেরা... অ্যাকশন... কাট- এই শব্দগুলো প্রতিনিয়তই কানে বাজে।
কাজের মাঝে ডুবে থাকতে কি সবসময় ভালো লাগে...
নাটকে আমি আরেকজন মানুষ সেজে থাকি। এটা অনেক চাপের। মাঝে মধ্যে মাথার মধ্যে চরিত্র থেকে যায়। তখন সেই চাপ থেকে বের হতে হয়। বই পড়ে বা সিনেমা দেখে আমি এগুলো কাটিয়ে উঠি। অবশ্য বাসায় ঢুকলে আমি আর শবনম ফারিয়া থাকি না, হয়ে যাই আদরের তৃপ্তি। এই ডাক নাম আমাকে অনেক প্রশান্তি দেয়।
মন্তব্য করুন