হাবিব ওয়াহিদ। তারকা কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক। করোনায় ঘরবন্দি থাকার পরও শ্রোতাদের জন্য একের পর এক নতুন গানের আয়োজন করে যাচ্ছেন তিনি। ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন নতুন ভিডিও প্রকাশের। সম্প্রতি এইচডব্লিউ ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত 'বন্ধু রে' গানসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে-

ঘরবন্দি থেকেও একের পর এক গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন। এত কাজের প্রেরণা পাচ্ছেন কীভাবে?

দুঃসময়কে জয় করার লড়াই থেকেই কাজের প্রেরণা পাচ্ছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশে সতর্কতা মেনে নতুন উদ্যমে অনেকে কাজ করে যাচ্ছেন। যেহেতু বাইরে যাওয়া হয়নি বহুদিন, তাই পুরো সময়টা ছিল হাতের মুঠোয়। মনে হয়েছে, এখনই তো সময়, সৃষ্টির নেশায় ডুবে থাকার। যেজন্য দিনরাত নতুন গানের কাজ নিয়ে ডুবে ছিলাম। অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করা চেষ্টা করেছি লকডাউনের সময়টাতে। সেই সময়ের গানগুলো একে একে প্রকাশ করছি।

নীরিক্ষাধর্মী কাজ বেশি করছেন বলেই কি এর মধ্যে 'বন্ধু রে'সহ এখনকার অন্যান্য গানগুলো এতটা ভিন্ন ধাঁচের মনে হচ্ছে?

সময়ের সঙ্গে মানুষের রুচি, চাহিদা, পোশাক-পরিচ্ছদ, ব্যবহূত জিনিসপত্র থেকে শুরু করে অনেক কিছু বদলাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে নাটক, সিনেমার গল্প বলার ধরন, গানেও থাকছে তার ছাপ। তাই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে হলে নতুন ধাঁচের কিছু না কিছু সৃষ্টি করতেই হয়। তার জন্য এক্সপেরিমেন্ট না করলেই নয়। আমিও কাজের এক্সপেরিমেন্টের জন্য এত সময় আগে কখনও পাইনি। স্টেজ শো, বিদেশ ট্যুর কিছুই ছিল না, ঘর থেকেই বের হওয়া কঠিন। তাই তো সময়টা পুরোপুরি ভিন্ন ধাঁচের সংগীত সৃষ্টির পেছনে ঢেলে দিয়েছি।

'বন্ধু রে' গানে নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরেছেন। এটা শ্রোতার কাছে কেমন লাগবে তা ভেবেছিলেন কি?

প্রতিটি কাজ নিয়েই আলাদা করে ভাবতে হয়। 'বন্ধু রে' গানের পেছনেও তাই অনেক সময় দিয়েছি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করলেও শ্রোতার ভালো লাগা নিয়ে ভাবতে হয়। তাই গায়কীতে নিজেকে ভেঙে 'বন্ধু রে' গানটি গাইলেও শ্রোতার ভালো লাগা নিয়েও আলাদা করে ভাবতে হয়েছে। এর আগে 'প্রেমের খেলা' গানটি করার সময় ফোকের ছাপ তুলে ধরতে চেয়েছি। ডিজে সোনিকার 'কানে কানে' গানের কম্পোজিশনও সুরের সঙ্গে মানানসই রাখার চেষ্টা ছিল। 'কুয়াশা' গানের রিমেক করার সময়, আগে যা অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে, তা করে দেখানোর চেষ্টা ছিল। আবার শ্রোতার কাছে মেলোডির যে চাহিদা, তা অন্যান্য গানে বিভিন্নভাবে রাখার চেষ্টা করেছি। আসলে যাই করি না কেন, শ্রোতা থাকে তার কেন্দ্রবিন্দুতে।

করোনার জন্য স্টেজ শো, টিভি লাইভ, বিদেশ সফর- সব থেকে গেছে। পেশাদার শিল্পীদের জন্য এই সময়ে কীভাবে লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন?

প্রথমত সবাইকে করোনা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে, এরপর ভাবতে হবে কাজের বিষয়। জানি এটা কঠিন সময়, কিন্তু আমরা জীবনে হার মানতে চাই না। অনলাইন হতে পারে এই সময়ের বড় অবলম্বন। ভার্চুয়াল কনসার্ট, গানের প্রকাশনা- আপাতত এগুলো দিয়েই পেশাদার শিল্পী ও মিউজিশিয়ানদের টিকে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ভাবতে হবে, আরও নতুন কী করা যায়। বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই আমাদের ভিন্ন আঙ্গিকের আয়োজন নিয়ে ভাবতে হবে। এ ছাড়া তো উপায়ও নেই।

সামনে ঈদ, এ উপলক্ষে নতুন কোনো গান তৈরি করেছেন?

আমি তো কাজের মধ্যেই আছি। গানে প্রকাশও করছি ধারাবাহিকভাবে। তাই আশা করছি, ঈদেও ভক্তদের জন্য নতুন গান প্রকাশ করতে পারব।