স্টার সিনেপ্লেক্স বন্ধের উপক্রম

সরকারি সহায়তা না পেলে দেশের জনপ্রিয় সিনেমা থিয়েটার স্টার সিনেপ্লেক্স বন্ধ হয়ে যাবে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণাই দিলেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল।

তিনি সরকারের কাছে ৫টিসহ মোট ৭টি দাবি তুলে ধরেছেন। যেগুলো পূরণ হলে স্টার সিনেপ্লেক্স এদেশে সিনেমা থিয়েটারের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে। সেগুলো হলো-

১) নগরবাসীর বিনোদনের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনতিবিলম্বে সিনেমা হলসমূহ খুলে দেয়া

২) জরুরি আর্থিক সহায়তা কিংবা প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা

৩) সিনেমা হলের টিকিটের ওপর সকল প্রকার মুসক ও কর মওকুফের সুযোগ প্রদান

৪) সুদবিহীন ঋণ প্রদানের অনুমোদন

৫) উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র সমূহ শর্তহীনভাবে আমদানির অনুমতি প্রদান

এছাড়া আরও দুটি দাবি তিনি উপস্থাপন করেছেন স্টার সিনেপ্লেক্স আছে এমন তিনটি শপিংমল কর্তৃপক্ষের কাছে এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির কাছে। 

শপিংমল কর্তৃপক্ষের কাছে রুহেল বলেন, করােনাকালীন পরিস্থিতে স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রতিটি শাখা বিভিন্ন শপিং মলে ভাড়ায় পরিচালিত হয়। এই সময়ে শপিংমল কর্তৃপক্ষের কাছে ভাড়া মওকুফ করা ও অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অর্ধেক ভাড়া নেয়ার অনুরোধ করছি।

প্রযোজক সমিতিকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, সেন্সর পাওয়া সিনেমাগুলোতে মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। শুধু সিনেমা হল খুললেই হবে না, নতুন ছবি মুক্তি না পেলে দর্শক হলে আসবে না।

রুহেল আরও বলেন, 'আধুনিক মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চমৎকার উদাহরণ হতে পারে । নির্ধারিত আসনের জন্য অল্পসংখ্যক লোক টিকিটের বিনিময়ে সিনেমা দেখে। অন্যান্য জনবহুল স্থানের তুলনায় এখানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মানুষের বিনোদনের সুযোগ করে দেয়া সম্ভব বলে আমরা মনে করি। স্টার সিনেপ্লেক্স বরাবরই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন।'

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রুহেল বলেন,  চীন, জার্মানি রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, নরওয়ে, ইতালি, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয় মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এরই মধ্যে সিনেমা হল চালু করা হয়েছে। ভারতেও মাসে সিনেমা হল খুলে দেয়ার কথা রয়েছে। শুধু তাই নয়, সংস্কৃতি ও বিনোদনের সংশ্লিষ্ট ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আর্থিক সহায়তাও করছে বিভিন্ন দেশের সরকার। মুভি থিয়েটার ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর জন্য ২ ট্রিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা বিল পাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ৫ বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দিয়েছে। যুক্তরাজ্য দিয়েছে ২ বিলিয়ন ডলার। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে স্টার সিনেপ্লেক্স এদেশে ব্যবসা করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে ৩টি শাখায় ১৫টি স্ক্রিনে সিনেমা দেখাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন করে মিরপুরে চতুর্থ শাখা চালুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এমন অবস্থায় উপরোক্ত দাবি পূরণ না হলে তাদের সকল ব্যবসা হুমকির মুখে পড়বে বলে মন্তব্য সিনেপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষের।