ফজলুর রহমান বাবু। অভিনেতা। দীর্ঘদিন পর আবারও শুটিংয়ে ফিরেছেন তিনি। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো  তার সঙ্গে-

অনেক শব্দ পাচ্ছি। ঘরের বাইরে নাকি?

হুম, মানিকগঞ্জে আছি। কতদিন আর বাসায় থাকা যায়। সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। করোনা পৃথিবীকে দুর্বিষহ করে ফেলেছে। এমন জীবন কে চায় বলুন। তাই সাহস করে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছি।

মানিকগঞ্জে কেন গিয়েছেন?

এখানে আবু শাহেদ ইমনের পরিচালনায় একটি নাটকের শুটিং করছি। এর নাম 'আড়াই মণ স্বপ্ন'। তিন ধরেই নাটকটির দৃশ্যধারণ চলছে। করোনাকালে একজন মানুষ ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে ফিরে আসার পরে কী ধরনের পরিস্থিতিতে পড়ে, তা নিয়ে গল্পটি সাজানো হয়েছে। আগামীকাল [আজ] এর শুটিং শেষ করে ঢাকায় ফিরব।

শুনলাম, 'ভদ্রপাড়া' ধারাবাহিকের কাজ শুরু করেছেন?

ঠিকই শুনেছেন। এই নাটকের মাধ্যমে দীর্ঘ চার মাসের করোনাকালীন বন্দি জীবনের অবসান ঘটালাম। এর শেষ লটের শুটিং হয়েছিল কিছুদিন আগে। নাটকের বেশিরভাগ শিল্পী শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। শুধু আমার জন্য তো কাজ আটকে থাকতে পারে না। তাই এ নাটকে কাজ শুরু করেছি।

তাহলে এখন নিয়মিত শুটিংয়ে অংশ নেবেন ...

করোনা পরিস্থিতি ঠিক কবে স্বাভাবিক হবে সেটা আমাদের কারও জানা নেই। কিন্তু এভাবে বসে থাকাও আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই নিয়মিত শুটিং করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে সেটি অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। এরই মধ্যে হাতে বেশকিছু কাজ জমে আছে। এগুলো আগে শেষ করব। চলতি বছরের শুরুতে মূলত আমি সিনেমায় একটু বেশি সময় দিয়েছি। বলা যায়, টিভি নাটকের চেয়ে আমার ব্যস্ততা সিনেমায় বেশি এখন। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র শুটিংয়ের অপেক্ষায় আছে। পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলে এই ছবিগুলোর কাজ শুরু হবে। এর মধ্যে রয়ে 'উড়াল', 'অর্জন-৭১' ও 'রাত জাগা ফুল'সহ আরও কয়েকটি সিনেমা।

শুটিংয়ে স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু মানা হচ্ছে?

শুটিংয়ে অনেক সময় মুখের কাছে এসে চিত্রগ্রাহক দৃশ্যধারণ করেন। তখন আদতে তিন ফুট মেনে চলার নিয়ম রক্ষা করা কঠিন। তবে যতটা সতর্কতা মেনে চলা সম্ভব, তা করা হচ্ছে। কিন্তু আউটডোরের শুটিংয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিছুদিন আগে জীবনের ৬০তম বসন্ত পাড়ি দিলেন। দীর্ঘ জীবনে কোনো অপ্রাপ্তি আছে?

জীবনকে কখনোই জটিলভাবে দেখি না। যেখানে চাহিদা বেশি থাকে, সেখানে অপ্রাপ্তির পরিমাণও বেশি থাকে। আমার কখনোই অত চাওয়া-পাওয়া ছিল। তবুও হারানোর চেয়ে পেয়েছি বেশি। আমাদের দেশে অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়া কঠিন। কিন্তু ভাগ্যগুণে আমি সেটা পেরেছি। এখন অভিনয় নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে চাই। আরও নতুন চরিত্র ধারণ করতে চাই। এর বেশি কিছু আর চাওয়ার নেই।

কাজের সমালোচনাকে কীভাবে দেখেন?

যথাযথ সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবেই দেখি। সমালোচনা একজন শিল্পীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের এখানে সমালোচনা হয়, তবে ইতিবাচক নয়। মিডিয়ায় বর্তমানে অনেক গ্রুপ তৈরি হয়েছে। তাদের অনেকে নিজেদের কাজ নিয়ে নিজেরা খুব প্রশংসা করে। অন্যের কাজ ভালো হলেও সেটার খুঁত বের করে। এতে মিডিয়ার ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে।

অনেক ধরনের কাজ করছেন। সব ধরনের কাজ করে কি সন্তুষ্ট?

অনেক সময় অনুরোধ বা সম্পর্কের খাতিরেও করতে হয়। তবে সব কাজে তুষ্ট নই। একজন অভিনয়শিল্পীর সব সময় ভালো চরিত্রের প্রতি আগ্রহ থাকে। তাই প্রতিনিয়ত নিজের অভিনীত চরিত্র নিয়ে ভাবি। নতুন চরিত্র দেখলেই মনে হয়, যদি ওই চরিত্রের মধ্যে বিরাজ করতে পারতাম! স্ট্ক্রিপ্ট রাইটার চরিত্রের একটি রূপ দিয়ে যান। তার বাইরে কী আছে, তা নিয়েও ভাবি।