বর্তমান সময়ের তুমুল দর্শকপ্রিয় নাট্য সিরিজ 'ব্যাচেলর পয়েন্ট'। নাটকটির শুরু থেকেই সিজন ১ ও ২ দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি। এই সিরিজে কাবিলা, নেহাল, শুভ, আরেফিন আর হাবু ভাই নামের চরিত্রগুলো তরুণ প্রজন্মের দর্শকদের কাছে যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। নাটকটির কোন কোন পর্ব ধ্রুব টিভিতে প্রচারের একদিনের মধ্যেই ১০ লাখ ভিউ হয়েছে।

ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ১ ও ২-এর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর তৃতীয় সিজন প্রচার হচ্ছে। ইতোমধ্যে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন থ্রি’ ১০ পর্ব প্রচার হয়ে গেছে। সিজন থ্রি দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেললেও কয়েকটি কারণে দর্শকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্মাতা অমির সমালোচনাও করছেন। কারণ, এই সিজনে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন নির্মাতা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- এবারের পর্বগুলোতে নাটকটির অন্যতম চরিত্র নেহাল ও আরেফিনকে না রাখা। আর এ জন্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভক্তদের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে নির্মাতাকে।

নেহাল ও আরেফিন- দুই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৌসিফ মাহবুব ও শামীম হাসান সরকার। সম্প্রতি সমকালের সঙ্গে এক আলাপে ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন থ্রি’তে নেহাল ও আরেফিন চরিত্র না থাকার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন সিরিজটির নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি। 

প্রথমে চরিত্র দু’টিকে না পেয়ে যারা সমালোচনা করছেন তাদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা জানিয়ে অমি বলেন, ‘আরেফিন আর নেহাল এই দু’টি চরিত্র তো আমারই সৃষ্টি। কোন জনপ্রিয় সিরিজ থেকে জনপ্রিয় চরিত্র সরিয়ে নেওয়ার পর যদি দর্শকরা সে চরিত্রগুলো মিস না করেন, তাহলে তো ওই চরিত্রের স্বার্থকতা থাকে না। আরেফিন ও নেহাল না থাকায় মানুষ আমাকে গালি দিলেও আমি খুশি। কারণ, তারা আরেফিন ও নেহাল চরিত্র দু’টি মিস করছেন। তারা আবার ওই দুই চরিত্র ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছেন। বিষয়টি আমি খুবই পজিটিভলি দেখছি।’

জনপ্রিয় দু’টি চরিত্র সরিয়ে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অমি বলেন, ‘সেটা অবশ্যই গল্পের প্রয়োজনে। আমাদের স্কুল এবং কলেজ জীবনে যে ফ্রেন্ডগুলো থাকে তাদের সঙ্গে কি সারা জীবন একসঙ্গে থাকা হয় আমাদের? হয় না। একটা সময়ে দেখা যায়- খুব ক্লোজ ফ্রেন্ডদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকে না। আবার হুট করে একদিন যোগাযোগ হয়। এমনটি তো নাটকের ক্ষেত্রেও হতে পারে। প্রথম জীবনে ব্যাচেলর হিসেবে যার সঙ্গে ফ্ল্যাটে ওঠা হয়, তার সঙ্গে কিন্তু সবসময় থাকা হয় না। পরিবর্তন আসে। নানা রকম মানুষের সঙ্গে ব্যাচেলর জীবনে থাকা হয়। ব্যাচেলর পয়েন্টেও এমনটিই দেখা যাচ্ছে।’

তাহলে কি চরিত্রগুলো আর ফিরবে না? -এমন প্রশ্নের উত্তরে অমি বলেন, ‘যদি সময় এবং পরিস্থিতির পাশাপাশি সবকিছু মিলে যায় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে আরেফিন ও নেহাল চরিত্র আবার আসতেও পারে। এমন তো না যে, চরিত্রগুলো মারা গেছে। তারা জীবিত আছে। কেবল তারা ফ্ল্যাটে একসঙ্গে নেই। তারা নিজেদের মতো করে আলাদা আছে। ভবিষ্যতে আবার কাবিলা, শুভ, পাশা ও হাবু ভাইদের সঙ্গে নেহাল ও আরেফিনদের দেখা হয়ে যেতেই পারে।’

কিন্তু দর্শকরা তো এই পরিবর্তনের সমালোচনা করছেন। তাদের উদ্দেশ্যে কী বলবেন?  অমি বলেন, ‘দর্শকরা আবেগপ্রবণ হয়ে আমার সমালোচনা করছেন। আমি তাদের শ্রদ্ধা করি। তাদের সমালোচনাকে পজিটিভলি নিই। কিন্তু দর্শকদের বলবো, তারা যদি নিজেদের বাস্তব জীবনের দিকে তাকান, তাহলে এর উত্তর পেয়ে যাবেন। বাস্তব জীবনেও কিন্তু আমরা সব বন্ধুরা একসঙ্গে নেই। যে যার মতো জীবন অতিবাহিত করছেন। কাজেই নাটকে নেহাল ও আরেফিনও দূরে চলে যেতেই পারে। আবার কোন দিন ফিরেও আসতে পারে তাদের মাঝে। তবে যারা আবেগপ্রবণ হয়ে ও পরিচালককে গালি দিয়ে নেহাল ও আরেফিন চরিত্রকে খুঁজছেন তাদের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে আমি বলবো, তারা নাটকটি নিয়মিত দেখছেন। চরিত্রগুলো মিস করছেন। আগামীতেও আপনারা ব্যাচেলর পয়েন্টের সঙ্গেই থাকুন।’