মৃত্যু মানুষের অমোঘ নিয়তি। ২০২০ সালে চলচ্চিত্র, সংগীত, মঞ্চ ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এসব মানুষের শূন্যতা কখনও পূরণ হয় না। চলতি বছরে চলে যাওয়া বরেণ্য তারকাদের প্রতি রইল নন্দনের শ্রদ্ধাঞ্জলি-

আলী যাকের [৬ নভেম্বর ১৯৪৪ - ২৭ নভেম্বর ২০২০]

২৭ নভেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের। মঞ্চে তিনি বিদ্রোহী নূরলদীনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে রোমহর্ষে জেগে উঠত দর্শক। এ রকম নানা চরিত্রে অভিনয় করে তিনি নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। স্বাধীনতা-পরবর্তী মঞ্চনাটকের অন্যতম সংগঠক ও সফল নাট্যনির্দেশকও ছিলেন আলী যাকের। সংস্কৃতিজগৎ ছাপিয়ে তার মেধার দ্যুতি ছড়িয়েছিল বিজ্ঞাপনী খাতে। একুশে পদকসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আলাউদ্দিন আলী [২৪ ডিসেম্বর ১৯৫২ - ৯ আগস্ট ২০২০]

চলতি বছর ৯ আগস্ট মারা যান বরেণ্য সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। তিনি একাধারে ছিলেন গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক। তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

চলচ্চিত্র অভিনেতা সাত্তার

এন্ড্রু কিশোর [৪ নভেম্বর ১৯৫৫ - ৬ জুলাই ২০২০]

দীর্ঘ ১০ মাস ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ৬ জুলাই নিজ শহর রাজশাহীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। বাংলা গানের এই কণ্ঠশিল্পী 'প্লেব্যাক সম্রাট' হিসেবেও পরিচিত। বাংলাদেশের আধুনিক ও চলচ্চিত্রজগতের কালজয়ী অনেক গান তার কণ্ঠে সমৃদ্ধ হয়েছে। সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, প্রেম-বিরহ- সব অনুভূতির গানই তিনি গেয়েছেন।

ইশরাত নিশাত [১১ জানুয়ারি ১৯৬৪- ২০ জানুয়ারি ২০২০]

দেশের মঞ্চ নাটকের 'বিদ্রোহী কণ্ঠ' ছিলেন ইশরাত নিশাত। তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেত্রী, নির্দেশক ও আবৃত্তিশিল্পী। প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার কণ্ঠ ছিল সবসময় সোচ্চার। চলতি বছর ২০ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

আজাদ রহমান [১ জানুয়ার ১৯৪৪ - ১৬ মে ২০২০]

বিখ্যাত সুরকার গুণী সংগীতজ্ঞ আজাদ রহমান মৃত্যুবরণ করেন ১৬ মে। তিনি বাংলা খেয়াল গানের প্রবর্তক ছিলেন। বাংলাদেশে প্রথম সংগীত পরিচালনা করেন বাবুল চৌধুরীর 'আগন্তুক' ছবিতে।

কে এস ফিরোজ [৭ জুলাই ১৯৪৬- ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০]

৯ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান অভিনেতা কে এস ফিরোজ। তিনি নাট্যদল 'থিয়েটার'-এর হয়ে অভিনয় শুরু করেন। টিভিতে প্রথম অভিনয় জামান আলী খানের 'দীপ তবুও জ্বলে'।

চিত্রসম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিন্টু

সাদেক বাচ্চু [১ জানুয়ারি ১৯৫৫ - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০]

করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান অভিনেতা সাদেক বাচ্চু। পাঁচ দশকের অভিনয় জীবনে তিনি কাজ করেছেন মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমায়।

আব্দুস সাত্তার [২৬ মে ১৯৫৮- ৫ আগস্ট ২০২০]

অভিনেতা আব্দুস সাত্তার ৫ আগস্ট মারা যান। ইবনে মিজানের 'আমির সওদাগর ভেলুয়া সুন্দরী' ছবির মধ্য দিয়ে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে আলমগীর পিকচার্সের ব্যানারে তিনি 'রঙিন রূপবান' ছবিতে প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন।

মহিউদ্দিন বাহার [২৭ ডিসেম্বর ১৯৪৭ - ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০]

১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান অভিনেতা মহিউদ্দিন বাহার। তিনি জনপ্রিয়তা পান ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'ইত্যাদি'র সুবাদে।

হারানোর তালিকা সুদীর্ঘ

এ বছরের হারানোর তালিকা আরও সুদীর্ঘ। এ তালিকায় রয়েছেন অভিনয়শিল্পী ফেরদৌসী আহমেদ লীনা, সংগীতশিল্পী জবা চৌধুরী। মুভি মোঘল খ্যাত প্রযোজক কেএম জাহাঙ্গীর খান, আনন্দমেলা চলচ্চিত্রের আব্বাস উল্লাহ, চলচ্চিত্র পরিচালক মহিউদ্দিন ফারুকসহ আরও অনেকে।