- বিনোদন
- ২২ বছর আগে অপরিপক্ক হলেও দূরদর্শী ছিলাম: শাকিব
২২ বছর আগে অপরিপক্ক হলেও দূরদর্শী ছিলাম: শাকিব

১৯৯৯ সালের ২৮ মে মুক্তি পায় শাকিব খান অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র 'অনন্ত ভালোবাসা'
দুই যুগের চলচ্চিত্র অভিযাত্রায় তিনি নিজেই এখন পুরো বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেছেন সাফল্য ও ব্যবসার মানদণ্ডে। তিনি আর কেউ নন, ঢাকাই ছবির সুপারস্টার শাকিব খান। ১৯৯৯-এর 'অনন্ত ভালোবাসা' থেকে ২০২০-তে এসে ' নবাব এলএলবি'। এখন শুধু তার নামে পার পেয়ে যায় বাংলাদেশের সিনেমা।
শাকিব খানকে আজ কেউ তাকে 'সেরা নায়ক', কেউ 'সুপারস্টার', কেউ 'নায়ক', কেউ বা 'কিং খান' এমন অনেক বিশেষণেই বিশেষায়িত করে আসছেন। কিন্তু তার প্রকৃত নাম মাসুদ রানা। চলচ্চিত্রে আসার পরই রানা থেকে হয়ে ওঠেন শাকিব। পরের ইতিহাস জানা সবার। সাফল্য তাকে এত উচ্চতায় নিয়ে গেছে যে, ভক্তরা নামে নয়, বিশেষণে ডাকতেই আনন্দ পান।
চলচ্চিত্রের দুই যুগ পার করছেন তিনি। পার করছেন দারুণ সময়। যে সময়ের জন্য একদিন তিনি স্বপ্ন দেখতেন, যে স্বপ্ন তাকে ঘুমুতে দিত না। নারায়ণগঞ্জ থেকে এফডিসি, এফডিসি থেকে কাকরাইল, পরিচালকদের দুয়ারে দুয়ারে হানা- সবই করেছেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি রাজ করছেন এ অঙ্গন। অথচ ১৯৯৯ সালে সোহানুর রহমান সোহানের 'অনন্ত ভালোবাসা' ছবির হ্যাংলা-পাতলা ছেলেটাই একদিন চলচ্চিত্রে রাজ করবেন- এমনটা কেউ ভাবেননি। সাফল্য ও দর্শকপ্রিয়তার বিচারে শাকিব খানের ধারে-কাছেও কোনো নায়ককে পাওয়া যাবে না। চিত্রনায়ক মান্নার মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র যেখানে থমকে যাওয়ার উপক্রম, সেখানেই হুট করে জ্বলে ওঠেন শাকিব। জ্বলছেন আজও। আজ ঢাকা তো কাল ভারত, মালয়েশিয়া, স্কটল্যান্ড, লন্ডন হয়ে অস্ট্রেলিয়া। অপ্রতিরোধ্যতার অগ্রযাত্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী পথচলা অভিযাত্রী শাকিব খান। চার বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী নায়কও বটে।
২২ বছরের এ যাত্রার প্রথম দিনের কথা স্মরণ করে আজ শাকিব খান বললন, যখন চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করি তখন আমি অপরিপক্ক কিন্তু দূরদর্শী ছিলাম। জানতাম না কোথায় যাচ্ছি বা কি করব! শুধু একুটু জানতাম, আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং কোনো সময় হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। আজ যখন ফিরে তাকাই, তখন আমি সকল মানুষ এবং অভিজ্ঞতার কাছে কৃতজ্ঞ।
১৯৯৯ সালের ২৮ মে মুক্তি পায় শাকিব অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র 'অনন্ত ভালোবাসা'। প্রথম ছবিটিতে তাকে সুযোগ দানকারীদের কৃতজ্ঞতাচিত্তে স্মরণ করেন শাকিব। দীর্ঘ এ যাত্রায় ভক্তদের পাশে থাকায় ধন্যবাদ জানান তাদেরও। শাকিব খান বলেন, ''আমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘অনন্ত ভ্যালোবাসা’র পরিচালক এবং প্রযোজকের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন। এরপর আমার সকল পরিচালক, প্রযোজক, সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিচ্ছি যাদের জন্য আজকের আমি তৈরি হয়েছি।''
দীর্ঘ এ ক্যারিযারে আপনার কাছে সাফল্যের মূলমন্ত্র কী? এমন প্রশ্ন রাখলে শাকিবের সাদাসিদে উত্তর, 'কোনো মূলমন্ত্র নেই। তবে একজন হিরোর সাফল্যের মূলমন্ত্র কিন্তু দর্শকদের ভালোবাসা। নায়ক যদি দর্শকদের চাওয়া-পাওয়ার মূল্য দেয়, তাহলে দর্শকদের কাছে সে গ্রহণযোগ্যতা পায়। সাফল্যও আসে।'
বর্তমানে একমাত্র শাকিব খানের ছবি নিশ্চয়তা দিতে পারছে প্রয়োজকদের। তাদের টাকা ফেরতের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছেন তিনি। দিন শেষে তাই শাকিবেই ভরসা রাখছেন সব প্রযোজক। শাকিব খান অভিনীত ছবি মানেই প্রযোজকদের নিশ্চয়তা। শাকিব খান এখন আগাগোড়াই বিপ্রফেশনাল নায়ক। অভিনয় জীবনে তার যা কিছু অর্জন সবকিছুই তিনি কখনও দর্শকের জন্য উৎসর্গ করেছেন, কখনও ছেলে আব্রাম খান জয়কে, কখনও বা উৎসর্গ করেছেন মা-বাবাকে। এত এত যার সাফল্য, এত এত যার ভাঁড় তার একটু ভুল হবে না, তা কিন্তু নয়। বিগত ১০ বছরে বেশ সমালোচিতও হয়েছেন শাকিব। সেটা না কারণেই। তবে সব সমালোচনা ভেসে গেছে সাফল্যের জোয়ারে।
মন্তব্য করুন