জীবন যতটা উদযাপন করা যায় ততটাই ভালো: সুবর্ণা মুস্তাফা
সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবি: সংগৃহীত
মীর সামী
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১২:৪৭ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১২:৪৯
সুবর্ণা মুস্তাফা। বরেণ্য অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা ও আবৃত্তিকার। রুচিশীল অভিনয় আর মিষ্টি হাসির এই তারকাকে বর্তমান প্রজন্মের প্রায় সব অভিনেত্রী আদর্শ মনে করেন। আজ দেশবরেণ্য এই গুণীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। জন্মদিন উদযাপন এবং নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে
শুভ জন্মদিন, দৈনিক সমকালের পক্ষ থেকে আপনাকে শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ। আপনাদেরও ধন্যবাদ। আপনাদের মাধ্যমে আমার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা জানাই।
আজকের দিনটি কীভাবে উদযাপন করবেন?
এই বয়সে জন্মদিন নিয়ে কী বলব! তবে যে কোনো জন্মদিনই কিন্তু দারুণ চমকপ্রদ হয়। জন্মদিন মানেই আরও একটা বছর জীবনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। অভিজ্ঞতার ঝুলি ঋদ্ধ হওয়া। খুব ছোটবেলায় যখন আমার বয়স ছয় কি সাত বছর হবে। সেই সময় বাড়িতে বেশ ধুমধাম করে জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছিল। এরপর আর কখনও ঠিক সেভাবে বাসাতে কেক কেটে, আত্মীয়স্বজন-বন্ধুদের দাওয়াত দিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করা হয়নি। যেহেতু স্কুল-কলেজ জীবনে ডিসেম্বর মাসে ফাইনাল পরীক্ষা থাকত, তাই জন্মদিনের অনুষ্ঠান করারও সুযোগ থাকত না। এই বয়সে এসে জন্মদিনে সব সময় যা হয়, এদিন সন্ধ্যায় সহকর্মী ও বন্ধুরা আসে। এ ছাড়াও এমনিতে সারাদিন ধরে ফোনে শুভেচ্ছা জানান শুভাকাঙ্ক্ষীরা। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই আমাকে নিয়ে লেখেন, যা ভালো লাগে।
জন্মদিন এলেই যে একজন ব্যক্তিকে বিশেষভাবে স্মরণ করতে হবে, মনে করতে হবে– এটা আমার বুবা [বাবা গোলাম মুস্তাফা] কখনও ভাবতেন না। তিনি সব সময় আমাকে বলতেন, তোকে এমন কিছু কাজ করতে হবে, যে কাজের কারণেই মানুষ তোকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
জন্মদিন এলে কাকে মনে পড়ে?
জন্মদিন এলেই যে একজন ব্যক্তিকে বিশেষভাবে স্মরণ করতে হবে, মনে করতে হবে– এটা আমার বুবা [বাবা গোলাম মুস্তাফা] কখনও ভাবতেন না। তিনি সব সময় আমাকে বলতেন, তোকে এমন কিছু কাজ করতে হবে, যে কাজের কারণেই মানুষ তোকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তাই আমি মনে করি, একজন কৃষক হোক, শিক্ষক হোক কিংবা একজন রন্ধনশিল্পী হোক না কেন, তিনি যদি তাঁর কাজে চূড়ান্ত সাফল্য আনতে পারেন, তাঁর কাজের কারণেই তিনি মানুষের মনে থাকবেন, স্মরণে থাকবেন।
আপনার কাছে জীবন মানে কী?
আমাদের জীবন একটাই। তাই আমি সব সময় মনে করি, জীবনকে যতটা উদযাপন করা যায় ততটাই ভালো। এই উদযাপন কাজে, সম্পর্কে ও জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে হতে হয়। সুতরাং এনজয় ইওর লাইফ। তার মানে কিন্তু এই নয়, জীবনে আপনি সব সময় নাচ-গানের মধ্য দিয়ে পার করবেন। দেখুন, একটা মানুষ যখন পৃথিবী থেকে চলে যায়, তার ঠিক ৫ মিনিটের মধ্যে আমরা মানে জীবিতরা বলতে শুরু করি, বডিটা কোথায় বা লাশটা নামানো হয়েছে কিনা। সেই চলে যাওয়া মানুষটির নামটাও পর্যন্ত অনেকে বলি না। মারা যাওয়ার পর আমরা সবাই একটি লাশ অথবা নিথর দেহ মাত্র। তাই তো জীবিত অবস্থায় জীবন পূর্ণভাবে উদযাপন করা উচিত। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে আগামী দিনগুলো আনন্দে কাটাতে পারি।
এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে। আপনার প্রযোজিত দ্বিতীয় সিনেমা ‘শ্যামা কাব্য’ নিয়ে বলুন?
বদরুল আনাম সৌদ তো কাজের ব্যাপারে সিনসিয়ার, ডেডিকেটেড, খুবই পরিশ্রমী। নির্মাতা হিসেবে তার নিজস্ব একটা বৈশিষ্ট্য আছে। গল্প, সংলাপ থেকে শুরু করে সম্পাদনা– সব এক হাতে করে। সরকারি অনুদানের এই সিনেমায় সৌদ নতুন এক গল্প বলার চেষ্টা করেছে। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ঘরানার ছবি ‘শ্যামা কাব্য’। ডিভোর্সের পর স্ত্রী নীতুকে হারিয়ে গুরুতর ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয় আজাদ। ওসমানকে সে নিজের বড় ভাইয়ের মতো সম্মান করত। অথচ সেই ওসমানের সঙ্গেই তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। নিজের ডিপ্রেশন কাটাতে একদল ট্যুরিস্টের সঙ্গে সুন্দরবনে ভ্রমণ করতে যায় আজাদ। তবে তার মূল পরিকল্পনা সেখানে গিয়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে নিজের দুঃখভরা জীবনের ইতি টানা। কিন্তু ভ্রমণে গিয়ে শ্যামা নামের এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আজাদের জীবনে নতুন মোড় আসে। প্রাচীন এক অভিশাপের সঙ্গে জড়িয়ে যায় সে। দর্শক এ জনরার গল্প আগে দেখেননি। আমার বিশ্বাস সিনেমাটি যারা দেখবেন তারা হতাশ হবেন না।
সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে কবে?
আমরা চেয়েছিলাম গত মাসে মুক্তি দিতে। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে পেছানো হয়েছে। সিনেমাটি মুক্তির নতুন তারিখ এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে দর্শকদের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না।
আগামীর পরিকল্পনা কী?
অনেক কাজ নিয়ে পরিকল্পনা করছি। এখনও কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।