অভিনেত্রী মনিরা মিঠু। উৎসব হোক আর না হোক টিভি পর্দা, ইউটিউব ও ওটিটিতে উজ্জল উপস্থিতি থাকে তার। মা কিংবা ভাবিদের চরিত্রে নির্মাতাদের ভরসার জায়গার মনিরা মিঠু এখন প্রথম তালিকায়। এবারের ঈদে তার অভিনীত বেশ কিছু নাটক প্রচার হয়েছে। তার অভিনীত নাটক উঠে এসেছে আলোচনায়ও। ঈদের নাটক ও ক্যারিয়ারের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। 

আপনার অভিনীত ঈদের নাটকে কেমন দর্শক রেসপন্স পাচ্ছেন?

এবার ঈদে আমার অভিনীত প্রায় ২০টির মতো নাটক প্রচার হয়েছে। নিজের অভিনীত সবগুলো কাজই তো সন্তানের মতো। সবগুলোতেই যত্ন নিয়ে অভিনয় করি। তবে এবারের দর্শকদের কাছে বেশি রেসপন্স পাচ্ছি মাহমুদুর রহমান হিমির '২১ বছর পর'  ও সঞ্জয় সমাদ্দারের 'শোক সভা' ও অমির 'আপন' নাটকটির জন্য। তার মানে কিন্তু এই নয় বাকি নাটকগুলো রেসপন্স পাচ্ছি না। সেগুলোও পাচ্ছি তবে এগুলোর চেয়ে একটু কম। 

অন্যদের অভিনীত নাটক দেখা হয়?

খুব দেখা হয়। এবার ঈদে বান্নার 'মায়ের ডাক' কাজল আরেফিন অমির 'অদ্ভুত' ভিকি জায়েদের ‘চিরকাল আজ ‘ দেখেছি। আর আজ ভিকির 'পূনর্জন্ম' ও মোস্তফা কামাল রাজের 'সেক্রিফাইস নাটকটি দেখলাম। সময় পেলেই নাটক দেখি। 

তা উল্লেখিত নাটকগুলো কেমন দেখলেন?

এক কথায় অসাধারণ। বিশেষ করে ভিকির 'চিরকাল আজ' দেখে তো আমি মুগ্ধ। বান্নার 'মায়ের ডাক' আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আর রাজের নাটকের প্রতি বরাবরই আমার মুগ্ধতা থাকে।

এবারের ঈদে আলোচিত নাটকগুলোর প্রায় সবগুলোই পারিবারিক গল্পের। তাহলে কি  ফ্যামিলি গল্পের নাটকগুলো আবার ফিরে আসছে?

সেটাই তো মনে হচ্ছে। তবে এটা কিন্তু শুধু এই ঈদে না। বিগত দুই বছর ধরেই ফ্যামিলি গল্পের ড্রামাগুলো বেশি দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে। তাই এ ধরনের গল্পের নাটক নির্মাণও বেশি হচ্ছে। এই দুই বছরে মা-বাবা, ভাই-বোন,ভাবী চাচা, মামা, খালুর চরিত্রগুলো বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। আমি এখন অনেক ভালো ভালো নাটকের শিডিউল ইচ্ছে থাকলেও দিতে পারি না। প্রায় সময় চরিত্রগুলোতে অন্য কোনো শিল্পীকে রেফার করি। এমন ঘটনাও ঘটেছে আমি যে চরিত্রটি শিডিউল না থাকায় করতে পারিনি। সেটা অন্য একজন শিল্পীকে নিতে বলেছি সে সেই চরিত্রে অভিনয় করে পুরস্কারও পেয়েছেন।

বলছেন গত দুই বছর ধরে প্রচুর কাজ পাচ্ছেন। তাহলে কি দুই বছর আগে কাজ কম পেতেন?

বলছি গত দুই বছর ধরে নায়ক-নায়িকা চরিত্রের বাইরে অন্য চরিত্রের গুরুত্ব বেশি বেড়েছে। তবে তার আগেও আমার কাজের কোনো কমতি ছিলো না। আমার ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে কখনই কাজ কমে যাওয়ার ভয় আসেনি বা করিনি।

শোবিজে আপনি একটু বেশি  চঞ্চল ও সরল হিসেবে পরিচিত। এ জন্য কি কখনো সমস্যায় পড়তে হয়?

সমস্যায় পড়ি আবার সুবিধাও পাই। আমি মিথ্যা বলতে পারিনা।আমার ভাই চ্যালেঞ্জারের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। তার মধ্যে অন্যতম শিক্ষা মিথ্যা না বলা। তাই মুখের উপর অনেক সময় সহজভাবেই সব বলে দেই। যার জন্য অনেক সময় বিপদেও পড়ি। অনেকে আমাকে কম দেখতে পারেন। তবে আমার মনে হয় আমাকে দেখতে না পারার লোকদের চেয়ে ভালোবাসার মানুষের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। 

আপনি তো ছোটবড় সবার সঙ্গেই সহজে মিশে যান। এতেও তো মনে হয় সমস্যায় পড়তে হয়?

হা এটাতেও কিছু সমস্যা তৈরি হয়। অনেক সময় অনেকে বলেন, আমি যে বয়সি অভিনেত্রী আমার একটু মুডে থাকা উচিত। তবে এসবে পাত্তা-টাত্তা দেইনা আমি। জীবন খুবই ছোট। এই ছোট জীবনে মুড নিয়ে থেকে কি লাভ? মুড নিয়ে তো আর কবরে যাওয়া যাবে না। কিন্তু মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের পাশে থেকে তাদের ভালোবাসা নিয়ে তো আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকা যাবে। আমি সেভাবেই বেঁচে থাকছি। 

সম্প্রতি ছেলেকে বিয়ে করালেন। বউ কেমন?

এক কথায় বললে বউ একেবারে আমার মতো। আমি যে সব গুণের বউমা চেয়েছি আল্লাহ আমাকে তাই মিলিয়েছে।