হাবিব ওয়াহিদ। কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক। সম্প্রতি এইচডব্লিউ ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হয়েছে তার নতুন গান 'বৃষ্টি যদি আর না থামে আজ'। এই গান, বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তার সঙ্গে-

হঠাৎ ভক্তদের কথায় গান করার চিন্তা এলো কেন?

আমরা দফায় দফায় লকডাউনের মধ্যে আছি। লকডাউনে 'বৃষ্টি যদি আর না থামে আজ' গানের আইডিয়া মাথায় আসে। লকডাউনে মানুষ আরও বেশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত হয়। সেই ভাবনা থেকে কিছুদিন আগে নিজের ফেসবুক পেজে একটি বাক্য লিখি। বাকিটা শেষ করতে বলা হয় ভক্তদের। সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে ছয় নবীন গীতিকারের লেখা এবং আমার সুর-সংগীতের এই গানটি। সেখানে আমি একবারও বলিনি আমি একটা গান করব। আমি আমার আইডিয়া শেয়ার করেছি।

গানের মাধ্যমে নিশ্চয়ই অনেক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন। এই ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ায় আপনার অনুভূতি কী?

ভক্তদের কথায় গান করেছি। অনুরাগীরাই এবার গীতিকার। এটি আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। ভক্তরা এত এত লাইন পোস্ট করে যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, তাতে আমি বিস্মিত। সবাই খুব সুন্দর সুন্দর গানের লাইন লিখেছেন। যখন গানের লিরিকগুলো পেয়েছি, তখনই টিউন বানাই। ওই টিউনের সঙ্গে যে লিরিকগুলো খাপ খায়, সেই কথাগুলো আমি নির্বাচন করেছি। অনেকেই মনে করতে পারেন ভক্তদের নিয়ে গান করলে বেশি প্রচার যাওয়া যায়। কিন্তু এটি মোটেও তা নয়। গান শুনলেই শ্রোতারা বুঝবেন সেখানে কতটুকু এফোর্ট দেওয়া হয়েছে। আমি প্রফেশনাল কাজকে যেভাবে গুরুত্ব দিই, এখানে সেটিই দিয়েছি। যেজন্য গানটি শ্রোতাদের কাছে ভালো লেগেছে।

'আশা' গানটি নিয়ে শ্রোতাদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

গানটি গত বছর রেকর্ড করেছিলাম। একজন ছেলে গলি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। মেয়েকে বারান্দায় দেখে ফেলে- এরকম থিমের ওপর বাস্তবধর্মী কথার ক্ল্যাসিক গান এটি। এ ধরনের গান খুব কমই গাই। তারপরও একটি বিশেষ শ্রেণির শ্রোতার কাছে গানটি খুব ভালো লেগেছে। আমি এ ধরনের গান খুব কমই করি।

ইদানীং ভিডিওনির্ভর গান কম করছেন। এর কারণ কী?

করোনা পরিস্থিতিতে ভিডিও গান করে ঝুঁকি নিতে চাই না। একটি ভিডিও তৈরি করলে যথাযথভাবে করা উচিত। যেহেতু এ সময়ে তা সম্ভব নয়, তাই করিনি। একটু খেয়াল করে দেখবেন, কয়েক মাস ধরে আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলে অডিও গান ও লিরিক্যাল ভিডিও বেশি আপলোড করছি।

চলচ্চিত্রের গানে সেভাবে আপনাকে পাওয়া যায় না-

এখন তো সিনেমার গান কম হচ্ছে। মিউজিক ভিডিও করার পর থেকেই সিনেমার গানে কণ্ঠ দেওয়া কমিয়ে দিয়েছি। আমি আমার নিজের মিউজিক ভিডিওতে নিজেই হাজির হই। আমাকে গানে দেখতে দেখতে মানুষ অভ্যস্ত। আমার ভয়েসে যে নায়ক থাকবেন তার সঙ্গে যদি মাননসই না হয়, তাহলে ভালো কিছু হবে না। যেজন্য সিনেমার গান কম করছি। তার মানে এই নয় যে, আমি সিনেমার গান করব না। যদি মনে হয় কোনো সিনেমার চরিত্র ও গল্পের সঙ্গে আমার কণ্ঠ যায়, তাহলে অবশ্যই করব।

এইচডব্লিউ ইউটিউব চ্যানেলে এখন নিজের গানের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পীর গানও প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে, এর কারণ কী?

এখনকার অনেক শিল্পী আছেন, যারা ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম খুঁজছেন। তাদের নিয়ে কাজ করছি। তরুণদের নিয়েই চলছে গানের এক্সপেরিমেন্ট। তা ছাড়া আমি যদি এই চ্যানেলে নিজের সলো গান বারবার প্রকাশ করি, তাহলে বিষয়টি একঘেয়েমি হয়ে যায়। যেজন্য অন্য শিল্পীর গানও প্রকাশ করছি। আমি ইদানীং ডুয়েট গানে বেশি মনোযোগী হয়েছি। ডুয়েট গানের কম্পোজিশনে অনেক মজা। সুরের মধ্যে ভেরিয়েশন আনা যায়। যত নতুন কণ্ঠ পাব, ততই গানে ভিন্নতা আসবে।

এখন কী নিয়ে ব্যস্ত?

স্টেজ শো থেমে আছে, তাই স্টুডিওতে বসে গান তৈরির কাজে জিঙ্গেল নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটে। বিভিন্ন মিউজিক অ্যাপের জন্য গান করছি। অনেক অডিও বেজড গান করা আছে। টাইম টু টাইম ফিল অনুযায়ী প্রকাশ করছি।