যশোর সদরের মালঞ্চী গ্রামে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে মারধরের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় ওই গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়। এতে ওই গৃহবধূর সৎ ছেলেসহ তিন জন আহত হয়েছেন। 

শনিবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূর নাম কাজল রেখা (৪২)। তিনি ওই গ্রামের নওয়াব আলীর স্ত্রী। ঘটনার পর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আর দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহতরা হলেন- গৃহবধূর সৎ ছেলে রয়েল হোসেন, প্রতিপক্ষ একই গ্রামের পাচু মিয়ার ছেলে আজগর আলী ও আক্তার হোসেনের ছেলে রিপন হোসেন। তাদেরকেও একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

গৃহবধূর স্বজনরা জানিয়েছেন, ৯ মাস আগে রেখার প্রথম স্বামী রেজাউল ইসলাম মারা যান। মারা যাওয়ার আগে তিনি স্ত্রীকে চার শতক জমি লিখে দেন। ওই জমির ওপর লোভ ছিল রেজাউলের চাচতো ভাই আজগর ও রিপনের। এই কারণে ওই জমি থেকে বিতাড়িত করতে ছয় মাস আগে রেখার নামে পরকীয়ার অপবাদ দেয়। পরে ওই অপবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় সালিশে রেখার সঙ্গে প্রতিবেশী নওয়াব আলীর বিয়েও দেন স্থানীয় মাতবররা।

নওয়াব আলীর সঙ্গে বিয়ে হলেও প্রথম স্বামীর দেওয়া জমিতে রেখা বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি আজগর ও রিপন ওই জমি ফেরত নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এ নিয়ে শনিবার দুপুরে সালিশ বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত হলে আজগর ও রিপনের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন রেখাকে মারতে আসে। একপর্যায়ে ওই গ্রামের আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মেম্বার পদপ্রার্থী শিমুল রেখাকে গাছে বাঁধতে নির্দেশ দেন। পরে তাকে গাছে বেঁধে মারপিট করে মাথার চুল কেটে, মুখে চুনকালি মাখিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। রেখাকে বাঁচাতে দ্বিতীয় স্বামী নওয়াব আলীর ছেলে রয়েল এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করে রিপন ও আজগররা। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্য বেধে যায়। এতে আজগর ও রিপনও আহত হন। পরে দুই পরিবারের স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে  ভর্তি করেন।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহম্মেদ তারেক শামস্ জানিয়েছেন, আহতদের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদেরকে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে চাঁচড়া ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। চাঁচড়া ফাঁড়ির এএসআই সোহেল জানান, মালঞ্চী গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে এক নারীর চুল কেটে মারপিট করা হয়েছে। তাকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। 

চাঁচড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাঞ্চলী গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’