পাবনায় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নামে পরিচিতি পেয়েছে একটি বাজার। মানুষ যেটির নাম দিয়েছে ‘কাঞ্চন বাজার’। স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনের মৃত্যুর পর পাবনার পাড় ঘোড়াদহে তার নামেই একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। বর্তমানে এই বিদ্যালয়টিকে ঘিরে একটি বাজারেরও সৃষ্টি হয়েছে। আর স্থানীয়রা এই বাজারেরই নাম দিয়েছেন ‘কাঞ্চন বাজার’। 

১৯৯৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান জাহানারা। ওই সময়টায় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন পাবনার সুজানগর উপজেলার ঘোড়াদহ গ্রামে আসেন। এলাকা ঘুরে তিনি দেখতে পান, এখানকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ রয়েছে। অথচ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ এবং কষ্ট পোহাচ্ছে। বিষয়টি তাকে আহত করে। অতঃপর গ্রামবাসীর সহায়তায় ঘোড়াদহ গ্রামে তার স্ত্রীর স্মৃতির উদ্দেশে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং নামকরণ করেন জাহানারা কাঞ্চন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়।

বিষয়টি নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। গত ১৩ নভেম্বর পাবনায় নিজের প্রতিষ্ঠিত জাহানারা কাঞ্চন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরি সভায় যোগদান করতে পাবনায় যান তিনি। তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেন, যুববিষয়ক সম্পাদক নাহিদ মিয়া। 

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, জাহানারার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন এটিকে কলেজে রূপান্তর করতেও চেষ্টা করছি। স্কুলটি ঘিরে যে বাজারের সৃষ্টি হয়েছে, এটির নামকরণ আমাকে ভালোবেসেই করেছেন স্থানীয়রা। মানুষের এই ভালোবাসায়ই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।

১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর নিজ হাতে বিস্কুট বানিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে বান্দরবানে স্বামীর শুটিং সেটে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান জাহানারা কাঞ্চন।

স্ত্রীকে হারানোর পর ইলিয়াস কাঞ্চনের মনস্তত্ত্বে বেশ পরিবর্তন আসে। এফডিসির লাইট-ক্যামেরা আর অ্যাকশনের চিরচেনা রঙিন ভুবনকে পাশে রেখে রাজপথে নেমে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন শুরু করেন তিনি। প্রতিষ্ঠা করেন নিরাপদ সড়ক চাই নামের একটি প্রতিষ্ঠান।  

বড় পর্দায় ইলিয়াস কাঞ্চনকে এখন আর নিয়মিত দেখা যায় না। দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি চিত্রনায়িকা রোজিনা পরিচালিত ‘ফিরে দেখা’ নামের সরকারি অনুদানের একটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।