- বিনোদন
- নাটকে প্রক্সি দিতে এসে আজ প্রায় ৫শ' ছবির অভিনেতা তিনি
নাটকে প্রক্সি দিতে এসে আজ প্রায় ৫শ' ছবির অভিনেতা তিনি

খল অভিনেতা শিবা শানু ছবি: সমকাল
ঢাকাই সিনেমার দরাজ গলার খল অভিনেতা শিবা শানু। পর্দায় তার উপস্থিতি মানেই ভয়ংকর কিছু ঘটতে যাওয়া। এ পর্যন্ত প্রায় ৫শ' ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ইতিবাচক চরিত্র দিয়ে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হলেও পরবর্তীতে খল অভিনেতা হিসেবে পরিচিত পান। সিনেমায় তার ২৫ বছর ক্যারিয়ার। নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন এখনও।
সম্প্রতি অভিনয় করছেন পূজন মজুমদার পরিচালিত 'প্রিয়া রে' নামের একটি ছবিতে। চাঁদপুরে হচ্ছে ছবিটির শুটিং। শুটিং সেটে কথা হয় এই খলনায়কের সঙ্গে। আলাপে ক্যারিয়ার শুরু করা থেকে বর্তমান পর্যন্ত নানা বিষয়ে জানান তিনি। তিনি বলেন, একটি নাটকে এক অভিনেতার প্রক্সি দিতে গিয়ে জড়িয়ে যান অভিনয়ের সঙ্গে। এরপর আর ছাড়তে পারেননি। ধীরে ধীর ডাক পড়ে চলচ্চিত্রে।
পুরান ঢাকার ওয়ারির ছেলে শিবা শানু। জন্ম, বেড়ে উঠা ওখানেই। এখানেই এক নাটকের দলের রিহার্সাল দেখতে এসে শুরু হয় তার অভিনয় অঙ্গনে যাত্রা।
সময়টা ১৯৯১-৯২ এর দিকের। ওয়ারিতে আগমনি নাট্য গোষ্ঠী নামে একটি নাটকের দল ছিলো। মূলত সৌখিন নাটকের দল এটা। নিজেরা টাকা তুলে নাটক প্রদর্শন করতো দলটি। ওয়ারিতে অবস্থিত সে সময়ে 'ওয়ারি নৈশ স্কুল' যখন বন্ধ থাকতো তখন তারা এই স্কুলে রিহার্সাল করতো। এখানেই একদিন রিহার্সাল দেখতে আসেন শিবা শানু।
তার ভাষ্য, একদিন আমার বন্ধু বললো চল নাটকের রিহার্সাল দেখে আসি। রিহার্সাল দেখে এতোটাই ভালো লাগলেো যে আমি ডিরেক্টরকে বললাম, আমার বিষয়টি ভালো লেগেছে। আমি কি অভিনয় করার সুযোগ পাবো? তিনি আমাকে বললেন, আপনি কি অভিনয় পারেন? বললাম না। তবে চেষ্টা করলে পারবো। তখন তিনি বললেন, কবিতা টবিতা আবৃত্তি করতে পারেন?। বললাম, খুব একটা পারি না তবে টুকটাক পারি। তখন তিনি বললেন, কাল আসেন। পরের দিন যখন গেলাম তখন তিনি আমার হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে অনেক্ষণ বসিয়ে রাখলেন। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারলাম আমাকে যে চরিত্র করতে বলছেন এই চরিত্র যার করার কথা তিনি ওইদিন আসেননি তাই আমাকে প্রক্সি হিসেবে করাচ্ছেন। প্রক্সি দিতে গিয়েই অভিনয় করা শুরু। এরপর দলটির সঙ্গে জড়িয়ে গেলাম। অভিনয় শুরু করলাম এখন পর্যন্ত করছি।
শিবা শানু অভিনীত প্রথম ছবির নাম 'মাতৃভূমি'। যে ছবিটিতে সাংবাদিক চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ছবিটিতে যুক্ত হওয়ার গল্প জানিয়ে এই খলনায়ক বলেন, আগমনি নাট্য গ্রুপে আমার এক বন্ধু ছিলো তার নাম রিয়াদ আল করিম মিঠুন। তখনকার সময়ে সিনেমার সুপারস্টার ডিরেক্টর নাদিম মাহমুদের চিফ অ্যাসিস্টট্যান্ট ছিলো সে। সেই আমাকে ১৯৯৫ সালের শেষের দিকে নাদিম মাহমুদ স্যার ও সারোয়ার নামে একজন কাহিনীকারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তখন কারওরান বাজারের সুপাস্টার হোটেলে তারা একটি ছবির চিত্রনাট্য করছিলেন। সে সময় আমি তাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে যেতাম। ছবিটির নাম মাতৃভূমি। তখনই ওই ছবিতে তারা আমাকে একজন সাংবাদিকের চরিত্রের অভিনয় করার সুযোগ দেন। শুরু হলো আমার সিনেমায় অভিনয়ের যাত্রা।
একজন খল অভিনতা হিসেবে অভিনয় করে সন্তুষ্ঠ শিবা শানু জানালেন এই সময়ের খল অভিনেতা উঠে না আসার আক্ষেপের কথা। তবে শুধু খল অভিনেতা নয় কোনো অভিনেতাই উঠে আসছে না বলে জানালেন তিনি। বললেন, নায়ককেন্দ্রিক, নায়ক-নায়িকা নিয়ে গল্প সাজাতে গিয়ে এসব চরিত্রে অভিনয় সংকট দেখা দিয়েছে। এখন তো নায়ক নায়িকাও খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই আমি মনে করি প্রচলিত সিস্টেম ভাঙতে হবে। নতুন করে নতুন সিস্টেম চালু করতে হবে। যে সিস্টেমে আমাদের চলচ্চিত্র ঘুরে দাঁড়াবে। সেই সিস্টেমটা সবাইকে বেসেই বের করতে হবে।
মন্তব্য করুন