- বিনোদন
- 'অনেকেই ভাবেন আমরা সারাদিন শুটিং নিয়েই পড়ে থাকি'
চঞ্চল চৌধুরীর একদিন
'অনেকেই ভাবেন আমরা সারাদিন শুটিং নিয়েই পড়ে থাকি'

আজ শুটিং নেই, সে কারণে নেই ঘড়ি ধরে কাজে যাওয়ার তারা। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই ঘুম ভেঙেছে। যেদিন শুটিং থাকে, সেদিন সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে উঠে পড়ি। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়া, এরপর ছেলে শুদ্ধকে নিয়ে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু। আজ যেহেতু শুটিং নেই, তাই একটু বেলা করেই ঘুম থেকে উঠেছি। যেদিন আমার শুটিং থাকে, সেদিন শুদ্ধকে আমি স্কুলে নামিয়ে দিই। আর যেদিন থাকে না, সেদিন শুদ্ধর মা ছেলেকে স্কুলে দিয়ে সে তার পেশাগত কাজে চলে যায়।
বেলা ১১টা
ছুটির ঘণ্টা পড়ার আগেই ছেলের স্কুলের সামনে উপস্থিত হতে হয়। তাই অন্যান্য দিনের মতোই ঠিক সময়ে স্কুলের সামনে হাজির হয়েছি। এরপর শুদ্ধকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় নিয়ে আসা। তারপর একটু বিশ্রাম। অবশ্য যেদিন শুটিং থাকে না, সেদিন বাসায় বাবা-ছেলের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি বই পড়ে সময় কাটাই। নয়তো অলস ঘুমেও কিছুটা সময় কাটে। আর শুটিং থাকলে ছুটতে হয়।
বেলা ৩টা
অনেকেই ভাবেন আমরা সারাদিন শুটিং নিয়েই পড়ে থাকি। শুধু কোনো নাটক বা সিনেমার শুটিংই কিন্তু আমাদের একমাত্র কাজ নয়। নির্মাতাদের সঙ্গে মিটিং করতে হয়। অভিনয়ের বাইরে বিজ্ঞাপন ও ভয়েস ওভার দিই। যে কাজগুলো সাধারণত ফ্রি সময়ে করি। আজ করি। মাঝেমধ্যে গানের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটে। এসব কাজে কিছু সময় কাটিয়েছি। সময় ধরে চলার চেষ্টা করি সবসময়। তারপরও কোনো কোনো দিন একটু ব্যতিক্রম হয়ে যায়। এই যেমন আজ রাজধানী শহরের জ্যাম ঠেলে গুলশানের এক বিজ্ঞাপনী সংস্থায় পৌঁছাতে একটু দেরি হয়েছে। তারপরও বাড়তি কোনো চাপ নিইনি।
বিকেল ৫টা
প্রতি ঈদের আগে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ঈদ আয়োজনে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ আসে। নাটক, সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজের কাজে সব আমন্ত্রণ রক্ষা করা সম্ভব হয় না। গুলশান থেকে কাজ শেষ করে চ্যানেল নাইনের একটি গানের অনুষ্ঠানের রেকর্ডিংয়ে অংশ নিই। অভিনয়ের বাইরে যারা গান-বাজনা করেন, তাদের নিয়ে এই আয়োজনে আমি একটি গান করি।
রাত ৯টা
বাসায় ফিরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটু সময় দেওয়ার চেষ্টা করি। নিজের ফেসবুক পেজে সমসাময়িক নানা বিষয়ের পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয় ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করি। হাতে বেশি কাজ না থাকলে কাছের মানুষদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করি। শুদ্ধর বয়স এখন প্রায় ১৩ বছর। অনেক কিছু বোঝে। আমার কাজ আইডেন্টিফাই করে। ধীরে ধীরে সে আমার বন্ধু হয়ে যাচ্ছে। সিনেমা দেখতে পছন্দ করে; আমাকেও দেখতে উৎসাহ জোগায়। মাঝে মধ্যে একসঙ্গে খেলাধুলা, গল্প-গুজব ও দু'জনে মিলে গান-বাজনাও করি। পরিবারের সঙ্গে মধুর সময় কাটে।
রাত ১২টা
শুটিংয়ের জন্য কস্টিউম গুছিয়ে নিই। পরদিনের চিত্রনাট্যে চোখ বুলাই। রাতের খাবার শেষ করে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নানা বিষয় শেয়ার করি। শুটিংয়ের বিষয়ে ছেলে প্রতিদিন রাতে আমাকে জিজ্ঞেস করে- 'তোমার শুটিং আছে? যদি বলি না, তখন ছেলে আমাকে বলে, বাবা তুমি কিন্তু আমাকে স্কুলে আনতে যেও। পরদিন কাজের চাপ কম থাকলে সবাই মিলে সিনেমা দেখি। এরপর চলে যাই বিছানায়। পরদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনখাতার পাতায় নতুন লেখা হবে, এই ভাবনায় কাছে টেনে নিই ঘুমের বালিশ।'
মন্তব্য করুন