৮৬ লাখ টাকার ঈদের ছবিতে প্রযোজক ১ টাকাও পাননি

গলুই, শান ও বিদ্রোহী ছাড়াও 'বড্ড ভালোবাসি' নামে আরও এক ছবি মুক্তি পায় এবারের  ঈদে। ছবিটি মাত্র তিন হলে মুক্তি পেয়েছে বলে জানান প্রযোজক ও নায়িকা সুলতানা রোজ নিপা। 

ছবি মুক্তির প্রায় ৩ সপ্তাহ পর এবার এই নায়িকা সমকালকে জানালেন, ৮৬ লাখ টাকা দিয়ে সিনেমা বানালেও মূলধনের এক টাকাও এখন পর্যন্ত হল থেকে তুলে আনতে পারেননি।

সুলতানা রোজ নিপা বলেন, 'ঈদের ঠিক তিন দিন আগে আমার ছবিটি মুক্তির অনুমতি পাই। তাই দেশের সব হলে মুক্তি দিতে পারিনি। ঠিকভাবে প্রচার চালাতেও পারিনি। ঈদে মাত্র তিনটি হলে মুক্তি পায় ছবিটি। এই তিন হল থেকে এখন পর্যন্ত এক টাকাও আমি পাইনি। টাকা কিভাবে পাব? আমার ছবিটি তো দর্শকদের দেখাতেই পারিনি।'

তবে এই প্রযোজক ও নায়িকা বিশ্বাস করেন, তার ছবি দেশের ১৫০ হলে মুক্তি দিতে পারলে দর্শকদের জোয়ার সৃষ্টি হতো। কারণ তিন হলে মুক্তির পরও দারুণ সাড়া পেয়েছেন তিনি। যারা ছবিটি দেখেছেন তারাও ভালো বলেছেন। অনেকেই ঢাকার বাইরে থেকে তাকে জানিয়েছেন, তারা ছবিটি দেখতে চান। কিন্তু দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না। 

নিপা সমকালকে বলেন, 'আমি আমার বাবার টাকায় ছবি বানিয়েছি। ছবিটির জন্য অনেক কষ্ট করেছি। আমার বিশ্বাস- হল মালিকরা আমার এই ইমোশনের মূল্য দেবেন। আগামীতে মহাসমারোহে সারা দেশে ছবিটি চলবে। তখন ঠিকই সবার কাছে প্রশংসিত হবে ছবিটি।'

ঈদে যমুনা ব্লকবাস্টার, নওগাঁর সেভেনস্টার এবং মুন্সিগঞ্জের স্বপ্নপূরী এই তিনটি হলে মুক্তি পায় ‘বড্ড ভালোবাসি’। ছবিটি বানাতে গিয়ে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে এই নায়িকাকে। বিক্রি করতে হয়েছে বাবার দেওয়া জমিও। 

তিনি বলেন, ’ছবিটা যখন আমি সেন্সর পাই তখন আমার সঙ্গে কেউ ছিল না। সেন্সর বোর্ড তিনবার আমার ফাইল বাতিল করে দিয়েছিল। ভারতীয় শিল্পী নিয়ে কাজ করেছি, এটার অনুমতি নিতে হতো। আমি জানতাম না। অনুমতি নিয়ে দেয়ার জন্যও অনেকে টাকা নিয়েছে।’

এর আগে চারটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন নিপা। একটিও দেখেনি আলোর মুখ। কিন্তু ভেতরের স্বপ্নটা মরেনি দেড় দশকেও। পৈতৃক সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রি করে নাম লেখান প্রযোজকের খাতায়।

নিপার ভাষায়, ’আমার বাবা জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছিলেন। সিনেমার কাজের শেষের দিকে আব্বু ব্রেন স্ট্রোক করে মারা যান। এই ছবির জন্য আমার পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আমার বাজেটের বাইরে চলে গেলে আমি দরজার পেছনে দাঁড়িয়ে কান্না করতাম। চোখের পানি মুছে গহনা বিক্রি করে টাকা জোগাড় করেছি। এভাবে শুটিং শেষ করেছি।’