কুমিল্লা নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) থাকা এক কলেজ শিক্ষার্থীর (১৭) যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। নগরীর মনোহরপুর এলাকার কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারে ( কুমিল্লা টাওয়ার) এ ঘটনা ঘটে।  

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওয়ার্ড বয় দিপক চন্দ্র দাসকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটলেও রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়।  ফেসবুক লাইভে এসে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন ওই ছাত্রীর বড় ভাই। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়ের নাম দিপক চন্দ্র দাস  কুমিল্লার চাপাপুর এলাকার বাজগড্ড গ্রামের অনিল চন্দ্র দাসের ছেলে। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ওই  শিক্ষার্থীর বড় ভাই ৭ মিনিট ৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে ফেসবুকে লাইভে বলেন, কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। শেষ রাতের দিকে আমার বোন যখন কান্নাকাটি করতে থাকে, ভেতর থেকে আমাদের তার সাথে দেখা করতে বললে আমরা দেখা করতে যাই। তখন সে কান্না করতে করতে আমাদের জানায় দীপক নামের এক ওয়ার্ড বয় তার শরীরে একাধিকবার স্পর্শ করে। আমার পক্ষে আসলে এটা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তারপর আমরা ঘটনাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন একটা দায়সারাভাবে আছে। তারা এমন ভাব করছে যেন এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে আমরাই শুধু রিয়েক্ট করলাম। তিনি বলেন, আমার এই ভিডিওর মাধ্যমে সতর্ক করাই মূল উদ্দ্যেশ্য।

ওই কলেজ শিক্ষার্থীর আরেক বড় ভাই  বলেন, আমার বোন শুক্রবার অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আমরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের (টাওয়ার হাসপাতালের) ইমার্জেন্সি ইউনিটে নিয়ে যাই। সেখানে একজন কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাদের বলেন বোনকে যেন আইসিইউতে নিয়ে যাই। তখন আমরা ওই হাসপাতালে  নিয়ে যাই। সেখানে বিকেল থেকে পরদিন শনিবার সকাল পর্যন্ত ছিল সে। শেষ রাতের দিকে তার কান্নার কথা জানিয়ে দায়িত্বরতরা আমাদের ভেতরে যেতে দেন। ভেতরে গেলে সে আমাদের জানায় আইসিইউতে শেষ রাতের দিকে এক ব্যক্তি তার শরীরের বিভিন্নস্থানে স্পর্শ করে। তার নাম দিপক। সে ওই হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়। এই কারণেই সেখানে আমার অসুস্থ বোন কান্না করছিল।  তাকে বাড়িতে নেয়ার পর  সে রোববার  আবার অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ঘটনার পর ওই ওয়ার্ড বয়কে হাসপাতাল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও যারা ওই সময় আইসিইউতে দায়িত্বশীল ছিলেন সবাইকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন,  হাসপাতাল সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকলেও আমাদের আইসিইউ বেডগুলোতে কোন সিসিটিভি নেই। তবে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পথে তা আছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।।
 
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোর্শেদ  বলেন, এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে  অভিযোগ দেওয়া হলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।