ফতুল্লা থানার পাগলায় পূর্বশত্রুতার জেরে শাকিবুল হক সজিব নামে এক কলেজছাত্র ও তার বাবা মো. শাহজাহানকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের দাবি, মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত মো. রনি ওরফে পেঁচা রনি কলেজছাত্র সজিবের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে ডিবি পুলিশে ধরিয়ে দেয়। ডিবি সদস্যরা সজিবকে আটক করে নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেয় এলাকাবাসী। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ডিবি সদস্যদের গণপিটুনি দেয় এবং তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ এসে ওই ডিবি সদস্যদের উদ্ধারের পর সজিব ও তার বাবাকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে তাদের আদালতেও চালান দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে পাগলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সজিব স্থানীয় হাজি মিছির আলী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাবা মো. শাহজাহান নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মায়ের দোয়া কমিউনিটি সেন্টারের মালিক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাতে পেঁচা রনি নিশ্চিন্তপুরে সজিবকে তাদের বাড়ির কাছে আটকে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় কাছেই একটি কালো মাইক্রোবাসে সজিবকে টেনেহিঁচড়ে তোলার চেষ্টা করে রনিসহ কয়েকজন সাদা পোশাকধারী। সজিব চিৎকার করলে এলাকাবাসী মাইক্রোবাসটি আটক করে। সাদা পোশাকধারীরা নিজেদের ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু রনির অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে কেন সজিবকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে শুরু হয় বাগ্‌বিতণ্ডা। এক পর্যায়ে ডিবি সদস্যরা সজিবকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে গণপিটুনি দেয়। ভাঙচুর করা হয় গাড়িটি। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ ও অতিরিক্ত ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সজিব ও তার বাবাকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সজিবের মা ফিরোজা বেগম জানান, পেঁচা রনির আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ফুটবল খেলা নিয়ে সম্প্রতি সজিবের ঝগড়া হয়েছিল। এর জেরেই রনি তার ছেলেকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়েছে। তাঁর স্বামীকেও পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত এসপি তরিকুল ইসলাম বলেন, ১০ পিস ইয়াবাসহ সজিব নামে ওই ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার লোকজন ডিবি পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় ৩-৪ জন ডিবি সদস্য আহত হয়েছেন। ফতুল্লা থানা পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। তবে কোনো মাদক ব্যবসায়ী ওই কলেজছাত্রকে ধরিয়ে দিয়েছে- এমন অভিযোগ তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি বিষয়টির খোঁজ নেবেন বলে জানান।