- বিনোদন
- রেগে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না
রেগে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না

স্টিভ ওয়াহ। অস্ট্রেলিয়ান সাবেক ক্রিকেটার। ক্রিকেট বিশ্বে সর্বকালের সেরা দাপুটে অধিনায়কদের অন্যতম। ১৯৯৯ বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়কের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
অধিনায়ক হিসেবে আমি যখন দলের দায়িত্ব নিই, তখন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট টিম থেকে অনেক পুরোনো খেলোয়াড় অবসরে যাচ্ছিলেন। আমি তাই ভাবলাম, নতুন করে নেতৃত্ব দেব সবাইকে। আমি জানতাম, অধিনায়ক কিংবা সিইওর দায়িত্বটাকে অনেকে লোক দেখিয়ে বেড়াতে ভালোবাসে। কিন্তু বুঝে গেলাম, শুরুতেই নিজের চারপাশে একটা পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে যেন অন্যরা আপনার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি খুঁজে পায়। আর অধিনায়ক হতে গেলে আপনাকে সবার কাছে স্বচ্ছ থাকতে হবে; আর দায়িত্বশীল হতে হবে লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রেও!
আগ বাড়ানো সিদ্ধান্তে না
জয়ের মধ্য দিয়েই মানুষ তার প্রকৃত পূর্ণতা খুঁজে পায়। এটা আমাদের স্বভাব। তাই বলে আগে থেকে অনুমান করে রাখলে আপনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। কেননা, অতীতের সাফল্য বা ব্যর্থতার ওপর ভরসা করে থাকলে কারও পক্ষেই বেশিদূর এগোনো সম্ভব নয়। ফলে এমনতর অনুমানের ওপর যদি নির্ভরশীলতা কাটাতে পারেন, তাহলে আপনার পক্ষে বয়ে আসবে গড়পড়তার চেয়ে ভালো কিংবা খারাপ ফল। কারণ, নতুন পথে সাফল্য পেতে আপনার লাগবে নতুন কৌশল। কখনোই ভুল শুধরে নেওয়া বা নতুন করে যাচাই করার জন্য সময় থমকে থাকে না।
নিজের ওপর আস্থা
অধিনায়ককে নিজের ওপর আস্থা রাখতে হবে। তার সাফল্য অর্জনের একটা নিজস্ব ভাবধারা থাকতে হবে। এতে যেমন ঝুঁকি থাকবে, তেমনি থাকতে হবে স্বকীয়তাও। এ ক্ষেত্রে মানুষের কথা শুনতে হবে ঠিকই; কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা আপনাকেই নিতে হবে। এ কাজটায় সাহস লাগে। আর ভুল হলে তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট টিমের নেতৃত্ব দেওয়ার শুরুর দিকে আমি দলের ম্যানেজারের কথা সব মেনে চলতাম। কিন্তু সহসাই ভেবে দেখলাম, আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল আমাকে ভোগ করতে হবে, তাই নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করলাম।
বাস্তববাদী নেতৃত্ব
আমি বাস্তববাদী নেতৃত্বে বিশ্বাসী। জানি, সব ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়। যদি কেউ মনে করে, তাদের অধিনায়ক তাদের জন্য যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তা অবাস্তব– তবে তা অর্জনের আশা করাই হাস্যকর। আমি একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে শুধু বলের দিকেই নজর রাখতাম। আমার লক্ষ্য কখনোই সেঞ্চুরি করা ছিল না। শুধু শূন্য রানে যেন আউট না হই– সে লক্ষ্যে খেলে গেছি। তবে আমি জানি, অধিনায়ককে সাহসীও হতে হয়। লক্ষ্য স্থির করে আমি আমার দলের কাছে প্রশ্ন তুলতাম, ‘আমরা কেন প্রতি ম্যাচে জিততে পারব না?’ এটাই ছিল আমাদের দলের লক্ষ্য। মাথা ঠান্ডা করাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের লক্ষ্য নির্দিষ্ট ছিল– যা কেউ করেনি, এমন কিছু আমরা অর্জন করব। এভাবেই আমরা টানা ১৬ টেস্ট ম্যাচ জিতে গেছি।
একাগ্রতার ক্ষমতা
সবসময় আস্থা রেখেছি ভালো ফল এনে দিতে পারে– আমাদের এমন একাগ্র ক্ষমতা ব্যবহারের। ক্ষমতার অপব্যবহার এমন ক্ষেত্রে করা উচিত না, যেখানে দলের কোনো লাভ হবে না। আমি প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী; মনে করি, মানুষ রেগে গেলে বা বিরক্ত থাকলে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে। আর ক্রিকেটে যখন হতাশাজনক কিছু ঘটত বা প্রতিপক্ষ আক্রমণাত্মক কিছু করত, তখন আমি আমার দলকে নিয়ে নতুন করে বিশেষ কোনো একটা কিছু অর্জন করে জিততে চাইতাম।
মন্তব্য করুন