শাকিব খান। চিত্রনায়ক। ঢাকাই সিনেমার এই অভিনেতাকে নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। অপু-বুবলীর অভিযোগ, পূজা গুঞ্জন তো রয়েছেই। এবার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্লাহ শাকিব খানের বিরুদ্ধে অপেশাদার আচরণ, চুক্তি ভঙ্গ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন। কথা হলো শাকিবের সঙ্গে–

রুপালি পর্দায় জনপ্রিয় হলেও ব্যক্তিগত জীবন ঘিরে আপনি একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। আপনাকে নিয়ে কেন এমন হচ্ছে?
আমাদের দেশে শাকিব খান কয়টা আছে যে, তাঁর নামে অভিযোগ আসবে? শাকিব খান তো একটাই। তাই অভিযোগ আসবেই। আর শত্রুরা যত বদনাম গাইতে থাকবে, আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা তত বেশি ভালোবাসা দেবে। আজ আমি আছি, কালকে আমার জায়গায় যিনি আসবেন তাকেও এগুলো ফেইস করতে হবে, এটাই স্বাভাবিক।

আপনার ব্যক্তিজীবনে তো সমস্যা অনেক?
তারকা হলেও কিন্তু আমি মানুষ। আর সমস্যা কার জীবনে নেই। আমার ব্যক্তিগত জীবনকে পুঁজি করে কোনো এক কুচক্রী মহল আমাকে থামাতে চায়। বুবলীর সঙ্গে আমার ইস্যুটা সামনে এনে তারা ভেবেছিল শাকিব অধ্যায় এখানে শেষ। তা হয়নি, তাই এবার আনা হয়েছে প্রতারক রহমত উল্লাহকে। 

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী রহমত উল্লাহ আপনার বিরুদ্ধে এক নারী সহ-প্রযোজককে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আপনি কী বলবেন?
রহমত উল্লাহ ভুয়া প্রযোজক, বাটপার। প্রযোজক সমিতিতে তাঁর নাম নেই। আর যে ছবির প্রযোজক দাবি করছেন, তার প্রযোজক জানে আলম। তাই তিনি শুধু আমার সঙ্গে প্রতারণা করেননি, গোটা চলচ্চিত্রের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমাকে পছন্দ করে– দেশের এমন লাখো-কোটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ফলে আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। থানায় গিয়েছিলাম, পরে ডিবিতে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে এসেছি।

কিন্তু রহমত উল্লাহ বলেছেন, শ্লীলতাহানির অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ায় আপনার নামে মামলাও হয়েছে?
অস্ট্রেলিয়ায় মামলা হলে, আমি সেখান থেকে আসতে পারতাম? আমি এসেছি। আর তিনি যেটা দেখাচ্ছেন, ওটা কোনো কেস নম্বর নয়, ওটা হচ্ছে ইভেন্ট নম্বর। তিনি আমার কাছে বারবার টাকা দাবি করছেন। মূলত টাকার জন্যই তিনি এমন করছেন। তাঁর প্রথম টার্গেট একটাই– টাকা দেন।

তার মানে শুধু টাকার জন্যই তিনি এমন করছেন?
বিষয়টি তেমনই। তিনি বারবার একটি কথাই বলছেন আমাকে– টাকা দিয়ে দিন, চলে যাব। তার মানে কি বোঝায়?

তাকে ‘ভুয়া’ বললেন, আবার তারই সঙ্গে মীমাংসায় বসেছিলেন...
তিনি বারবার বসতে চাইছিলেন। পরে অপু বিশ্বাসের উদ্যোগেই এই বসা। সেখানেও তিনি টাকার কথাই বলেছেন।  

পুলিশ আপনার মামলা নিল না, পরে ডিবি থেকে কি আশ্বাস পেলেন?
তারা আন্তরিক। ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ হেল্পফুল একজন মানুষ। সব ঘটনা জানার পর তিনি বলেছেন, লিখিত আবেদন দিতে। এর পর তাঁরা অভিযোগ খতিয়ে ও তদন্ত করে দেখবেন। 

একই অভিযোগ নিয়ে থানা মামলটি নিল না কেন?
এটা গুলশান থানার ওসি ভালো বলতে পারবেন। আমি এবং আমার আইনজীবী কথা বলেছি। তার পরও তিনি মামলাটি নেননি। উল্টো বলেছেন, আপনি যেখানে খুশি গিয়ে অভিযোগ করতে পারেন, আমি আপনার মামলাটি নিলাম না। ওসি যেহেতু মামলা নেননি, তাই ডিবিতে গিয়েছি। 

এই অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধেই কেন উঠল?
একটা শ্রেণি চায় শাকিব খান যেন ভালো কাজ না করতে পারে। তাকে নানা ঝামেলায় জড়িয়ে রেখে, কাজ থেকে দূরে রাখতে হবে। তবে আমি এতদিন চুপ ছিলাম– আর থাকব না। যতই চুপ থাকি, এড়িয়ে যেতে চাই– ততই যেন তারা বেশি শক্ত হয়ে ঘাড়ে চেপে বসে। তাই আগামীতে শক্ত হাতেই এগুলো হ্যান্ডল করব।

কিন্তু একজন তারকার জীবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য তো অবশ্যই ক্ষতিকর...
ক্ষতিকর তো বটেই। তার চেয়ে বেশি হলো কষ্টের। আমি সিনেমাই করতে চাই। অথচ আমার পেছনে একটা দল লেগে আছে থামিয়ে দেওয়ার জন্য। এই মানুষগুলো চিহ্নিত করেই কাজ করে যেতে হবে।