- বিনোদন
- নিজের একটি দিন
নিজের একটি দিন

তাসনিয়া ফারিণ
পহেলা বৈশাখ। বাঙালির চিরায়ত এক উৎসবের দিন। বর্ণাঢ্য আয়োজনে নববর্ষকে বরণ করে নেন সবাই। উৎসবের সেই ভিড়ে শামিল তারকারাও। তাঁদের সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই এ আয়োজন।
বিদ্যা সিনহা মিম
তখনও কৈশোরের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসিনি। জেদও ছিল শিশু-কিশোরদের মতোই। যা চাই, তা দিতেই হবে। বাবাকে হার মানতেই হতো আমার জেদের কাছে। সেদিনও মুখ গম্ভীর করে আছি। বাইরে কোলাহল। অনেকে ছুটছে বৈশাখী মেলায়। বন্ধুরাও ছুটে এসেছে মেলায় যাবে বলে। কিন্তু আমি অনড়। কী হয়েছে কাউকে বলছি না। এরপর বাবা-মা ছুটে এলো। জানতে চাইল, কী হয়েছে? কিন্তু নীরব। মুখে কথা নেই। অনেক প্রশ্নের পর যখন বললাম, আমার ঘড়ি কই? তখন বাবা-মা দু’জনেই হেসে ফেলল। বুঝল মুখ ভার করে থাকার কারণ। এরপর আমার হাতে তুলে দিল নতুন ঘড়ি। মনে হলো পৃথিবীর সবচেয়ে দামি উপহারটা পেয়ে গেছি। এরপর আমার উল্লাস দেখে কে! সবাইকে নতুন ঘড়ি দেখাই আর বোঝাতে চাই, দেখো আমার কী আছে। সেই স্মৃতি মনে পড়লে এখনও হাসি পায়।
মেহজাবীন চৌধুরী
পান্তা তোমার এত পছন্দ! বিস্ময় নিয়ে কথাটা এমনভাবে বলেছিল, আমার পান্তা খাওয়া যেন অকল্পনীয় বিষয়। তারকাদের নিয়ে নানাজনের নানা ধারণা থাকে। আমরাও যে মানুষ– এটাও অনেকে ভুলে যায়। যেমন পহেলা বৈশাখের দিন তিনি ভুলে গেলেন, আমিও এ দেশের অন্য আট-দশজনের মতোই বাঙালি। নাম বলব না, তবে কাজের একজন। যিনি ভাবতেই পারেননি, পহেলা বৈশাখের দিন আমি মজা করে পান্তা খাই। তাই পান্তা খাওয়া নিয়ে তাঁকে বিস্মিত হতে দেখে বেশ মজা পেয়েছিলাম। এখনও সেই দিনের কথা মনে পড়লে হাসি পায়। সত্যি এটাই যে, মনেপ্রাণে আমরা বাঙালি। নিজের স্মৃতি আর ঐতিহ্যকে হৃদয়ে ধারণ করি। তাই তো প্রতি বৈশাখেই বাড়িটা উৎসব আনন্দে ভরে ওঠে। বৈশাখী সাজে নিজেকে সাজাই। এটা খাওয়া যাবে না, ওটা খাওয়া যাবে না– এসব কথায় কান না দিয়ে বসে যাই পান্তার প্লেট নিয়ে। তবে পান্তার সঙ্গে ইলিশের চেয়ে মরিচ আর চিংড়ি আমার বেশি পছন্দের।
তাসনিয়া ফারিণ
শুধু বৈশাখ নয়, বয়সের সঙ্গে সব উৎসব উদযাপন পাল্টে যায়। ছোটবেলায় একরকম মজা করতাম, এখন অন্যরকম মজা হয়। তবে ছোটবেলার সব উৎসবে বেশি মজা হতো। শৈশবে আমি গান শিখতাম। এ কারণে পহেলা বৈশাখে সব সময় গানের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হতো। বাবার চাকরির সুবাদে দেশের অনেক জায়গায় থেকেছি। চট্টগ্রামে থাকাকালে ডিসি হিলে বর্ণিল অনুষ্ঠান হতো। মাকে নিয়ে শাড়ি পরে কক্সবাজারে লাবনী পয়েন্টে ঘুরতে যেতাম। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বৈশাখ নিয়ে বেশি মজা হতো। পান্তা-ইলিশ খেতাম। বাড়িতেই হতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। বৈশাখ মানে গ্রামীণ মেলা। এখনও মনে পড়ে যশোরে মনিরামপুরের মধুমেলার কথা। সেই স্মৃতি ভোলার নয়। মেলা থেকে এক টুকরি মাটির জিনিসপত্র এনেছিলাম। এতে মাটির তৈরি আম, আনারস, কলা, তরমুজসহ নানা ফলফলাদি ছিল। আব্বু আমাকে কিনে দিয়েছিল। বাতাসা খেয়েছি। আমার খুব পছন্দের। নারিকেলের মোয়া কিনে বাড়ি ফিরেছি।
মাহিয়া মাহি
বৈশাখী মেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছি, আনন্দে চিৎকার করছি– এই দৃশ্য কখনও মনের পর্দা থেকে সরে যাবে না। খুব আফসোস হয়, সেই দিনগুলো আর ফিরে আসবে না ভেবে। কৈাশোরের স্মৃতি এখনও বড় পুঁজি। তবু তারকা জীবনের অদেখা অংশটায় এই আমি আগের মাহি হয়ে উঠি। বৈশাখ এলেই মেতে উঠি ছেলেমানুষিতে। চাইলেও এখন আর মেলায় ঘুরে বেড়ানো সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন