চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার প্রথম সাক্ষী মিতুর বাবা মামলার বাদী মোশাররফ হোসেনকে দিনভর জেরা করেছে আসামিপক্ষ। জেরায় মামলার এজাহার লেখা, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসে থাকা, গাড়িতে থানায় যাওয়া, এজাহারে উল্লেখ ইংরেজি শব্দ কার লেখাসহ নানা ধরনের প্রশ্ন করা হয়।

জেরায় বাদী তাঁর সঙ্গে পিবিআইর কোনো ধরনের সংযোগ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এ ছাড়া মিতু হত্যায় পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার জড়িত বলে আবারও দাবি করেছেন মোশাররফ হোসেন। আগামী ১০ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, মামলার প্রথম সাক্ষী ভিকটিম মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের জেরা চলমান রয়েছে। আসামির আইনজীবী সাক্ষীকে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নানা বিষয়ে জেরা করেছেন। ১০ মে অসমাপ্ত জেরা অনুষ্ঠিত হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, জেরায় বাদী মোশাররফের কাছে ‘এজাহার কে লিখেছে’ জানতে চাইলে তিনি লিখিছেন বলে উত্তর দেন। এজাহারের প্রথমে ‘ইংরেজি কী শব্দ ছিল’ তা বলতে বললে তিনি বলতে পারেননি। এ এজাহার পিবিআই অফিস থেকে লিখে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম এসে কোথায় রাতে ছিলেন? জানতে চাইলে একবার পিবিআই অফিস বলেছেন, পরে আবার হোটেলে ছিলেন বলে দাবি করেন। কিন্তু কোন হোটেলে ছিলেন, তার নাম বলতে পারেননি। কোন বাসে চট্টগ্রাম এসেছিলেন জানতে চাইলে সেই বাসের নামও বলতে পারেননি। তিনি পিবিআইর গাড়িতে করে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। তিনি যে পিবিআইর সঙ্গে মিলে এ মামলা সাজানো থেকে শুরু করে সবকিছু করেছেন, তা অস্বীকার করেছেন।

চলতি বছরের ১৩ মার্চ সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বাবুল ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন– পলাতক কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, পলাতক খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে আছেন। এহতেশামুল জামিনে। কামরুল ও খাইরুল পলাতক।

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন বাবুল বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। সেই দিন মিতুর বাবা পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়।