দেশের ওষুধনীতি ও গণমানুষের জন্য সুলভে চিকিৎসা নিশ্চিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আমৃত্যু কাজ করেছেন। কর্ম, মানবিক ভাবনা, নারী অধিকার ও দেশপ্রেমে তিনি ছিলেন পূর্ণাঙ্গ মানুষ। এ দেশের সমাজ ভাবনায় তাঁর জীবন নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে এক স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ডা. জাফরুল্লাহকে স্মরণে ‘জীবন জীবনের জন্য’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে নারীপক্ষ।

নারীপক্ষের সদস্য তামান্না খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. কাশেম চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরিন হক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী ডা. ফওজিয়া মোসলেম, শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, নারীপক্ষের সদস্য মাহবুবা মাহমুদ, ওয়াটার এইডের আঞ্চলিক পরিচালক খায়রুল কবির প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, অত্যন্ত সাহসী ডা. জাফরুল্লাহ যা কর্তব্য বলে স্থির করতেন, তা বাস্তবায়ন করতেন। কোনো সমালোচনা, বাধা, প্রতিবন্ধকতা লক্ষ্য থেকে তাঁকে বিচ্যুত করতে পারেনি। তিনি সমাজে যেসব কাজ পুরুষের বলে পরিচিত, সেখানে নারীদের সুযোগ করে দিয়েছেন। সুযোগ পেলে নারীরাও পুরুষদের মতো একই কাজ করতে পারেন, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। দেশের প্রথম নারী গাড়িচালক তৈরি করেছেন, ওষুধ কারখানায় যন্ত্র চালানোর কাজে দক্ষ করেছেন। সাইকেল চালানো শিখিয়ে গ্রামে গ্রামে পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে। এসব করতে গিয়ে অনেক বাধা এসেছে, কিন্তু বিরত হননি ডা. জাফরুল্লাহ। তাঁর অবদানেই এগুলো এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত। একজন মানুষ কতখানি মানবিক, কতখানি বিপ্লবী ও  দেশপ্রেমিক, তা নারীর প্রতি তাঁর ভাবনা থেকেই স্পষ্ট। জাতির এ অভাব কখনও পূরণ হবে না বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।

স্মরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় নারীপক্ষের প্রচার সম্পাদক রেহানা সামদানী নির্মিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবন ও কর্মের প্রামাণ্যচিত্র দিয়ে। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন তানভীর আলম সজীব ও ফারহিন খান জয়িতা। আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘বটতলা’ নাট্যদলের খণ্ডনাটক দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

গত ১১ এপ্রিল মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তাঁর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানে।