- বিনোদন
- ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন
৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন
অভিযোগপত্র আদালতে, আসামি ৩৩

রাজধানীর মতিঝিলের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১৪ মাস পর আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। টিপু হত্যা মামলার তদন্তে ৩৪ জনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে ডিবি। এর মধ্যে ‘এক্সেল’ সোহেল নামে এক সন্দেহভাজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারায় তাঁকে অভিযোগপত্রে রাখা হয়নি। বাকি ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুরসহ এ মামলায় ৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়।
গত বছরের ২৪ মার্চ মতিঝিল এজিবি কলোনি এলাকার একটি রেস্তোরাঁ থেকে মাইক্রোবাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিপু। শাহজাহানপুরে ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে থাকা অবস্থায় হামলাকারীরা মোটরসাইকেল চেপে ঘটনাস্থলে এসে গাড়িতে থাকা টিপু ও তাঁর সঙ্গীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে রিকশার যাত্রী কলেজছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী বাদী হয়ে অচেনা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা কোনো দল দেখি নাই। তদন্তে যার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তাকেই অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।’
তদন্তে হত্যার কারণ সম্পর্কে কী জানা গেছে– এমন প্রশ্নে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, ‘আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি, এলাকায় আধিপত্য ও মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের কিছু বিষয় তদন্তে এসেছে।’
ডিবির প্রধান আরও বলেন, ‘১৪ মাস আগে টিপু খুন হন। তাঁকে হত্যার পর ডিবি মতিঝিল টিম তদন্ত কাজ শুরু করে। প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে আমরা মাস্টারমাইন্ড পর্যায়ের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করি। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা শুটার আকাশকে বগুড়া ও মোল্যা শামীমকে ভারতে পালানোর আগেই সীমন্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তার ২৪ জনের সঙ্গে কথা বলে ও সাক্ষ্য প্রমাণে উঠে এসেছে, টিপু হত্যা পরিকল্পিত। টিপুকে হত্যার জন্য বিভিন্ন এলাকায় বৈঠক করেছে জড়িতরা।’
আসামি যাঁরা
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী জিসান ওরফে জিসান আহাম্মেদ ওরফে মন্টু ওরফে এমদাদুল হক, জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক, সুমন সিকদার মুসা, মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম, মারুফ রেজা সাগর, আরিফুর রহমান সোহেল ওরফে ঘাতক সোহেল, জুবের আলম খান ওরফে রবিন, হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, তৌফিক হাসান বাবু, মাহবুবুর রহমান টিটু, নাসির উদ্দিন মানিক, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান ওরফে দামাল, সেকান্দার সিকদার আকাশ, খাইরুল ইসলাম মাতব্বর খোকা, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির, ওমর ফারুক, সোহেল শাহরিয়ার, মোহাম্মদ মারুফ খান, ইসতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইমরান হোসেন জিতু, রাকিবুর রহমান রাকিব ও মোরশেদুল আলম পলাশ। পলাতক আসামিরা হলেন– এনামুল ইসলাম ওরফে এক্সেল সোহেল, রিফাত হোসেন, রানা মোল্লা, আমিনুল ইসলাম হাবিব, সামসুল হায়দার উজ্জ্বল, কামরুজ্জামান ও বাবুল ওরফে বাবুল তালুকদার এবং আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম আশরাফ তালুকদার ও মারুফ আহমেদ মনসুর।
মামলার বাদী টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি সমকালকে বলেন, ‘অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার খবর শুনে মনে একটু জোর পাচ্ছি। এখন দ্রুত ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’
মন্তব্য করুন