সংসারের খাতিরে শত অনুযোগ, অভিযোগ, যন্ত্রণা মুখ বুজে সহ্য করেন হাজারো নারী-পুরুষ। এক ছাদের নিচে থেকেও তারা বাস করেন ‘আলোকবর্ষ দূরে’। বুকে হতাশা নিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে করেন সুখের অভিনয়। আধুনিক সভ্যতার এসব কপটতাকে বুড়ো আঙুল দেখানো এক দেশের নাম মৌরিতানিয়া।

পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে ‘অপ্রীতিকর ও অস্বাস্থ্যকর’ বাস্তবতায় সংসার চালিয়ে নেওয়ার নজির খুবই কম। সে দেশের দম্পতিরা এমন ক্ষেত্রে একে অপরকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সই করেন ডিভোর্স পেপারে। এতে কেউ ছিঃছিঃ করে না, লজ্জা দেয় না বা থাকে না দুঃখের আবহ। 

ডিভোর্স পার্টিতে চলছে খাওয়া-দাওয়া/ ছবি- নিউইয়র্ক টাইমস।

বরং মৌরিতানিয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ মানেই আনন্দ-উৎসব। সে দেশে কোনো নারীর ডিভোর্স হলে কান্নার রোল ওঠে না। অপমানিতও হতে হয় না। ‘ডিভোর্স পার্টি’ উদযাপন করে জানানো হয়, এই নারী এখন চাইলেই অন্য কাউকে বিবাহ করতে পারেন। খবর- দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।

বিবাহবিচ্ছেদ উপলক্ষে আনন্দ-উৎসব/ ছবি- নিউইয়র্ক টাইমস।

দেশটিতে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই রীতি চলে এসেছে। ডিভোর্স পার্টিতে এসে নারীরা একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া করেন, গান করেন, নাচেন। বর্তমানে এই পার্টির ধরন কিছুটা বদলালেও আমেজ রয়েছে প্রায় আগের মতোই।

মৌরিতানিয়ার একটি রাস্তা/  ছবি- নিউইয়র্ক টাইমস।

প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ মৌরিতানিয়ায় প্রায়ই ডিভোর্সের ঘটনা ঘটে। অনেক মানুষের জীবনে বিয়ে আসে ৫ থেকে ১০ বার। কারও কারও জীবনে ২০ বারও বিয়ের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। 

ডিভোর্স পার্টির আগে হাতে মেহেদী নিচ্ছেন এক নারী/ ছবি- নিউইয়র্ক টাইমস।

উল্লেখ্য, মৌররা পূর্বসূরিদের কাছ থেকে পেয়েছেন শক্তিশালী ‘মাতৃতান্ত্রিক প্রবণতা’। মৌরিতানিয়ায় ডিভোর্স এতটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে ওঠার এটি একটি কারণ বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানীরা। 

/এইচকে/