- বিনোদন
- আমি ফেরেস্তা বা আইডিয়াল কেউ নই: সিয়াম
আমি ফেরেস্তা বা আইডিয়াল কেউ নই: সিয়াম

সিয়াম আহমেদ
সিনেমার চেয়ে ঢাকাই ছবির তারকাদের এখন ব্যক্তিগত বিষয়টি নিয়েই যেনো চর্চাটা বেশি। এমন চর্চায় খুদ শোবিজের মানুষরাও পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়ায় বড় বাজেটের সিনেমাগুলোও যেনো আলোচনায় আসতে পারছে না।
ঠিক এই সময়ে সোমবার রাজধানীর বারিধারায় ‘অন্তর্জাল’ সিনেমা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বসলেন জনপ্রিয় নায়ক সিয়াম আহমেদ। জানালেন ‘অন্তর্জাল’ সিনেমাটি করতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতার গল্প, সিনেমার চরিত্র লুমিন হয়ে উঠার জার্নি। একই সঙ্গে জানালেন তারকাদের ব্যক্তিগত ইস্যুর চর্চা নিয়েও।
আয়োজনের শুরুতেই সিয়াম বলেন, ‘কাজ নিয়ে কথা হোক, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে না। আমাদরে অন্তর্জাল সিনেমা নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা করার দরকার নাই। আমি শুধু বলব অন্তর্জাল দেখুন, বিনোদিত হবেন।’
সিনেমাটি নিয়ে নায়ক আরও বলেন, ‘অন্তর্জাল এমন একটি সিনেমা যা আপনাকে পুরোপুরি বিনোদিত করবে, সেটা তরুণ প্রজন্মকেও টানবে, আপনার বাচ্চাকেও টানবে, আবার সিনিয়র সিটিজেনদেরও টানবে। সব মিলিয়ে অন্তর্জাল হচ্ছে বিনোদন ও ইনফরমেশনের মিশেলে একটি ভরপুর প্যাকেজ।’
মতবিনিময়ের ওই সভায় হাজির ছিলেন সিনেমার আরও দুই তারকা এবিএম সুমন ও অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল। তবে সিনেমার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম দেশের বাইরে থাকায় হাজির হতে পারেননি বলেই জাননো হয়।
‘অন্তর্জাল’ সিনেমাটি যেহেতু মাল্টিকাস্টিং সিনেমা। এমন সিনেমা করতে গেলে পর্দায় অনেক সময়ই সিন কমবেশি থাকা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। এ ধরণের সমস্যা সিনেমাটির বেলায় ঘটেনি বলেই জানালেন ‘শান’খ্যাত এই নায়ক। বললেন, ‘মাল্টিকাস্টিং সিনেমা দর্শকদের জন্য বড় উপহার। কারণ তারাও চান মাল্টিকাস্টের সিনেমা দেখতে। এটা তেমনই এক সিনেমা।’
বিষয়টি আরও ব্যাখ্যায় গিয়ে সিয়াম বলেন, ‘ক্রিকেকে এক সময়ে টিমের বোলার কিন্তু মার খেতেই পারে। কিন্তু তাকে সাপোর্ট দেবে তার ফিল্ডাররা। যেন তার করা বলে চার না হতে পারে, সে যেনো ক্যাচ মিস না করে, তাকে সবাই সাহস দেয় নেক্স ওভার বেটার হবে এটা বলে। এভাবে সবাই মিলেই কিন্তু টিমটাকে বাঁচিয়ে আনেন। একই রকমভাবে সিনেমাটির সবাই যদি একটি টিম হয়ে কাজ করে। টিমের সবাই যদি একই মানসিকতার হয় তাহলে আমার মনে হয় এর থেকে সুন্দর আর কিছুই হতে পারে না।’
সিয়াম আরও বলেন, ‘আমার খুব ইচ্ছে আমার যারা সিনিয়র আছেন, সিনিয়র হিরো আছেন, ভাই ব্রাদার আছেন, তাদের সবার সঙ্গে আমি যেনো স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ পাই। এমন হলে গল্প যদি সুন্দর হয় আমার কাছেই এটা করতে ভালো লাগবে। আমি শিউর দর্শকদেরও দেখতে ভালো লাগবে।’
‘অন্তর্জাল’ বড় বাজেটের সিনেমা। এমন বড় বাজেটের আরও বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তি পাবে ঈদে। সব মিলিয়ে আসন্ন ঈদে ৯টির মত সিনেমা মুক্তির লাইনে রয়েছে। এত সংখ্যক সিনেমা কেবল উৎসবে মুক্তি পেলে ব্যববসায়িক ক্ষতির ঝুকিতে থাকে।। বিষয়টি নিয়ে কতটা উদ্বিগ্ন সিয়াম? নায়ক বললেন, ‘একজন আর্টিস্ট হিসেবে আমার চাওয়ার পাওয়ার বিষয় থাকবে যে একটা ফেস্টিভ্যালে আমার ছবি আসুক। একইভাবে আরেকজন আর্টিস্টও সেম জিনিসটাই চাইবেন। এটা ততক্ষণ পর্যন্ত সমাধান হবে না হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত একটা সেন্ট্রাল বডি থেকে এটা নিয়ন্ত্রণ না করা হয়। তারা বলবেন, যার সিনেমা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুত আছে, বা বহুদিন আগে থেকে মুক্তির ডিকলারেশন দিচ্ছে সেই বিচারে দুই, তিন, বা চারটা ছবি আসবে। তবে এই মুহুর্তে এটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমাদের সব কিছু মেনেই উৎসবে আসতে হবে।’
‘অন্তর্জাল’ সিনেমা পরিচালনা করেছেন দীপংকর দীপন। সম্প্রতি দেশের দুইজন তারকার ব্যক্তিগত জীবন অধিক চর্চার কারণে ঈদের ছবির প্রচারণায় প্রভাব পড়ছে বলে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফেসবুকে। সেই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরেই সিয়ামের কাছে জানতে চাওয়া হয় এখন তো তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা বেশি। একজন তারকার ব্যক্তিগত জীবন আসলে কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। এই প্রশ্নের উত্তর খুব একটা গভীরে যাননি সিয়াম। তবে ইঙ্গিতে বোঝিয়ে দিয়েছেন বিষয়টি তাকেও মর্মাহত করে। তিনিও চান না তারকারা এভাবে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে চর্চায় আসুক।
‘পোড়ামন টু’ ছবির এই নায়ক বলেন, ‘আমি কেনো ফেরেস্তা নই, আমি এমন আইডিয়াল মানুষও না যে আমি বলে দেব একজন তারকার জীবন কেমন হবে। আমি কেবল আমার বিষয়টা বলতে পারব, আমার সিদ্ধান্তের বিষটি জানাতে পারব। আমি আমার দর্শকদের আমার ব্যক্তিগত জীবন কতটা দেখাতে চাই, আর কতটা চাই না সেটা একেবারে আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
সবশেষ সিয়ামের কাছে প্রশ্ন রাখা হয় অন্তর্জাল তো সাইভার থ্রিলার গল্পের ছবি। এমন ছবি কতটা দর্শকদের বিনোদিত করবে পারবে? উত্তরে নায়ক জানালেন সিনেমাটি বিনোদন ও ইনফরমেশনের মিশেলে হবে সেটা নিশ্চিত হয়েই তিনি এই ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
সিয়াম বলেন, ‘সিনেমার শুরুতেই আমি আমার নির্মাতা দীপংকর দাদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমরা একটা ইনফরমেটিভ সিনেমা বানাচ্ছি নাকি ইন্টারটেইনিং সিনেমা বানাতে চাই। এটা জানতে চাওয়ার মানে হচ্ছে আমরা কি বানাতে চাই তার ভিশন পরিস্কার থাকা দরকার। আর অনেক সময় ইনফরমেশন ও বিনোদন একসঙ্গে সিনেমায় দেওয়া সম্ভবও হয় না। তখনই ক্লিয়ার হয়েছি সিনেমার গল্পটা এমনভাবে করা, প্লট এমনভাবে সাজানো যে আমরা দর্শকদের বিনোদিত করতে পারব।’
মন্তব্য করুন