হাসি মানে শুধু বিনোদন না, হাসির আড়ালে দুঃখ থাকে: তারিক আনাম খান
তারিক আনাম খান। ছবি:সংগৃহীত
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৪ | ১৩:৩৫ | আপডেট: ১২ মে ২০২৪ | ১৭:৫৩
নন্দিত অভিনেতা ও নির্মাতা তারিক আনাম খানের জন্মদিন ছিল গতকাল ১০ মে। শোবিজসহ অনেকেই গুনী অভিনেতার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভক্তরা তাকে ভালোবাসা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা কথা লিখেছেন। নিজের ফেসবুকে জন্মদিন নিয়ে ভাবনার কথাও জানিয়েছেন এই গুনী অভিনেতা। তিনি লিখেন, আমার জন্ম আমার তিন বোনের পর । বৈশাখ মাস । মনে হয় আমার মা খুব ভাবনায় ছিলেন । এবারও কি মেয়ে ? সেসময় এ ধরনের ভাবনা খুব স্বাভাবিক ছিল ( এখনও আছে বোধ হয় ! )। ধরে নেই আমার মা খুব খুশি হয়েছিলেন ছেলে হয়েছে দেখে । মায়ের মুখের সলজ্জ মিষ্টি হাসিটা আমি দেখতে পাই । বোধ হয় তখন থেকেই মানুষের হাসিমাখা মুখ আমাকে আনন্দিত করে । তাই হয়তো নাটকে অভিনয়ে আনন্দিত মানুষের মুখ আমাকে আন্দোলিত করে । তাই হয়তো কমেডির প্রতি আমার বেশী টান । তাই কি ? জানি না । মঞ্চে কমেডি করেছি অনেক । মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম আমার । সমাজ, মানুষ , কষ্ট দুঃখ হাসি আনন্দ জয় পরাজয় যুদ্ধ মৃত্যু সব কাছ থেকে দেখেছি । আমাদের বৃহত্তর পরিবারে রসবোধ,হাসি, ঠাট্টা নিত্যদিনের সাথী । কমেডি বা হাসি মানে শুধু বিনোদন না। হাসির আড়ালে দুঃখ থাকে । চার্লি চ্যাপলিন তাই আজো বড় প্রিয় । মুগ্ধ হয়ে দেখি । কমেডির মধ্যে শ্লেষ, বিদ্রুপ বিদ্রোহ থাকে । প্রতিবাদ থাকে ।
জন্মদিন উদযাপন নিয়ে তিনি বলেন, ‘জন্মদিন মানেই আমার কাছে ছেলেবেলা । তেমন উদযাপন হতো না। বাবা খুব সকালে উঠে আমার জন্মদিনের তারিখটা সুরে সুরে আউড়াতেন । মা একটু বিশেষ কিছু করতেন । ভাইবোনরা ক্ষ্যাপাত - ব্যাস ঐটুকু ।
শুভাকাঙ্খীদের ভালোবাসার জবাবে তার ভাষ্য,‘এখন অনেক মানুষ আমার জন্মদিনকে মনে রাখেন, শুভেচ্ছা জানান । মানুষের এই ভালবাসা আমাকে আপ্লুত করে, আবেগ তাড়িত করে। আমি তো মানুষের জন্য কিছু করতে পারিনি । আজো আনন্দিত মুখ হাসিমাখা মুখ আমাকে খুশী করে। যদি আমার কারণে তা হয় তাহলেই এ মানবজন্ম সার্থক । যারা বিভিন্নভাবে আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন,আমার কথা ১ মিনিটের জন্যও ভেবেছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। নিজের মত করেই খুশী থাকুন, আনন্দিত জীবন হোক সবার । ভালোবাসা সকলকে ।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালের ১০ মে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তারিক আনাম খান। দীর্ঘ প্রায় দশকের বেশী সময়ে ক্যারিয়ারে মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র- এই তিন মাধ্যমে দাপুপের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ১৯৯০ সালে তিনি 'নাট্যকেন্দ্র' নামে নাট্যদল প্রতিষ্ঠা করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নাট্যকেন্দ্র থেকে প্রযোজিত একাধিক নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। অস্ত্র হাতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। ছিলেন ভারতের ন্যাশন্যাল স্কুল অব ড্রামার সেরা ছাত্র, থিয়েটার মিশে আছে অস্থিমজ্জায়। ভারতের অনুপম খেরের সঙ্গে ক্লাস করেছেন তিনি এনএসডিতে। ২০১৪ সালে দেশা : দ্য লিডার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ খলচরিত্রে অভিনয়শিল্পী বিভাগে এবং ২০১৯ সালে আবার বসন্ত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। মঞ্চনাটক নির্দেশনা দিয়েও তিনি দর্শকের মন জয় করেছেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তিনি 'বন্দুকযুদ্ধ' ও 'গাধার হাট' নাটক দু'টি নির্দেশনা দেন। তাঁর দলের সর্বশেষ প্রযোজনা ছিল ইউসুফ হাসান অর্ক নির্দেশিত 'পুণ্যাহ'।
- বিষয় :
- তারিক আনাম খান