'ক্যান্সার নিয়েই ৪ বছর অভিনয় করে গেলেন আমার বন্ধু'
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২০ | ০৫:০২ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ | ০৬:৩৪
জনপ্রিয় বাংলাদেশি অভিনেতা, কলামিস্ট ও দেশীয় বিজ্ঞাপনশিল্পের পুরোধা আলী যাকেরের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন দেশের আরেক প্রখ্যাত অভিনেতা আবুল হায়াত। শুক্রবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আলী যাকের। মৃত্যুর খবর শুনার পর থেকেই হৃদয়ে হাহাকার নিয়ে পুরোনো স্মৃতি হাতরে ফিরেছেন আবুল হায়াত।
দীর্ঘদিন পথচলার সঙ্গী আলী যাকেরকে হারিয়ে শোকে মূহ্যমান আবুল হায়াত। কথা বলার সময় কাঁদছিলেন আর বলছিলেন, 'আমাদের বয়স হয়ে গেছে। একদিন আমাকেও যেতে হবে। তবে এমন ভোরে আলী যাকের চলে যাওয়ার খবর শুনে দিন শুরু হবে ভাবিনি। ও যখন হাসপাতালে ভর্তি হয় মনে হয়েছিলো কিছু হবে না ওর। ও ফিরবে। ফিরেছেও। তবে ফিরে এমন ধাক্কা দিয়ে চলে যাবে কল্পনাতেও আসেনি।'
থেমে থেমে কথা বলছিলেন আবুল হায়াত। ফোনে কান্নার শব্দও আসছিলো। সেটা বুঝতে দিতে চাচ্ছিলেন না এ অভিনেতা। বন্ধু হারানোর শোক তাকে যে কাবু করে ফেলেছে সেটা তার কথাতেই আন্দাজ করা যাচ্ছিলো।
বন্ধুকে নিয়ে কিছু বলার অনুরোধ করার প্রেক্ষিতে আবুল হায়াত সমকালকে বলেন, 'যাকের তো আমার পারিবারিক বন্ধু।আমার সন্তানরা ওকে মামা ডাকে। কারণ আমার বউয়ের মাধ্যমেই আলী যাকেরের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সেটা ১৯৭২ সালে।তখন নাগরিক নাট্যদলে মাত্র এলো সে। ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে অভিনয়ের জন্য। সেই থেকে বন্ধুত্ব।'
আবুল হায়াত আরও বলেন, 'একসঙ্গে মঞ্চে কাজ দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। অদ্ভুত অভিনয ক্ষমতা ছিলো তার মাঝে। কোন নাটকে আমার সঙ্গে আলী যাকের থাকা মানেই অর্ধেক চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা। একটা মানুষ শরীরে ক্যান্সার নিয়েও ৪-৫ বছর মঞ্চে কাজ করে গেছেন। অভিনয়ের প্রতি কতটা টান থাকলে এমনটি করতে পারে।'
গত চার বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন আলী যাকের। গত ১৫ নভেম্বর তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির পর সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাংস্কৃতিক এ ব্যক্তিত্ব।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বাদ আসর বনানী কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।
- বিষয় :
- আলী যাকেরের মৃত্যু
- আবুল হায়াত