- ফ্যাশন
- দেশি দশে বৈশাখের বাহারি পোশাক
দেশি দশে বৈশাখের বাহারি পোশাক

রঙ বাংলাদেশ -এর শোরুম
বসুন্ধরা সিটির দেশি দশে চলছে পহেলা বৈশাখের প্রস্তুতি। সাদাকালো, সৃষ্টি, নাগরদোলা, নিপুণ, বিবিয়ানা, কে ক্রাফট, বাংলার মেলা, রং বাংলাদেশ, অঞ্জন'স ও দেশাল- এই ১০টি ব্র্যান্ড মিলে দেশি দশ।
দোকানে কথা হলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে। প্রায় প্রত্যেকটি ব্র্যান্ডই পহেলা বৈশাখের জন্য নতুন ডিজাইন ও রঙের জামা এনেছে। একইসঙ্গে এসেছে ঈদ কালেকশন। রমজানে পহেলা বৈশাখ পড়ায় এবার ডিজাইনারদের ব্যস্ততা দ্বিগুণ।
রমজানের দুপুরে ভিড় কিছুটা কম হলেও ইফতার করে অনেকেই আসছেন বৈশাখের কেনাকাটা করতে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় শুক্র-শনিবারে।
বেশিরভাগ ক্রেতাই আসছেন বৈশাখের পোশাক কিনতে। নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী কিনছেন শাড়ি ও সালোয়ার কামিজ। ছেলেরা কিনছেন পাঞ্জাবি। এছাড়া বাচ্চাদের গরমে পরার জন্য ব্র্যান্ড থেকে পাতলা সুতি কাপড়ের ফতুয়া ও ফ্রক কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা।
দেশিদশের 'সৃষ্টি'তে ঈদের জন্য এসেছে পাঞ্চুরি হাফসিল্ক। এছাড়া বৈশাখের জন্য এসেছে জামদানি প্রিন্টে হাফসিল্ক শাড়ি। পাঞ্জাবিতেও রয়েছে রঙের ভিন্নতা। নিপুণ-এ বেশিরভাগ কালেকশন ঈদের। বৈশাখের জন্য তারা এনেছে হাফসিল্ক প্রিন্ট ব্লকের শাড়ি। এছাড়া ঈদের জন্য পাওয়া যাবে মসলিন। দাম পড়বে ৮ হাজার থেকে ১৩ হাজার ও তার বেশি। কমের মধ্যে পাওয়া যাবে ২৫শ' থেকে ৩২শ' এর মধ্যে। ১১শ' থেকে ২ হাজারের ভেতরেই ভালো পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে।
দেশাল-এ পছন্দের পোশাক খুঁজছেন ক্রেতা
সাদাকালোতে টপসের দাম ১৩শ' থেকে শুরু করে ১৫শ' এর মধ্যে। আর ৩ হাজার করে সালোয়ার কামিজ। ভারী কাজের বেনারসি কাতানের দাম শুরু ৯ হাজার থেকে।
মোটামুটি দামের মধ্যে ১৬শ' থেকে ২৫শ' টাকায় পাওয়া যাবে সুতি শাড়ি। এছাড়া ঈদের জন্য এসেছে মসলিন শাড়ি, দাম ১৫-১৬ হাজার টাকা।
ভালো বেচাকেনা হচ্ছে দেশাল -এ। দুপুরে ভিড় কম হলেও যারা আসছেন, তাদের বেশিরভাগই কিছু না কিছু কিনছেন। অনেকে বাচ্চার জন্য কিনছেন ফ্রক-ফতুয়া। অনেকে আবার আসন্ন বৈশাখকে মাথায় রেখে কিনছেন ওয়ান পিস, কামিজ, শাড়ি। বেশিরভাগের দাম ২৮শ' থেকে ৩ হাজার ও তার বেশি।
পাঞ্জাবির দামে আছে ভিন্নতা। খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবিগুলো হালকা ধূসর রঙসহ হালকা রঙে পাওয়া যাবে। আর বৈশাখের পাঞ্জাবি লাল, কমলা, মাল্টিকালার, চেকচেক ইত্যাদি ডিজাইনে। দাম পড়বে ১ হাজার থেকে ১১শ' টাকা। তবে এক হাজারের নিচে, ৬শ', ৯শ' টাকাতেও পাওয়া যাবে বৈশাখের পাঞ্জাবি।
দেশাল- এ পাওয়া যাবে কালারফুল জামদানি। বৈশাখ ও ঈদের জন্য হালকা রঙে ব্লক প্রিন্টে চিকন পাড়ের শাড়ি পাওয়া যাবে।
অঞ্জনস -এ বৈশাখ ও ঈদের জন্য হালকা ও গাঢ় রঙের শাড়ি পাওয়া যাবে। দাম ১৬শ' থেকে ২ হাজার। সিল্কের শাড়ির দাম ৪ হাজার থেকে ৬ হাজারের উপরে। এছাড়া আছে ঈদের পাঞ্জাবি।
সাদাকালো’র শোরুম
সাদা লালে বৈশাখের শাড়ি এসেছে আর ঈদের জন্য এসেছে রাজশাহীর বলাকা সিল্ক। আরও পাওয়া যাবে মসলিন। দাম পড়বে ১০ হাজার থেকে ১৬ হাজার পর্যন্ত। সুতি শাড়ির দাম পড়বে ২ হাজার টাকা। লিনেন কটন সালোয়ার কামিজের দাম পড়বে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর সিল্ক ও জর্জেটের সালোয়ার কামিজের দাম পড়বে ৬ হাজার টাকা।
নাগরদোলায় বৈশাখের জন্য কিছু না আসলেও এসেছে ঈদের সালোয়ার কামিজ। ৩ হাজারে পাওয়া যাবে সালোয়ার কামিজ।
বাংলার মেলাতে দুপুরের দিকে ভিড় কিছুটা কম। সুতির প্রাধান্য এখানে। ২৪শ' থেকে ৩২শ' টাকা দাম। ৪ হাজারের শাড়ি থাকলেও খুব কম। ব্লকের উপর হাতের কাজ করা হাফসিল্ক শাড়ির দাম ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা।
রং বাংলাদেশ -এ সব ধরনের রঙই পাওয়া যাবে। ঈদের শাড়ি পাওয়া যাবে ৩ থেকে ৪ হাজারের মধ্যে। এছাড়া হাফসিল্ক মসলিন শাড়ি পাওয়া যাবে ৬ হাজার থেকে ২৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সুতি গুলোর দাম ১৮শ' থেকে ২৬শ' টাকা। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য পাওয়া যাবে কালারফুল জামা।
বিবিয়ানা আর কে ক্র্যাফটও এনেছে বৈশাখ ও ঈদ কালেকশন। বিবিয়ানায় বৈশাখের সুতি শাড়িতে প্রাধান্য পেয়েছে লাল সাদা রং। এদিকে কে ক্র্যাফটে ৩ থেকে ৪ হাজারে পাওয়া যাবে সুতি শাড়ি, ৬ থেকে ৭ হাজারে মসলিন জর্জেট। এছাড়া ঈদের মসলিন শাড়ির দাম প্রায় ১০-১১ হাজার টাকা। বৈশাখের পাঞ্জাবির রঙ লাল, বেগুনি ও সবুজ। আর ঈদের পাঞ্জাবির রঙেও রয়েছে ভিন্নতা।
পাওয়া যাবে রঙ-বেরঙের গহনা
কে ক্র্যাফটের কর্ণধার খালিদ মাহমুদ খান সমকালকে বলেন, বৈশাখের পোশাকে সাদা, লাল, কমলা, ম্যাজেণ্ডা ইত্যাদি রঙকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে গরমের কথা ভেবে। কারণ বেশির ভাগ মানুষ বৈশাখ ঘরের বাইরেই পালন করবেন। একই সঙ্গে পোশাকের ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যেন কেউ চাইলে বৈশাখ ও ঈদ দুইটার জন্য রঙ ও কাপড় দেখে একটি কাপড় কিনতে পারেন। যা দুই দিনই পরার উপযোগী হবে।
বিবিয়ানার কর্ণধার লিপি খন্দকার বলেন, বৈশাখের জন্য অফ হোয়াইট, লাল ইত্যাদি রঙকে প্রাধান্য দিয়েছেন তারা। এছাড়া লেখার শাড়িগুলোও বৈশাখের জন্য ক্রেতারা কেনেন।
অঞ্জন'স -এর কর্ণধার শাহীন আহমেদ বলেন, গরমের কথা মাথায় রেখে তারা সুতি কাপড়ই বেশি রেখেছেন। বৈশাখের জন্য লাল রঙ প্রাধান্য পেয়েছে। এছাড়া সুতি ছাড়া অন্য কাপড় ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তারা ক্রেতাদের আরামের বিষয়টি ভেবেছেন। তাই সবই আরামদায়ক হবে। গত দুই বছর যেহেতু লকডাউন ছিল, এবার নেই। তাই এই রমজানে গত দুই বছরের চেয়ে ভালো বিক্রি হবে বলে মনে করছেন তারা।
মন্তব্য করুন