ফ্যাশন
কিশোরীর সাজ পোশাক

জসীম মাহমুদ
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ | ২৩:৩৪
নতুন ডিজাইনের পোশাক ছাড়া ঈদ কল্পনা করা যায় না। আনন্দ ও উৎসবের ঈদে স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাক যোগ করে নতুন মাত্রা। আধুনিক ফ্যাশন বা ট্রেন্ডের সঙ্গে অনেক বেশি এগিয়ে আছে কিশোরীরা। পশ্চিমা এবং দেশি পোশাকে ফিউশনে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে বেশ পটু তারা। বাজারে নতুন কোন পোশাকটি এসেছে? কোন ধরনের স্টাইল এখন বেশি চলছে? পোশাকের সঙ্গে সাজে কী পরিবর্তন এসেছে? এই সবকিছুর খুঁটিনাটি খবর যেন থাকে তাদের ঝুলিতে। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ধারার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে রাখতে চান কিশোরীরা। তাই দেশীয় ফ্যাশন হাউস বা ব্র্যান্ড শপগুলো তাদের পোশাক নিয়ে একটু বেশিই ভিন্নতা আনার চেষ্টা করে।
কিশোরীদের জন্য নতুন ডিজাইনের পোশাক নিয়ে এসেছে গ্রামীণ ইউনিক্লো। তাদের কালেকশনে রয়েছে কারচুপি কাজ করা জর্জেট কামিজ এবং আরামদায়ক ভিসকস কামিজ। এ ছাড়া প্রতিদিন পরিধানের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রঙের এবং প্রিন্টের লং শার্ট, টপস ও টিউনিকস। বটমস কালেকশন হিসেবে কামিজের জন্য রয়েছে এমব্রয়ডারি স্ক্যান্টস, পালাজ্জো, লেগিংস এবং প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য আছে কাইতেকি প্যান্টস চিনো ও কাইতেকি প্যান্টস। ঈদ কালেকশন সম্পর্কে গ্রামীণ ইউনিক্লোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হক বলেন, ঈদে প্রতিবারই আমরা নতুন নতুন কালেকশন নিয়ে আসি। এবার আমরা কমফোর্টকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন কালেকশন নিয়ে এসেছি। সব ক্রেতার চাহিদা বিবেচনা করে ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইন ও ফেব্রিকের পোশাক নিয়ে এসেছি। পোশাকের রঙের ক্ষেত্রেও এবার বৈচিত্র্য থাকবে। ঈদের এ উৎসবে পোশাকের মাধ্যমে আমরা আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চায়। এ ছাড়া কিশোরীদের পোশাকে গুরুত্ব পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের ছাপা নকশা। ফুল-পাখি, লতাপাতা এবং জ্যামিতিক নকশা রয়েছে প্রতিটি পোশাকে।
লা রিভের প্রধান ডিজাইনার মুন্নুজান নার্গিস জানান, উজ্জ্বল রং বেশ ব্যবহার হয়েছে। উজ্জ্বল রঙের পাশাপাশি হালকা রংও চোখ পড়ছে। তরুণীদের ঝটপট তৈরি হতে বাজারে প্রতিনিয়তই আসছে নতুন ডিজাইনের কুর্তি কামিজ। তাই মেয়েদের জন্য রয়েছে আরামদায়ক পোশাকের পাশাপাশি ফ্যাশনেবল নতুন প্যাটার্নের টিউনিক, কামিজ, কুর্তি রেখেছি। একটু লং রেখে যে টিউনিকগুলো করেছি, সেগুলো পেছনে বড়, সামনে একটু ছোট, এটাকে হাইলও বলা হয়।
কামিজগুলো পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন ধাঁচের না করে একটু লং করার চেষ্টা করেছি। আবার হাতা ও গলার ডিজাইনেও রয়েছে ভিন্নতা। হাতার সামনের দিকে একটু চওড়া রেখে কিছু পোশাক করা হয়েছে। আবার শর্ট হাতার সামনে ফিতাও রয়েছে ডিজাইনে একটু ভিন্নতা আনতে। ফেব্রিক হিসেবে এ সময় ভিসকস ও রেয়ন, যেটা জর্জেট নামে পরিচিত, সেটা বেশি ব্যবহার করা হয়েছে বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে। এতে যেমন বৃষ্টিতে ভিজলেও পোশাকটি তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে, তেমনি আয়রন করার ঝামেলাও থাকবে না। ফ্যাশনটাকে একটু স্টাইলিশ করে তুলতে হবে- এ ধরনের কুর্তির বিকল্প নেই।
এ ছাড়া ওয়েস্টার্ন পোশাকের কিশোরীদের পছন্দের আরেকটি পোশাক তাগা। সুতি কিংবা কটন কাপড় অথবা জর্জেট কাপড়ের ওপরের নানা নকশা করে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এসব পোশাক। সে ক্ষেত্রে এই সময়ের কথা মাথায় রেখে হালকা রং এবং তাতে হাতের কাজের বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে। গরমের কথা চিন্তা করে হাফহাতা কিংবা কোয়ার্টার হাতার বিষয়টি পোশাকের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এসব কাজের পাশাপাশি পোশাকের চারপাশে পাইপিং এবং লেইসের ব্যবহারেও ভিন্নতা আনা হয়েছে। টি-শার্ট থেকে শুরু করে জিন্স প্যান্ট, ফতুয়া, কাতুয়া এবং মেয়েদের শার্টের ডিজাইনে আনা হয়েছে ভিন্নতা। রঙের ক্ষেত্রে জলছাপের বিষয় চোখে পড়ছে এবারের ফ্যাশনের মাত্রায়।
শুধু ওয়েস্টার্ন নয়, দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো তৈরি করছে বেশ নান্দনিক ডিজাইনের কামিজ; যা কিশোরীতে বেশ পছন্দ হবে। পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৈচিত্র্যময় ডিজাইন ও প্যাটার্নে আনছে নতুনত্ব। কুর্তি বা লম্বা কামিজের বটমে ইউ, ভি, স্ট্রেইট প্যাটার্ন, সিঙ্গেল কামিজ ইত্যাদি রয়েছে। কোনোটি আবার গোল গলার সিম্পল কামিজ। কামিজে সামনে জরি বা হাতের কাজ রয়েছে। তবে ব্যান্ড কলারের কুর্তিও রয়েছে। হাতার ডিজাইনে ঢিলেঢালা, কার্ভ ভি উল্লেখযোগ্য। আর কাটিংয়ে প্যাটার্ন তো রয়েছেই।
সাজে ভিন্নতা
কিশোরীরা সাধারণত অনেক বেশি আধুনিক আর আরামদায়ক পোশাক বেশি খোঁজেন। আর ফ্যাশনেবল পোশাকগুলোর সঙ্গে সাজও চাই মানানসই। এই গরমে ভারী মেকআপ একদমই বেমানান। কিশোরীরা অনেক বেশি চটপটে, তাই যে কোনো কিছু একটু চটজলদি চাই। কিছু বিষয় মাথায় রাখলে মেকআপের কাজটাও ঝটপট সেরে ফেলা যায়। মেকআপ করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ভালো মানের প্রাইমার লাগিয়ে নিতে হবে বেইজড হিসেবে। লিকুইড ফাউন্ডেশন না দিয়ে ওয়াটার প্রুফ বা ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা উত্তম। দিনের বেলায় মেকআপ অবশ্যই হালকা হতে হবে। ফাউন্ডেশন লাগিয়ে ফেস পাউডার দিয়ে ফিনিশিং দিতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই আইশ্যাডো দিতে পারেন। বেশি ঝামেলা মনে হলে একটু টেনে আইলাইনার বা কাজল পরে ভালো মানাবে। পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে আই পেনসিল দিয়েও চোখ আঁকতে পারেন। লিপস্টিক হালকা রঙের হওয়া উচিত। আর যদি ম্যাট হয়, তবে সবচেয়ে ভালো। রাতে কোথাও গেলে একটু ভারী সাজে যেতে পারেন। সেটাও খুব বেশি নয়। চোখটা একটু স্মোকি করে নিতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে হালকা ব্লাসন দিন। আর শুধু গাঢ় লিপস্টিক লাগিয়ে নিলেই পারফেক্ট লাগবে।
- বিষয় :
- কিশোরীর সাজ
- উৎসবের ঈদ
- ঈদ কালেকশন