ঢাকা বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

শিশুর রঙিন ঈদ

শিশুর রঙিন ঈদ

তৌহিদুল ইসলাম তুষার

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ | ২৩:৩৮

ঈদে বেশি আনন্দ যেন বাড়ির সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্যকে ঘিরে। ঈদ মানেই তার কাছে নতুন পোশাক, বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া। তাই ঈদকে ঘিরে তাদের খুশি বা উৎসাহ যেন একটু বেশিই থাকে। তবে এই খুশি থাকার অন্যতম কারণ নতুন জামা। পরিবারের বড়দেরও আগ্রহ থাকে তাদের ছোট্ট সোনামণির পোশাকটি যেন সবার আগে কেনা হয়। রোজার শুরু থেকেই জমে ওঠে ঈদের কেনাকাটা। দোকানিরাও তাই আগেভাগে তাদের নতুন কালেকশনের পসরা সাজিয়ে বসেন। কর্মজীবী মায়েরা তাই ছুটির দিনকে বেছে নেন ঈদ কেনাকাটায়। আর প্রথম ছুটি যেন বরাদ্দ থাকে তার সোনামণির ঈদ কেনাকাটায়। শহীদ বীরউত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের শিক্ষিকা শামছুন্নাহারও প্রথম ছুটিতেই তার দুই ছেলের কেনাকাটা করতে এসেছে বসুন্ধরা সিটিতে। তিনি জানান, আজকের দিনটি শুধু আমার বাচ্চাদের কেনাকাটা হবে।

ঈদের জামার পাশাপাশি খেলনাও হওয়া চাই নতুন। যদিও তাদের বোঝার কথা নয়, এই জামা ঈদের দিনের জন্য। তারপরও ঠিক উঠিয়ে রাখে ঈদের দিনের জন্যই। ব্যাপারটা বেশ মজার। তা ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকেও আসে ঈদের নতুন জামা। ঠিক বুঝতে পারে এগুলো উঠিয়ে রাখতে হবে ঈদের জন্যই। সর্বোপরি বাড়ির ছোট্ট সদস্যের কেনাকাটা রোজার প্রথম দিন থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত চলতে থাকে। এখন যৌথ পরিবার না থাকলেও খালাতো, ফুপাতো বা মামাতো ভাইবোনের সম্পর্ক হয়ে ওঠে অনেক মধুর। এক বয়সী হলে তাদের মধ্যে যেন প্রতিযোগিতা চলে কে কয়টা নতুন জামা পেল। তবে হ্যাঁ! কেউ কিন্তু কারও জামা দেখাবে না।

দোকান বা মার্কেটগুলোতে তাই শিশুর পোশাক আসে সবার আগে। দেশীয় ফ্যাশন হাউস এবং ব্র্যান্ড শপগুলো এরই মধ্যে নিয়ে এসেছে তাদের নতুন কালেকশন। বাজার ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন রং ও নকশায় অলংকৃত করা হয়েছে শিশুদের পোশাক। এ ছাড়া দেশি কাপড়েও শিশুদের পোশাকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দেশের পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি শপিংমলগুলো তাই শিশুদের জন্য আলাদা পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে। এখন বেশ গরমও পড়েছে। তাই ফ্যাশন হাউসগুলো নিয়ে এসেছে তাদের সময়োপযোগী পোশাক। কাপড়ের ম্যাটেরিয়ালে তাই প্রাধান্য পেয়েছে সুতি, তাঁত, মসলিন ও খাদির ব্যবহার। উজ্জ্বল রঙের পাশাপাশি কিছুটা ঠান্ডা রঙের আধিক্য আছে এবারের কালেকশনে।

দেশের ব্র্যান্ড শপ এবং ফ্যাশন হাউসগুলো শিশুদের পোশাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রতিবছরই আনছে নিত্যনতুন ডিজাইন। ফেব্রিকের পাশাপাশি সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে ডিজাইনও। অঞ্জন'স, আড়ং, রঙ বাংলাদেশ, দেশাল, নগরদোলা, সাদাকালো, নিত্য উপহারসহ প্রায় সব ফ্যাশন হাউস নিজেদের ডিজাইন মেলে ধরেছেন ঈদ সামনে রেখে। এসব হাউস ঘুরে দেখা যায়, বড়দের মতো ছোটদের পোশাকেও রঙে রঙিন হয়ে আছে। ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টুপি, ফ্রকসহ সব ধরনের পোশাকই তারা করেছে। দেশীয় ঢংয়ে তৈরি এসব পোশাক বেশ আরামদায়ক। শিশুদের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি পোশাকের রং ও থিম নির্ধারণ করা হয়। পোশাকগুলোতে রয়েছে ব্লক, টাইডাই, এমব্রয়ডারি ও মিক্স ফিউশনধর্মী কাজ। আর আরামের কথা ভেবে সুতি, সিল্ক্ক ও ধুপিয়ান কাপড়ের ব্যবহার হয়েছে। এ ছাড়া পাঞ্জাবি, ফতুয়া থ্রিপিসসহ সব ধরনের পোশাকে থাকছে দেশীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া।

স্ট্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক, হালকা কারচুপি, মেশিন এমব্রয়ডারিতে উৎসবে রঙে সাজানো হয়েছে শিশুদের পোশাক। দুই থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুদের পোশাকের মধ্যে নগরদোলার রেডি শাড়ি তো থাকছেই নতুন আঙ্গিকে। এ ছাড়া দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো সাজানো হয়েছে শিশুদের রংবেরঙের পোশাক দিয়ে। মেয়েশিশুদের জন্য এনেছে ফ্রিল দেওয়া পার্টি ফ্রক, হাতের জমকালো কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, ঘাগরা চোলি। সালোয়ার ও প্যান্টের কাজে নকশা এবং কাটে দেখা গেছে বৈচিত্র্য। ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এন্ডি, সিল্ক্ক, মসলিন ও খাদি। উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন রকম হাতের কাজ দিয়ে। যাত্রায় শিশুদের পোশাকের কাটিংয়ে নান্দনিক নকশা করা হয়েছে। এখানে এন্ডি, সুতির কাপড় প্রাধান্য পেয়েছে। এ ছাড়া ভিন্নতা আনতে মেয়েদের পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে বেল্ট আর ছেলেদের পোশাকের মধ্যে আছে ফতুয়া, শার্ট ও পাঞ্জাবি।

এ ছাড়া পশ্চিমা পোশাকের আদলে শিশুদের নতুন জামা নিয়ে এসেছে লা রিভ, সেইলর, ইয়েলো, টেক্সমার্ট, সারাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এসব পোশাকে ওভেন ফেব্রিকস, স্ট্রাইপ ফেব্রিকস, সুতি, ডেনিম কাপড়ের চল বেশি। প্রতিটি পোশাকের ডিজাইনে দেখা যাবে বৈচিত্র্য। নীল, সবুজ, সাদা ও হলুদকে রং বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। সুতির কাপড়ে তৈরি ছেলেদের শার্ট। বড় ও ছোট দুই ধরনের হাতাই ব্যবহার করা হয়েছে শার্টগুলোয়। আর মেয়েশিশুদের জন্য এনেছে ফ্রিল দেওয়া পার্টি ফ্রক, হাতের জমকালো কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, ঘাগরা চোলি। সালোয়ার ও প্যান্টের কাজে নকশা এবং কাটে দেখা গেছে বৈচিত্র্য। ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এন্ডি, সিল্ক্ক, মসলিন ও খাদি। উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন রকম হাতের কাজ দিয়ে। পোশাকে ভিন্নতা আনতে মেয়েদের পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে বেল্ট। শূন্য থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের সব ধরনের পোশাকই থাকছে।

আরও পড়ুন

×