সন্তানকে শৃঙ্খলা শেখান

সাহিদা আক্তার
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১৭ মে ২০২২ | ২২:২৮
'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে' হলো সন্তানের কল্যাণ, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মায়ের এক চিরন্তনী ভাষ্য। প্রতিটি মা-বাবার কাছেই সন্তান অনেক আদরের, অনেক ভালোবাসার। তবে অতি আদর করতে গিয়ে সন্তানকে ডিসিপ্লিন শেখাতে ভুলবেন না যেন।
সন্তানকে ডিসিপ্লিন শেখানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো অভিভাবকদের নিজেদের ডিসিপ্লিন করে তোলা। যখন সন্তান দেখবে তার মা-বাবা নিয়ম মেনে শৃঙ্খলার সঙ্গে যাবতীয় কাজ সেরে নিচ্ছেন, তখন নিজেরাও নিয়ম মানতে উৎসাহী হবে।
যা যা নিয়ম সন্তানকে দিয়ে মানাতে চাইছেন, তা বলার পাশাপাশি নিজেও সেই নিয়মগুলো মেনে চলুন। আপনি যদি সময়ে-অসময়ে টিভি চালিয়ে দেন বা ফোনে আড্ডা দেন, তাহলে কখনোই আশা করবেন না যে, আপনার ছেলেমেয়ে সময়মতো হোমওয়ার্ক শেষ করবে। নিজে সময়ের কাজ সময়ে করুন, সন্তানরা আপনাকে দেখেই শিখবে। তবে কখনও কখনও এমনও পরিস্থিতিতে সম্মুখীন হতে হয়, যখন এই নিয়ম হয়তো কাজে আসবে না। সে ক্ষেত্রে আরও কিছু টিপস মনে রাখুন।
আপনি যদি সন্তানের থেকে সম্মান আশা করেন, তাহলে আপনাকেও ওকে সম্মান করতে হবে। ওর মতামতকে গুরুত্ব দিন। ওর কথা শুনুন। সন্তান যত ছোটই হোক না কেন, ও যে পরিবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এই বোধটা যেন ওর ছোট থেকেই জেগে ওঠে। যদি ওর অভিমত মানার মতো না হয়, তাহলে ওকে বুঝিয়ে বলুন কেন তা সম্ভব নয়। নিজের মতামত জোর করে চাপিয়ে দেবেন না।
সন্তানকে শাসন করার সময় খেয়াল রাখবেন মা-বাবা দু'জনই একসঙ্গে শাসন করবেন না যেন। একজন বকাঝকা করলেন আরেকজন রেগে না গিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করবেন। বাচ্চাকে শাসন করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করবেন না। বাচ্চাকে বোঝাতে হবে ভুলটা ভুলই। ও যেন বুঝতে পারে অন্যায় করলে মা এবং বাবা দু'জনেই রাগ করেন। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ওর পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিন। কেন আপনি সিদ্ধান্তটা নিচ্ছেন সেটা বুঝলে ওর কাছে ডিসিপ্লিনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।
ভাষা বা শব্দ প্রয়োগে সচেতন থাকুন। বাচ্চাকে বকার প্রয়োজন হলে কখনও কোনো খারাপ শব্দ প্রয়োগ করবেন না। এতে সন্তানের সুস্থ মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তার মাঝেও নোংরা শব্দ প্রয়োগের ঝোঁক সৃষ্টি হবে। অন্য কারোর সঙ্গে তুলনা করে কথা বলবেন না। এতে বাচ্চার আত্মবিশ্বাস কমে যায়।
একজন শিশুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এক-একরকম। সেই অনুযায়ী আপনার পরিকল্পনা তৈরি করুন। সন্তান কীভাবে সময় কাটাতে ভালোবাসে, কোন সময়ে পড়তে-বসতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে, এসব কিছু মাথায় রেখে দিনের রুটিন ঠিক/নির্দিষ্ট করুন। আলোচনা করে রুটিন করুন। অতিরিক্ত নিয়মকানুন বাচ্চাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। স্কুল থেকে ফিরে অন্তত ২ ঘণ্টা যেন ছোটাছুটি করে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে পারে। ছবি আঁকা, গান গাওয়া, গাছের পরিচর্যার মতো নিজস্ব কিছু শখ থাকলে উৎসাহিত করুন।
কোনো অন্যায় করতে দেখলে প্রথমে ওয়ার্নিং দিন, বুঝিয়ে বলুন, তারপর শাস্তি দিন। শাস্তি মানে কিন্তু উচ্চৈঃস্বরে রাগান্বিত বা গায়ে হাত তোলা নয় একেবারেই। কিছুদিনের জন্য ওর পছন্দের কোনো জিনিস বন্ধ করে দিন বা ওর সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিন। সবার সামনে সন্তানের সমালোচনা বা নিন্দা করবেন না, এতে ওর আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরতে পারে। এমনকি এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রয়েছে। া