গল্প
ছোট গাছের বড় ইচ্ছে
লিখেছেন মম বিনতে মনির এঁকেছেন রজত
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০
আমি চারাগাছ। বাতাসের সঙ্গে দুলতে ভালো লাগে আমার। বৃষ্টির পানিতে খেলতে ভালো লাগে। আর রোদের আলোয় আরাম করতে ভালো লাগে। আমি আমার মা-বাবা, ভাই-বোন কাউকে চিনি না, তারা কোথায় আছে- তা-ও জানি না। আমি যখন বীজ ছিলাম, তখন অজানা কেউ আমাকে এখানে ফেলে যায়। তারপর আস্তে আস্তে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা! রাস্তায় চলা গাড়ির ধোঁয়া আর ধুলো আমাকে সাজিয়ে দেয়।
হুটহাট যদি বৃষ্টি এসে আমার স্বাদের সাজে জল ঢেলে দেয়, তখন খুব বিরক্তি লাগে আমার।
মাঝে মধ্যে রোদ আমার সবুজ চুলগুলো খয়েরি রংয়ের করে দেয়। তবে উপায় কী? চুল তো পড়েই যায়। মাটি আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহস দেয়। আসলে এরাই আমার মা-বাবা, ভাই-বোন। তারা আমার খুব যত্ন নেয়। বাতাস আমার সঙ্গেই থাকে। সে আমার বন্ধু। আমার আরও বন্ধু আছে। শরীরে ঘুরে বেড়ানো ঘাসফড়িং ও ছোট ছোট পিঁপড়ার দল। ঘাসফড়িং একটু চঞ্চল প্রকৃতির। আর ছোট ছোট পিঁপড়েরা প্রতিদিন আমার গায়ে খেলা করে। ঘাসফড়িং আমার সঙ্গেই থাকে। ওর সঙ্গে আমার অনেক মিল। ঘাসফড়িং আমাকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। একদিন হয়েছিল কি জানো? শোনো, সেদিন মনের সুখে বাতাসের সঙ্গে দুলছিলাম। অমনি কে যেন আমাকে ধরলো, আমি খুবই ভয় পেয়ে যাই। দেখি, একটা ছোট বাচ্চা আমার কচি পাতা ছিঁড়ছিলো। তখন ঘাসফড়িং তার হাতের ওপর ওঠে ভয় দেখায়। তারপর সে কী আর বলবো- হা হা হা...!
আমার একটা ইচ্ছে আছে। আমি বড় হয়ে আমগাছ হতে চাই। কিন্তু রাস্তার পাশে বড় দানবওয়ালা মানুষ আমাকে বনফুল বলে, আমি নাকি বনফুল গাছ। কিন্তু আমার যে স্বপ্ন, আমি বড় আমগাছ হবো। আর আমার শাখায় ছোটরা দুলবে, দোলনা বানাবে। আম পেড়ে খাবে। আমার ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেবে রাখাল। তার বাঁশির সুর আমাকে মুগ্ধ করবে। আজ আমার বয়স এক বছর ছয় মাস। আমাদের নাকি খুব বেশি আয়ু হয় না। আমি বড় হতে চাই। আমগাছ হতে চাই। আকাশ, বাতাস, সূর্য সবই একই রকম আছে। তবে আমি বুড়ো হয়ে গেছি। আমার বন্ধু ঘাসফড়িংও বড় হয়ে গেছে। আমার মাথার ওপর বেগুনি টকটকে কিছু পাতা দিয়ে ঘেরা ফুল। যেটি হেলে পড়ে আছে পূর্ব দিকে। যেদিকে তাকালে দেখা যায় অনেক বড় আমগাছ। যেদিন আমার ওই ফুলের পাপড়িগুলো ঝরে পড়বে। সেদিনও আমি ওই মস্ত বড় আমগাছটির দিকে তাকিয়ে থাকবো। আর মনে মনে ভাববো, পরের জন্মে না হয়, আমগাছের বীজ হয়েই ফিরবো!
বয়স : ২+৩+৩+৪ বছর; সপ্তম শ্রেণি, শিকারপুর জি জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উজিরপুর, বরিশাল
হুটহাট যদি বৃষ্টি এসে আমার স্বাদের সাজে জল ঢেলে দেয়, তখন খুব বিরক্তি লাগে আমার।
মাঝে মধ্যে রোদ আমার সবুজ চুলগুলো খয়েরি রংয়ের করে দেয়। তবে উপায় কী? চুল তো পড়েই যায়। মাটি আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহস দেয়। আসলে এরাই আমার মা-বাবা, ভাই-বোন। তারা আমার খুব যত্ন নেয়। বাতাস আমার সঙ্গেই থাকে। সে আমার বন্ধু। আমার আরও বন্ধু আছে। শরীরে ঘুরে বেড়ানো ঘাসফড়িং ও ছোট ছোট পিঁপড়ার দল। ঘাসফড়িং একটু চঞ্চল প্রকৃতির। আর ছোট ছোট পিঁপড়েরা প্রতিদিন আমার গায়ে খেলা করে। ঘাসফড়িং আমার সঙ্গেই থাকে। ওর সঙ্গে আমার অনেক মিল। ঘাসফড়িং আমাকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। একদিন হয়েছিল কি জানো? শোনো, সেদিন মনের সুখে বাতাসের সঙ্গে দুলছিলাম। অমনি কে যেন আমাকে ধরলো, আমি খুবই ভয় পেয়ে যাই। দেখি, একটা ছোট বাচ্চা আমার কচি পাতা ছিঁড়ছিলো। তখন ঘাসফড়িং তার হাতের ওপর ওঠে ভয় দেখায়। তারপর সে কী আর বলবো- হা হা হা...!
আমার একটা ইচ্ছে আছে। আমি বড় হয়ে আমগাছ হতে চাই। কিন্তু রাস্তার পাশে বড় দানবওয়ালা মানুষ আমাকে বনফুল বলে, আমি নাকি বনফুল গাছ। কিন্তু আমার যে স্বপ্ন, আমি বড় আমগাছ হবো। আর আমার শাখায় ছোটরা দুলবে, দোলনা বানাবে। আম পেড়ে খাবে। আমার ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেবে রাখাল। তার বাঁশির সুর আমাকে মুগ্ধ করবে। আজ আমার বয়স এক বছর ছয় মাস। আমাদের নাকি খুব বেশি আয়ু হয় না। আমি বড় হতে চাই। আমগাছ হতে চাই। আকাশ, বাতাস, সূর্য সবই একই রকম আছে। তবে আমি বুড়ো হয়ে গেছি। আমার বন্ধু ঘাসফড়িংও বড় হয়ে গেছে। আমার মাথার ওপর বেগুনি টকটকে কিছু পাতা দিয়ে ঘেরা ফুল। যেটি হেলে পড়ে আছে পূর্ব দিকে। যেদিকে তাকালে দেখা যায় অনেক বড় আমগাছ। যেদিন আমার ওই ফুলের পাপড়িগুলো ঝরে পড়বে। সেদিনও আমি ওই মস্ত বড় আমগাছটির দিকে তাকিয়ে থাকবো। আর মনে মনে ভাববো, পরের জন্মে না হয়, আমগাছের বীজ হয়েই ফিরবো!
বয়স : ২+৩+৩+৪ বছর; সপ্তম শ্রেণি, শিকারপুর জি জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উজিরপুর, বরিশাল
- বিষয় :
- গল্প