পথ যেতে যেতে উধাও হয়েছে পথ
ফেলে আসা পথে পথিক দাঁড়িয়ে পড়ছেন ভাগবত।
এ পথের পাশে নাট-মন্দির, ধূপধুনা-ওড়া ঘর
এলাকার নাম ‘সনাতন পাড়া’, হিন্দুরা সহোদর!
আশ্বিনে বসে পূজা-পার্বণ, পথ হুটোপুটি খায়
এঁকেবেঁকে পথ চলে গেছে দেখো অন্যের পাড়াগাঁয়।
ও পাড়ার নাম ‘মুসলিম পাড়া’, ওরা পড়ে কুরআন
আজান শুনতে ঘুমভাঙা রাতে পেতে রাখে দুটি কান।
সোজা পাটক্ষেত, ধানের উঠান, ও পাড়ার ফুল-ফল-
ওগুলো ওদের। সহজেই ওরা পানিকে বলে না ‘জল’।
দুটি পাড়া ঘুরে পথ চলে গেছে; পথের মনটা ভার
এপাড়া-ওপাড়া ঘেঁষাঘেঁষি নেই; সীমানায় কাঁটাতার।
কান কি কখনও কাঁটাতার মানে? সব কান দৌড়ায়
ডেকে আনে কান রাহুলের গান “মনে পড়ে রুবি রায়!”
ঘাসে ঢাকা পথ হেঁটে হেঁটে হেঁটে বহুদূর গেছে একা
নিরপেক্ষ-এ পথটার সাথে অনেক পাড়ার দেখা।
এ পথের বুকে কারা জুতা পরে? পথ কাকে ভালোবাসে?
গাছ যেতে যেতে গাছের সারিরা বয়ে গেছে পথপাশে।
পাখি বসে বসে ভরে গেছে যত গাছ;
সাদা বকগুলো উড়ে উড়ে ধরে ইছামতী-ভরা মাছ।
হেঁটে যায় পথ, একা যায় পথ, পথ চলে যায় ঠিক
একপাশে তার ‘বাহাই ধর্মী’, আরেক পাড়ায় ‘শিখ’।
পথটা কখনও করবে না অভিমান
ত্রিচীবর পরা বৌদ্ধ এপাশে, ওপাড়ায় খ্রিষ্টান।
সব পাড়াতেই হাওয়া বেচে খায় ব্রিটিশ পেয়াদা-পায়িক;
পথটা কেবল হয়নি সাম্প্রদায়িক।