সরিষার সম্ভাবনাময় নতুন জাত
অধ্যাপক আরিফ হাসান খান রবিন
তানিউল করিম জীম
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ | ০৭:৪৯
বাংলাদেশের তেলবীজ ফসলগুলোর মধ্যে সরিষা অন্যতম। তেলবীজ ফসলের মধ্যে সরিষা এককভাবে ৬৭ শতাংশ কৃষিজমি দখল করে আছে। দেশে বর্তমান প্রায় তিন লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়। এতে মোট দেশীয় চাহিদার মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পূরণ হয়। এ কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশকে প্রায় ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ থেকে ভোজ্যতেল এবং তেলবীজ আমদানি করতে হয়।
দেশে বর্তমানে বহুলভাবে আবাদকৃত সরিষার জাতগুলোর মধ্যে বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৬, বারি সরিষা-১৮, বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-১০ উল্লেখ্যযোগ্য। এ ছাড়া এখনও কৃষকের মাঠে পুরোনো নিম্ন ফলনশীল জাতগুলো যেমন টরি-৭, রাই সরিষা, সম্পদ, সম্বল চাষ হয়ে আসছে। সাম্প্রতিককালে উদ্ভাবিত বারি সরিষা-১৮ তেলে অতি নিম্নমাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড (০.৫ শতাংশ) এবং গ্লুকোসিনোলেট পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে বাউ সরিষা-১, বাউ সরিষা-২ ও বাউ সরিষা-৩ নামে তিনটি সরিষার জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। যেগুলো দক্ষিণবঙ্গের লবণাক্ত এলাকাগুলোর জন্য উপযোগী।
সম্প্রতি বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিনের নেতৃত্বে একদল গবেষক সরিষার অলটারনারিয়া ব্লাইট রোগের প্রতি উচ্চমাত্রায় সহনশীল পাঁচটি জাত উদ্ভাবন করেছেন। জাতগুলো হচ্ছে বাউ সরিষা-৪, বাউ সরিষা-৫, বাউ সরিষা-৬, বাউ সরিষা-৭ এবং বাউ সরিষা-৮। এই পাঁচটি জাতই ব্রাসিকা জুনসিয়া প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। জাতগুলো উচ্চফলনশীল এবং গড় ফলন ২.৫ টন প্রতি হেক্টর। এগুলো প্রচলিত অন্য জাতগুলোর চেয়ে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি ফলন দিতে সক্ষম। জাতগুলোর জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন। তবে জমিতে আর্দ্রতা বেশি থাকলে
দানা পরিপক্ব হতে ১০০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এ জাতগুলো সারাদেশে চাষের উপযোগী বলে এটি চাষে কৃষক লাভবান হবেন বলে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক আরিফ হাসান খান রবিন জানান।