- ফিচার
- লাবণ্যময় থাকতে ভিটামিন
লাবণ্যময় থাকতে ভিটামিন

রোজকার খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল রাখলে ত্বককে দীর্ঘদিন সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। ভিটামিন 'এ'র ঘাটতি হলে ত্বক আর্দ্রতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। ফলে সেল রিপেয়ারিং ক্ষমতাও কমে আসে এবং ত্বক ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। কড লিভার অয়েল, ব্রকলি, আম, পেঁপে, গাজর, কচু, পার্সলে, সবুজ শাক, কুমড়ো, চেরি এবং ডিমের কুসুম এই ভিটামিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এগুলো নিয়মিত ডায়েট রাখা জরুরি। ফ্রি-র্যাডিকলের বিরুদ্ধে ত্বকের প্রধান অস্ত্র ভিটামিন সি। এটি ত্বকের কোলাজেন এবং ইলাস্টিন তৈরিতে সাহায্য করে। ফলে শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি থাকলে ত্বক নিজেই অনেক সমস্যার মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। পেয়ারা, ব্ল্যাক কারেন্ট, পার্সলে, কিউয়ি, স্ট্রবেরি, পালংশাক, কমলালেবু, বাঁধাকপি, পেঁপে, বিন স্প্রাউট ইত্যাদি ভিটামিন 'সি'র খুব ভালো উৎস। এর মধ্য থেকে অন্তত একটা সবজি বা ফল রোজ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের অভাব থেকেই বলিরেখা, ফাইন লাইনস ইত্যাদি ফুটে ওঠে। ত্বক শুস্ক, অমসৃণ এবং নির্জীব হয়ে ওঠার নেপথ্যেও এই ভিটামিনের অভাব থাকতে পারে। হোলগ্রেন, বাদাম বা স্প্রাউট খেলে শরীরে এই ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে পারেন। হুইট জার্ম, স্যাফ্লাওয়ার সিড, তিল তেল, সূর্যমুখীর বীজ, আখরোট, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, সয়াবিন ইত্যাদিতে ভিটামিন 'ই' রয়েছে। এগুলো রোজ খেলে স্ট্রেস থেকে হওয়া বলিরেখা, ফাইন লাইনস ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে পারবেন। এটি ফ্রি-র্যাডিকল থেকে হওয়া ক্ষতির বিরুদ্ধে কোষ প্রাচীরকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বক তরুণ রাখে। ত্বকে নতুন কোষ তৈরি করতে জিঙ্ক অত্যাবশ্যক। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এনজাইম তৈরি করে ফ্রি-র্যাডিকল নষ্ট করতেও উপযোগী। নানা ধরনের বাদাম এবং বীজে জিঙ্ক পাওয়া যায়। গামা লিনোলেয়িক অ্যাসিড বা জিএলএ শরীরের অন্যতম প্রধান এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি ত্বককে মসৃণ এবং কোমল রাখার জন্য সাহায্য করে। শরীরের বয়স যত বাড়ে, তত জিএলএর উৎপাদন কমতে শুরু করে। ফলে ত্বক শুস্ক হতে শুরু করে। এই ফ্যাটি অ্যাসিডের একমাত্র উৎস ইভনিং প্রিমরোজ অয়েল, না পেলে সাপ্লিমেন্টও নিতে পারেন। চল্লিশের পর থেকেই এই সাপ্লিমেন্ট শুরু করা ভালো। শরীরকে আর্দ্র রাখতে এবং টক্সিন দূর করতে পানি অপরিহার্য। প্রতিদিন প্রত্যেকেরই অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাওয়া উচিত। শুধু পানি খেতে না চাইলে সুপ, জুস, ড্রিঙ্কের মাধ্যমেও শরীরের দৈনন্দিন পানির চাহিদা মেটাতে পারেন।
পাশাপাশি নিয়মিত কিছু অভ্যাস গড়ে তোলাও জরুরি। যেমন ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেয়ে ধূমপান চালিয়ে গেলে কোনো লাভ নেই। এ ছাড়া অতিরিক্ত তেল-মসলাদার খাবার খাওয়া কমান। এতে শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ে। ফ্যাট ইনটেকও নিয়ন্ত্রণে রাখুন। মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড (মাছ, অলিভ অয়েল, ক্যানোলা অয়েল, আখরোট ইত্যাদি) পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন। ফাইবার এবং কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটও বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন। প্রসেসড এবং রিফাইন্ড খাবার যতটা সম্ভব কম খান। আর এর সঙ্গে নিয়ম করে আধঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিট ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন। তাহলেই একশ পার করেও চোখে-মুখের দীপ্তি অটুট রয়েছে! া
মন্তব্য করুন