সমকাল সুহৃদ সমাবেশ গাইবান্ধার উদ্যোগে ২২ মার্চ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হলো শিশুদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনা অনুষ্ঠান 'এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি'। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনি শুনল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও স্বতঃস্ম্ফূর্ত অংশ নেন অনুষ্ঠানে। গাইবান্ধা সমকাল সুহৃদ সমাবেশের উদ্যোগে সদর উপজেলার মালিবাড়ী বোরহানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এমনি এক মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠান।

মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব গল্প শোনান ১১নং সেক্টরে অংশ নেওয়া গাইবান্ধার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছুদার রহমান শাহান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাশেম। এ উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে সুহৃদ গাইবান্ধা ইউনিটের নারীবিষয়ক সম্পাদক প্রধান শিক্ষক শাহজাদী হাবীবা সুলতানা পলাশের সভাপতিত্বে দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও আলোচনা করেন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ গাইবান্ধা ইউনিটের উপদেষ্টা অধ্যাপক সমীর কুমার সরকার, উপদেষ্টা নাট্যব্যক্তিত্ব মো. আলম মিয়া, সভাপতি অঞ্জলী রানী দেবী, সদস্য মো. খবির উদ্দিন, সমকালের জেলা প্রতিনিধি উজ্জল চক্রবর্ত্তী প্রমুখ। দুই ঘণ্টাব্যাপী ওই স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদ্বয় দীর্ঘ ৯ মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের অংশগ্রহণ, প্রশিক্ষণ, রেকি, আক্রমণ, ব্রিজ ধ্বংস, খেয়ে না খেয়ে থাকার কথা, সম্মুখযুদ্ধের কাহিনি, হানাদার বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা এবং তাদের আত্মসমর্পণের বর্ণনা করেন। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে তিনি নানা সত্য ঘটনার অবতারণা করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছুদার রহমান শাহান তরুণদের উদ্দেশে বলেন, এ সময়ের তরুণরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখায় না। ওরা মোবাইল নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা জরুরি। শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলার এমন আয়োজন সত্যি প্রশংসার দাবিদার। এই আয়োজনে এসে শিশুদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গল্প এ প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাশেম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে যে এ প্রজন্ম বেড়ে উঠতে পারে সেদিকে আমাদের সবার খেয়াল রাখা উচিত। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও সত্য ঘটনানির্ভর গল্প শিশুদের মধ্য ছড়িয়ে দিতে হবে; যাতে তারা শ্রদ্ধাভরে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করতে পারে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম। এ বোধ থেকেই আজ আমরা এখানে একত্র হয়েছি, যেন আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের সমৃদ্ধ ও আলোকিত করতে পারে।