২০১৩ সালে ঢাকার এক ক্যান্সার হাসপাতালের আউটডোরে রোগী দেখছিলেন ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক। মাত্র আট হাজার টাকা চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পেরে ফিরে যাওয়া এক শিশু ও তার পরিবারের বিষাদময় এক ঘটনায় নড়েচড়ে বসেন মাসুমুল হক। হাঁটা শুরু করেন ক্যান্সার প্রতিরোধের বন্ধুর পথে! ২০১৩ সাল থেকেই ব্যক্তিগতভাবে ক্যান্সার সচেতনতা, প্রতিরোধ ও দুস্থ ক্যান্সার রোগীদের সহায়তায় কাজ শুরু করেন। ২০১৭ সালে গড়ে তোলেন ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। যাত্রার শুরু থেকেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধি, স্ট্ক্রিনিং, ক্যান্সার রোগীদের পুনর্বাসনে দেশব্যাপী কাজ করছে ফাউন্ডেশনটি।

বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন, যার আওতায় এখন পর্যন্ত ৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে ক্যান্সার সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে এই ফাউন্ডেশন। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য ২০২১ সালে শুরু করেন সূচনা প্রকল্প। ঢাকার রায়েরবাজারে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণি এই প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়ে থাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, ক্যান্সার স্ট্ক্রিনিং সেবা ও জরায়ু মুখ ক্যান্সারের টিকা। পাশাপাশি ক্যান্সার রোগী ও স্বজনদের পুনর্বাসনের জন্য অবলম্বন নামেও একটি প্রকল্প রয়েছে তাদের। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় ২৩ জন ক্যান্সার রোগীকে চিকিৎসা সহায়তা, ১১ জন ক্যান্সার জয়ী শিশু-কিশোরের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ ও ২টি ক্যান্সার আক্রান্ত পরিবারকে অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে সহায়তা করা হয়েছে।
ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক বলেন, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটি ক্যান্সার সেন্টার প্রয়োজন। সেই হিসাবে দেশে এখনও ১৬০টি ক্যান্সার সেন্টার দরকার। এক জরিপে দেখা যায়, ২০১৭ সাল থেকে দেশে ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়তে শুরু করেছে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে আমরা আমাদের স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম চালিয়ে যাব। এই কার্যক্রমে সারাদেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে চাই। তারই অংশ হিসেবে ঢাকার বাইরে আরও ৭ জেলায় এই কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।'