
'ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া' রোগটি মুখমণ্ডলের স্নায়ুরোগগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং প্রধানই বলা যায়। এটি একটি ভয়ানক স্বাস্থ্য সমস্যা। এ রোগে যারা ভুগছেন কেবল তারাই জানেন এর তীব্র ব্যথা জীবনকে করে কতটা অসহনীয় এবং দুর্বিষহ। এ রোগকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হলো- সুইসাইডাল ডিজিজ, অর্থাৎ এর ব্যথার তীব্রতা এতই বেশি যে, কোনো কোনো রোগীর মরে যেতে ইচ্ছা করে। এ রোগ সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সে দেখা দেয়। তবে বিশ্বে এখন পর্যন্ত তিনজন রোগী এ রোগে ভুগছে, যাদের বয়স মাত্র ৩ বছর।
পুরুষ-নারীর মধ্যে কে বেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়?
সাধারণত নারীরাই বেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়। তবে আমাদের দেশে পুরুষ রোগীর সংখ্যাও কম নয়। ব্যথাই হচ্ছে একমাত্র উপসর্গ। ব্যথার ধরন, বিস্তৃতি এবং তীব্রতা দিয়েই রোগ নিরূপণ করা যায়। ব্যথা সাধারণত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে থাকে, তবে এ ব্যথার স্থায়িত্ব খুবই অল্প সময়ের জন্য (২-৩ সেকেন্ড), তবে দিনে কয়েকবার এ ব্যথা হতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যথার স্থায়িত্ব বাড়তে থাকে এবং ব্যথামুক্ত বিরতি দিন দিন কমতে থাকে; অর্থাৎ একজন রোগী প্রথম দিকে দিনে ৪-৫ বার আক্রান্ত হয় এবং এর স্থায়িত্ব ২-৩ সেকেন্ড হলে ১-২ বছর পর দেখা যাবে ওই রোগী দিনে ৮-১০ বার আক্রান্ত হচ্ছে এবং ব্যথাও ৩-৪ মিনিট স্থায়ী হচ্ছে। এই ব্যথা সাধারণত নির্দিষ্ট নার্ভের (পঞ্চম ক্রেনিয়াল নার্ভ) বিস্তৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকে। এ জন্য এই ব্যথা নার্ভের নাকি দাঁতের তা রোগী প্রথমে বুঝতে পারে না। এই নার্ভের ব্যথা মুখমণ্ডল নড়াচড়া, দাঁত ব্রাশ এবং খাদ্য চিবানোর সময় তীব্রতর হতে পারে।
চিকিৎসা- সাধারণত ওষুধের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। কার্বামাজেপিন নামক খিঁচুনিনাশক ওষুধের সঙ্গে মানসিক চাপরোধক ওষুধের সমন্বয়ে চিকিৎসা করা হয়। শতভাগ অ্যালকোহল ইনজেকশনের মাধ্যমেও এর চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে ওষুধের মাধ্যমে রোগের উপসর্গ দূর করা না গেলে সার্জিক্যাল চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে এ রোগের সার্জিক্যাল চিকিৎসা হয়ে থাকে-
> ক্রায়োথেরাপি
> মাইক্রোভাসকুলার ডিকম্প্রেশন
> সার্জিক্যাল নিউরেকটমি (অর্থাৎ শনাক্তকৃত স্নায়ু বা নার্ভ কেটে ফেলে দেওয়া)।
মন্তব্য করুন