তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে আন্দোলন করব না- এমন মুচলেকা দেওয়া প্রতিবাদী সৈয়দা রত্না ছেলেকে নিয়ে আবার মাঠে এসেছেন। 

বুধবার দুপুর থেকে তিনি মাঠে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি, দেয়াল লিখন ও সাইনবোর্ড টানানো কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিকেল পর্যন্ত তিনি মাঠ রক্ষা আন্দোলন কমিটির নেতাদের সঙ্গে ছিলেন। 

এ সময় তিনি বলেন, ‘মাঠ রক্ষা আমাদের প্রাণের দাবি। মাঠ রক্ষা এখন আমার একার আন্দোলন নয়, সবার আন্দোলন। মাঠি ফিরে পাক শিশুরা। আবারও তৈরি হোক প্রাণচাঞ্চল্য।’ 

গত সোমবার ঢাকার তেঁতুলতলা খেলার মাঠ রক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমাজকর্মী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে মোহাম্মদ ঈসা আব্দুল্লাহকে তুলে নিয়ে যায় কলাবাগান থানা পুলিশ। 

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানার দেয়াল নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। উন্মুক্ত মাঠে শিশুরা খেলাধুলা করছে। উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে মাঠজুড়ে। মাঠের এক পাশের একটি দেয়ালে নতুন করে লেখা হয়েছে, ‘মাঠে শিশুরা খেলবে, থানা চাই না।’

এদিকে তেঁতুলতলা মাঠে থানার ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে সরব এলাকাবাসী ও সচেতন নাগরিকেরা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ের সমাধান করতে চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

এ জন্য বুধবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ পাঁচ সদস্যের একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

তেঁতুলতলা কখনও মাঠ ছিল না উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এটি একটি খালি জায়গা ছিল। পুলিশ তা কিনে নিয়েছে। এখন এটি পুলিশের নিজস্ব সম্পত্তি। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এখন যেহেতু এটি নিয়ে স্থানীয়রা আন্দোলন করছেন, তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর বুধবার বিকেলে তেঁতুলতলা মাঠে নাগরিক সমাবেশ থেকে ঘোষণা আসে, তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘেরাও করবেন তারা। 

সমাবেশ শেষে মাঠের সীমানা ঘেঁষে ১৪টি দেশীয় বৃক্ষ রোপন করা হয়। পাশাপাশি একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

সমাবেশে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘যারা এখানে খেলে, যারা এ মাঠের প্রকৃত মালিক; তারা এখানে আছে। তারা প্রতিবাদ করছে মাঠ কেন দখল করা হচ্ছে? আমরা সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করছি, সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথাবার্তা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে আমরা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরে যাওয়ার অবস্থায় আছি। সেখানে যদি মাঠ দখল হয়ে যায়, তাহলে এ এলাকার নতুন প্রজন্ম কোথায় যাবে? তারা (পুলিশ) বলেছে, ভবন নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে, কিন্তু রাজউক বলছে জানে না। তাহলে কীভাবে এখানে থানা ভবন নির্মাণ হয়? অবিলম্বে এখানে থানা ভবন নির্মাণ বন্ধ হোক।’