- ফিচার
- জীবনখাতার পাতা
জীবনখাতার পাতা

১৭ মে ২০২২
সকাল ৭টা
ঘুম থেকে সকালে ওঠা আমার প্রতিদিনের অভ্যাস। সেই স্কুলজীবন থেকে রোজ সকালে ঘুমকে ছুটি দিয়ে আসছি। সকাল ৭টার মধ্যেই ঘুম ভাঙে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়া, এরপর প্র্যাকটিস করেছি। মনমতো গানের প্র্যাকটিস না হলে পুরো দিনটিই খারাপ কাটে। শরীরচর্চায়ও বেশ সময় দিয়েছি। প্রায় দেড় মাস কানাডায় ছিলাম। গত ১৬ মে রাতে দেশে এসেছি। অনেক কাজ জমা আছে। যে জন্য দিনটি অন্যরকম ব্যস্ততায় যাবে- এমন ভাবনা মাথায় রেখে পথ চলি। দেশের মাটিতে অনেকদিন পর ফিরে আসার আনন্দে মন বেশ ফুরফুরে।
সকাল ১১টা
জ্যাম ঠেলে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে গিয়েছিলাম গুলশানে। সেখানে পৌঁছাতে একটু দেরি হয়েছে। তারপরও বাড়তি কোনো চাপ নিইনি। সময় ধরে চলার চেষ্টা করি সবসময়। তবুও কোনো কোনোদিন একটু ব্যতিক্রম হয়ে যায়।
দুপুর ২টা
গুলশান থেকে সোজা বাসায়। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সাধারণত দেড়টায় শেষ করার চেষ্টা করি। আজ আড়াইটায় দুপুরে খাবার খেয়ে বিছানায় একটু গা এলিয়ে নিলাম। অনেকদিন পর এমন অলস দুপুর পেলাম।
বিকেল ৫টা
গানের অনুষ্ঠান কিংবা স্টেজ শো না থাকলে এ সময় বাসায় থাকি। সন্ধ্যার আগে পুরোনো দিনের একটা বাংলা সিনেমা দেখেছি। মানুষের জীবনে একেকটা অধ্যায়ের একেক রকম মজায় কাটে। তাই তো স্মৃতির খাতা খুলে বসি প্রায়ই। খুব মনে পড়ে, শৈশবে দুপুরে স্কুল থেকে এসে কোনো রকম ভাত খেয়ে বাইরে ছুটে যেতাম। ডাব, আখের রস, টমেটো ও শসা নিয়ে কলাপাতায় লবণ দিয়ে সালাদ বানানো। ঘুড়ির সুতোয় মাঞ্জা দেওয়া, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা, ঘুঘু পাখি মারা, ফুটবল খেলাসহ নানা রকম কর্মকাণ্ড ছিল বিকেলে। চট্টগ্রামে কাটানো দিনগুলো ভোলার নয়। ধুলোমাখা শৈশবের রঙিন বিকেল খুব গভীরভাবে মিস করি। ফিরে যেতে মন চায় সেইসব দিনে।
রাত ৮টা
মাঝে মধ্যে সন্ধ্যা নামার পর থেকে নানা ভাবনা আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। আজকেও কেন জানি হঠাৎ করে স্মৃতি রোমন্থনে ডুবে গেলাম। আমার খুব মনে পড়ে গানের যাত্রাপথে যাদের সঙ্গে চলতে জীবনের অনেক কিছু ভাগাভাগি করেছি, সেই প্রিয় নামগুলো। লাকী আখান্দ, আলাউদ্দিন আলী, শেখ ইশতিয়াক, এন্ড্রু কিশোর, খালিদ হাসান মিলু, আইয়ুব বাচ্চু, আলী আকবর রুপু, কাওসার আহমেদ চৌধুরী, ফরিদ আহমেদ- কত স্মৃতির আকাশ রচিত হয়েছে নামগুলোর সঙ্গে। কীভাবে শোধ করব, তাদের এই ঋণ। আমি আবেগ-অনুভূতি, মনের ভাব অন্যদের মতো সহজে প্রকাশ করতে পারি না। বেশিরভাগ সময় একান্ত নিজের বিষয়গুলো নিজের মধ্যে ধারণ করে রাখি। রাতে ঘরে থাকতে ভালো লাগে না। কাজ না থাকলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি দূর-দূরান্তে।
রাত সাড়ে ১০টা
রাতের খাবার শেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নানা বিষয় শেয়ার করি। তারা কেউ এখন দেশে নেই। যে জন্য আগেভাগেই ঘুমের প্রস্তুতি নিই। আগামীকাল আবারও জীবনখাতার পাতায় নতুন কিছু লিখব।
মন্তব্য করুন