- ফিচার
- তরুণ গবেষকদের মিলনমেলা
তরুণ গবেষকদের মিলনমেলা

বিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলাম স্মরণে জাতীয় তরুণ গবেষক সম্মেলন বক্তৃতা দিচ্ছেন সেঁজুতি সাহা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটাপাহাড় রাস্তা সেজেছে বাহারি রঙের পতাকায়। লাল-নীল-সবুজ-হলুদ-কমলা আরও কত কী! বিশ্ববরেণ্য মনীষীদের বাণী ঠাঁই পেয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফেস্টুনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, ব্যবসা প্রশাসন অনুষদেও উৎসবের আমেজ, উজ্জ্বল বাতির ঝলকানিতে মুখর চারপাশ। এ সবকিছু যে আয়োজনকে ঘিরে সেটি ড. জামাল নজরুল ইসলাম জাতীয় তরুণ গবেষক সম্মেলনকে ঘিরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় এই তরুণ গবেষক সম্মেলন। এর লক্ষ্য, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষণা সংস্কৃতি তৈরি করা।
এতে দেশের ৭৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে ৫২৪ জন গবেষক সরাসরি যুক্ত হন। পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশল, জীববিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান, কৃষি ও উদ্ভিদ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিদ্যা, সমাজবিজ্ঞান ও মানববিদ্যা এবং বাণিজ্য বিভাগের গবেষকরা তাঁদের গবেষণাকর্ম উপস্থাপন করেন। এ সম্মেলনের বাড়তি আকর্ষণ ছিল 'থ্রি মিনিট থিসিস'; যা এই প্রথম বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি গবেষণার পোস্টার প্রদর্শন, গবেষণাকর্ম উপস্থাপন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মতো চোখ ধাঁধানো ইভেন্টও ছিল।
২১ মে সকাল ১০টায় শুরু হয় সম্মেলনের সূচনা পর্ব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার। সম্মেলন থেকে তরুণ গবেষকরা হাতে-কলমে গবেষণার পাঠ নিয়েছেন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ান হেলথ ইনস্টিটিউটের গবেষক জাহান আরা কভিড ভ্যাকসিন 'প্রয়োজন নাকি বিলাসিতা' শিরোনামের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে শুরুতেই চমক দেখান। এই প্রবন্ধের জন্য এক শাখায় সেরাদের সেরা নির্বাচিত হন তিনি। অবশ্য জাহান আরা একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও ১৩ জন সেরার সেরা গবেষক সম্মাননা জিতে নেন।
আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল 'কল্পনা ও উদ্ভাবনের পথে আগামী প্রজন্ম'। আয়োজনের প্রথম পর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। সম্মেলনে বক্তৃতা দেন অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম ও গবেষক সেঁজুতি সাহা। জামাল নজরুল ইসলাম স্মারক বক্তৃতার বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আরশাদ মোমেন। স্পিকার ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত। স্মৃতিচারণ করেন বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের মেয়ে সাদাফ সিদ্দিকি ও নারগিস ইসলাম। ড. মইনুল ইসলাম তাঁর আলোচনায় বলেন, 'তোমার রিসার্চ মেথডলজি যদি ঠিক থাকে, তুমি যদি বায়াসড না হও তাহলে তোমার জয় হবেই।'
জামাল নজরুল ইসলাম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজ্ঞানী ও গবেষক ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, 'জামাল নজরুল ইসলাম সবসময় নিজ দেশের জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিলেন। তাঁর ধ্যানজ্ঞানে সবসময়ই ছিল দেশের জন্য কিছু করা। তিনি চাইলে বিশ্বের যে কোনো জায়গায় থাকতে পারতেন। কিন্তু দেশকে ভালোবেসে দেশেই ফিরে আসেন। এরপর দেশে বসেই গবেষণাকর্ম চালিয়ে যান।' া
মন্তব্য করুন