- ফিচার
- দেয়ালে স্বপ্ন আঁকা সামি
দেয়ালে স্বপ্ন আঁকা সামি

নিজের আঁকা রিকশা পেইন্টিংয়ের সামনে মাহমুদুল কবির সামি ৩ ছবি :অনলাইন
মাহমুদুল কবির সামি। ২০২০ সাল থেকে দেয়াল আর্ট করছেন। সড়ক দুর্ঘটনা, ইভটিজিংসহ সমাজ সচেতনমূলক বিভিন্ন দেয়ালচিত্রের পাশাপাশি করুণাময়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ছোটদের স্কুলের দেয়ালও রাঙিয়েছেন তিনি। সামির আঁকাআঁকির হাতেখড়ি অল্প বয়স থেকেই। মা নাজমা চৌধুরী ছবি আঁকতেন। ফুটিয়ে তুলতেন বিভিন্ন নকশা; কখনও কাপড়ের ওপর, কখনও ফুলদানিতে। সাধারণ জিনিসকে রং দিয়ে অসাধারণ করে তুলতেন মা। মায়ের আঁকাআঁকি দেখেই সামির উৎসাহ জাগে। তারপর নিজেই মাকে অনুকরণ করে আঁকতে থাকেন। সামি আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে বিবিএ প্রথম বর্ষে পড়ছেন। পরিবারের সঙ্গে কুমিল্লায় বসবাস। আঁকাআঁকিতে শুরু থেকেই মা-বাবার সমর্থন পেয়ে আসছেন। আঁকিবুঁকিতে তাঁরা কখনও বাধা দেননি। বন্ধু নিযুমের রেস্টুরেন্টে প্রথম রিকশা পেইন্ট করেন সামি। কেন করেন এসব- এ প্রশ্নের উত্তরে সামি বলেন, 'ভালো লাগে, তাই করি। তবে দক্ষতা না থাকলে যে কেউ দেয়ালে আর্ট করতে পারবে না। অনেক মাপজোখ খসড়া করে নিতে হয়। কোন ছবিতে কোন রং ভালো মানাবে, সে ধারণা থাকতে হবে। রংকে কীভাবে বেশি উজ্জ্বলতা দেওয়া যায় তাও জানা থাকতে হবে। দেয়াল আর্টে প্রয়োজন হয় তুলি, ব্রাশ, রোলার, রং ইত্যাদি। এসব জোগাড় হলে যে ছবি আঁকা হবে; শুরুতে দেয়ালে পেন্সিল দিয়ে সেটি আঁকি। এর পর রং দিয়ে নকশা ফুটিয়ে তুলি। একটি দেয়ালে আর্ট করতে এক থেকে ৫ দিন সময় লেগে যায়।'
মেট্রো ৩৫০০ ও ক্যাফে অ্যাভেঞ্জারস
মেট্রো ৩৫০০। কুমিল্লার অন্যতম জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট। এর মালিক আব্দুর রহমান নিযুম বলেন, 'রেস্টুরেন্টে সামি খুব সুন্দর আর্ট করেছেন। যদিও মেট্রো ৩৫০০-তে ছিল সামির প্রথম দেয়াল আর্ট। এটা কেউ বিশ্বাসই করবে না। রেস্টুরেন্টের ৯টি দেয়ালে আর্ট করতে ১৫ দিন সময় নিয়েছেন সামি। বিষয় ছিল রিকশা পেইন্ট।' এ ছাড়া কুমিল্লার ক্যাফে অ্যাভেঞ্জারস রেস্টুরেন্টে গেলে যে কারও চোখ আটকে যাবে। এই রেস্টুরেন্টের মালিক দিদার আজিম বলেন, 'মারভেল স্টুডিওতে অ্যাভেঞ্জারস মুভির বিভিন্ন চরিত্রের ছবি আঁকা আছে। সেই চরিত্রগুলোর ছবি সামি সুন্দর করে আঁকেন আমার রেস্টুরেন্টের দেয়ালে। কাস্টমার তাঁর আর্ট খুব পছন্দ করেন। সামি বলেন- বাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য আর্ট করেছেন তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনাবিষয়ক সচেতনতায়
সামি সড়ক দুর্ঘটনাবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য দিয়ে দেয়াল রাঙিয়ে সতর্ক করছেন জনসাধারণ ও ড্রাইভারদের। তাঁর ভাষায়, 'ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়েতে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়। সেই দুর্ঘটনা বিষয়ে সচেতন করতেই সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের বিভিন্ন দেয়ালও রং করতে চাই। তারপর সারাদেশে সচেতনমূলক দেয়াল রাঙাতে চাই।'
মন্তব্য করুন