'প্রকাশই প্রতিভা'- এ স্লোগান ধারণ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি সব সময় চেষ্টা করে ছাত্রদের প্রতিভা বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ থেকে ৮ জুন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত 'বিতার্কিক অনুসন্ধান-২০২২'। প্রতিযোগিতাটি দুটি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্যায়ে পাবলিক স্পিকিং এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে সংসদীয় বিতর্ক।

পাবলিক স্পিকিং পর্বে ১৫০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। প্রাথমিক বাছাই পর্ব শেষে ১৫০ থেকে ৩৬ প্রতিযোগীকে নিয়ে আয়োজন করা হয় সংসদীয় বিতর্ক। ট্যাব ফরমেটে ৩৬ জন বিতার্কিক ১২টি দলে বিভক্ত হয়ে তিন রাউন্ড বিতর্ক করেন। ট্যাব রাউন্ডে ৭৯.৩৩ স্পিকার মার্কস নিয়ে 'ডিবেটর অব দ্য টুর্নামেন্ট' হন ময়নামতি দলের তানভীর, দেবতাখুম দলের জায়েদ এবং জাফলং দলের মুশফিক। ৩৬ জন থেকে শীর্ষ ১২ জনকে নিয়ে আয়োজিত হয় সেমিফাইনাল।

সেমিফাইনাল থেকে বাছাইকৃত সেরা ছয়জনকে নিয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজন করা হয় 'বিতার্কিক অনুসন্ধান-২০২২'-এর চূড়ান্ত পর্ব। চূড়ান্ত পর্বের মোশন ছিল 'এই সংসদ মনে করে, বর্তমান ছাত্ররাজনীতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিবর্জিত'। চূড়ান্ত পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের রাগীব আনজুম। প্রথম রানারআপ হন যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের সালেহীন ইবনে কবির। দ্বিতীয় রানারআপ হন আইন বিভাগের আসিফ আদনান অমি। তৃতীয় রানারআপ হন নৃবিজ্ঞান বিভাগের মোস্তফা মুশফিক তালুকদার।

চতুর্থ রানারআপ হন নৃবিজ্ঞান বিভাগের আশরাফুল আলম খান এবং পঞ্চম রানারআপ হন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তানভীর আহমেদ। বিতর্কের চূড়ান্ত পর্বে স্পিকারের ভূমিকা পালন করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর শান্তা তাওহিদা। বিতার্কিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে ডিইউডিএস পেল কিছু নতুন মুখ, যাঁরা সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিইউডিএসকে প্রতিনিধিত্ব করার মাধ্যমে অনেক গৌরব বয়ে আনবে। চ্যাম্পিয়ন রাগীব আনজুম বলেন, 'একজন মফস্বলের শিক্ষার্থী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ডিইউডিএসের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটা ইচ্ছা সব সময়ই ছিল।

সেই প্রেক্ষাপটে এই আয়োজন প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের সবার জন্য বিতর্ক শুরু করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।' প্রথম রানারআপ সালেহীন বলেন, 'বিভিন্ন গ্রাম ও মফস্বল থেকে মেধাবী বিতার্কিকরা ঢাবিতে আসেন। ক্যাম্পাসে আসার পর তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন ভয় কাজ করে, সংশয় কাজ করে। তাঁরা নিজেদের মেধা মেলে ধরতে পারেন না। এই আয়োজনের মাধ্যমে সেসব প্রতিবন্ধকতা তাঁরা পেছনে ফেলে সামনে উঠে এসেছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রাক্তন ও সিনিয়র বিতার্কিক এখানে বিচারক হিসেবে সময় দিয়ে আমাদের শিখিয়ে গেছেন। এটা আমাদের জন্য আনন্দের।'

ডিইউডিএসের সভাপতি শেখ আরমান বলেন, 'ডিইউডিএস সব সময় বিতার্কিক তৈরিতে কাজ করে। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সবাই যেন কথা বলতে পারে। কথা বলা খুব কঠিন কাজ এবং সে কাজই সহজ করে সবার সামনে তুলে ধরে ডিইউডিএস। শিক্ষার্থীদের আগামীর চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত করছে ডিইউডিএস। আগামীর নেতৃত্ব তৈরিতে আমরা কাজ করি নিয়মিত। আশা করি সংশ্নিষ্ট সবার সহযোগিতা আমরা পাব।'