- ফিচার
- আবার একসঙ্গে বিটিএস!
আবার একসঙ্গে বিটিএস!

আরএম, জিন, জিমিন, জে-হোপ, জ্যাংকক, ভি ও সুগা - ছবি :অনলাইন
১৪ জুন রাতে হুট করেই আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় জনপ্রিয় কোরীয় ব্যান্ড বিটিএস। ব্যান্ডের সদস্যদের একক ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতেই দলীয় সিদ্ধান্তে ভেঙে গেল কোরীয়দের 'ব্যাংতান বয়েজ'। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিও বার্তায় ব্যান্ড সদস্য সুগাও বলেন, 'এখন থেকে আমরা আলাদা হয়ে যাচ্ছি।' যদিও বলা হচ্ছে, ব্যান্ড সদস্যদের একক ক্যারিয়ার গড়তে এটা সাময়িক বিরতি। তবে বিশ্নেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, এটা বিটিএস অধ্যায়ের সমাপ্তিরই ঘোষণা। আবার একই মুদ্রার উল্টো পিঠের মতো অনেকে বলছেন, এটি তাদের নতুন অ্যালবাম প্রচারেরই কৌশল মাত্র!
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নতুন অ্যালবাম 'প্রুফ'
১৩ জুন ছিল দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ১০ জুন মুক্তি পায় তাদের নতুন অ্যালবাম 'প্রুফ'। প্রকাশের পরপরই আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে অ্যালবামটি। অ্যালবামে গান রয়েছে ২৮টি। টাইটেল গান 'ইয়েট টুু কাম'-এ উঠে এসেছে দলের ৯ বছরের পথচলার গল্প। এ গানের ভিডিওতে দলের সদস্যরা আগের জনপ্রিয় গানগুলোর বিভিন্ন দৃশ্যের ছায়া অবলম্বনে পারফর্ম করেছেন। প্রকাশের চার দিনের মাথায় গানটির ভিউ ৯৫ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে রেকর্ড প্রায় সাড়ে চার মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে অ্যালবামটি!
শুরুর কথা
জনপ্রিয় এই দক্ষিণ কোরিয়ান ব্যান্ডটি বিগহিট মিউজিকের অধীনে ২০১০ সালে ট্রেইনি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ২০১৩ সালের ১৩ জুন প্রথম অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে আত্মপ্রকাশ করে। আরএম, জিন, জিমিন, জে-হোপ, জ্যাংকক, ভি ও সুগা- এই সাত সদস্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল দলটি। শুরু থেকেই কোরীয় ব্যান্ডটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল উত্তেজনা। স্বীকৃতির বিচারে বিটিএসকে এশিয়ার সেরা বলা যায় নির্দি্বধায়।
বিলবোর্ড, গ্র্যামি ও মিউজিক অ্যাওয়ার্ড
গ্র্যামি, বিলবোর্ড থেকে শুরু করে দুনিয়ার সব নামি সংগীত পুরস্কারই আছে দলটির ঝুলিতে। জাতিসংঘ সদরদপ্তর, হোয়াইট হাউসসহ দুনিয়ার তাবৎ নামি স্থানেই ডাক পড়েছে তাদের। এ পর্যন্ত ৩২ মিলিয়নেরও বেশি অ্যালবামের কপি বিক্রি হয়েছে ব্যান্ডটির, যা কোরিয়ার ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দুবার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে মনোনয়ন পাওয়া ব্যান্ডটি ১২টি বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস, ৯টি আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।
বিটিএস যাত্রা
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দুনিয়াজুড়ে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিটিএস। মোটা দাগে তাদের কাজে চোখ রাখলে দেখা যায়- ২০১৭ সালে প্রথম কে-পপ ব্যান্ড হিসিবে পারফর্ম করে আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে। ২০১৮ সালে বিলবোর্ড চার্টে সাফল্য আসে তাদের। একই বছর বক্তব্য দেওয়ার আমন্ত্রণ পায় জাতিসংঘ থেকে। শুধু তাই নয়, যুক্ত হয় জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের সঙ্গেও। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো বিরতিও নিয়ে নেয় এ বছর। তবে কয়েক সপ্তাহ পর আবার ফিরে আসে। ২০২০ সালে তাদের তুমুল জনপ্রিয় গান 'ডিনামাইট'-এর কল্যাণে প্রথম কোরীয় ব্যান্ড হিসেবে বিলবোর্ড হট ১০০ টপ চার্টের শীর্ষে উঠে আসে। এরপর ২০২১ সালে প্রথম এশীয় ব্যান্ড হিসেবে আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে আর্টিস্ট অব দ্য ইয়ার স্বীকৃতি পাওয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয়বারের মতো গান থেকে বিরতি নেয়। দ্রুত আবার গানে ফিরে আসে। চলতি বছরের জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করতে হোয়াইট হাউস সফরে যায়।
আবার একসঙ্গে বিটিএস!
বিটিএস আগে তিনবার আলাদা হয়ে ফের যুক্ত হয়েছে। এবারও যুক্ত হওয়ার আশ্বাস মেলে তাদেরই বক্তব্যে। জে-হোপ বলেন, 'আমরা এখন থেকে আলাদা থাকব। আমাদের শিখতে হবে কীভাবে একসঙ্গে থাকা যায়। আশা করি, আপনারা এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখবেন না, স্বাস্থ্যকর এক ব্যবস্থা হিসেবেই ভাববেন।' আপাতত ব্যান্ড ভেঙে গেলেও ভবিষ্যতে আবারও একত্র হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি ব্যান্ডটি। সুগা বলেন, 'আমাদের এই বিচ্ছেদ আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যান্ড ভেঙে যাওয়া নয়।' আরেক সদস্য জাংকুক বলেন, 'প্রতিজ্ঞা করছি, আমরা আরও পরিণত হয়ে ফিরে আসব।' আমরাও সেই ফিরে আসার প্রহর গুনি!
মন্তব্য করুন