![প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ [২৯ জুন ১৮৯৩-২৮ জুন ১৯৭২]](https://samakal.com/uploads/2022/06/online/photos/Untitled-52-samakal-62b4a6f17b4c6.jpg)
প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ [২৯ জুন ১৮৯৩-২৮ জুন ১৯৭২]
বাঙালি প্রথিতযশা বিজ্ঞানী প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশকে আধুনিক ভারতীয় পরিসংখ্যানের জনক বলা হয়। তাঁর পিতৃপুরুষদের আদিনিবাস ছিল এই বাংলাদেশেই। তাঁর পিতামহ ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গুরুচরণ বিক্রমপুর থেকে কলকাতায় গিয়ে ব্যবসা শুরু করেন ১৮৫৪ সালে। গুরুচরণের বড় ছেলে সুবোধচন্দ্র এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীর বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার পর শিক্ষাবিদ হয়েছিলেন। তিনি রয়্যাল সোসাইটি অব এডিনবরার ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন কার্ডিফ ইউনিভার্সিটি অব ফিজিওলজি বিভাগের প্রধান। গুরুচরণের ছোট ছেলে প্রবোধ চন্দ্র ছিলেন প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশের বাবা।
মহলানবীশ কলকাতার ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুলে প্রাথমিক শেষ করেছিলেন এবং ১৯০৮ সালে স্নাতক হন। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগ দেন, যেখানে তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু এবং প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। অন্যদের মধ্যে ছিলেন মেঘনাদ সাহা এক বছরের জুনিয়র এবং সুভাষচন্দ্র বসু দুই বছরের জুনিয়র। মহলানবীশ ১৯১২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য ১৯১৩ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান।
গণিত, বিজ্ঞান ও পরিসংখ্যানের পাশাপাশি প্রশান্ত চন্দ্রের ছিল নিখাদ সাহিত্যপ্রীতি। রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভেরও সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর। তিনি বেশ কিছুকাল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছিলেন। বলা হয়, মহলানবীশ নাকি প্রবৃত্তিগতভাবে ছিলেন একজন রাশিবিজ্ঞানী, আর বিশ্বাসের দিক থেকে ছিলেন একজন অর্থনীতিবিদ। প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ তখন ভারতীয় বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক আইকন। তাঁর আশপাশে জড়ো হতেন দেশবিদেশের নামজাদা প্রতিভা, অনন্য মনীষারা। প্রেসিডেন্সি কলেজেই মহলানবীশ প্রতিষ্ঠা করেন স্ট্যাটিসটিক্যাল ল্যাবরেটরি। এর গণ্ডির মধ্যেই রেজিস্টার্ড সোসাইটি হিসেবে ১৯৩১ সালে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু। এ দিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশিবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪১-এ, যা এশিয়ার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতকোত্তর স্ট্যাটিসটিক্স ডিপার্টমেন্ট। মহলানবীশ তাঁর বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব সামলান। ১৯৫৮-তে আমেরিকায় নর্থ ক্যারোলাইনার রিসার্চ ট্রায়াঙ্গলে যখন স্ট্যাটিসটিক্সের প্রথম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে গার্টরুড কক্সের নেতৃত্বে, আইএসআই হয়েছে তাঁর মডেল। একটি উন্নয়নশীল দেশের মডেল গ্রহণ করেছে একটি উন্নত দেশ, এমন উদাহরণ বাস্তবিকই বিরল। একাধিক মাত্রার পরিমাপের ওপর ভিত্তি করে কোনো বিতরণ থেকে একটি বিন্দু কতটা বিভক্ত হয় তা খুঁজে পাওয়ার জন্য মহলানবীশ দূরত্ব হলো এক বহুল ব্যবহূত মেট্রিক। এটি ক্লাস্টার বিশ্নেষণ এবং শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। এটি সর্বপ্রথম ১৯৩০ সালে জাতিগত তুলনামূলক গবেষণার প্রসঙ্গে মহলানবীশ প্রস্তাব করেছিলেন। তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলো বড় আকারের নমুনা সমীক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত। তিনি পাইলট সমীক্ষার ধারণাটি প্রবর্তন করেছিলেন এবং নমুনা পদ্ধতিগুলোর কার্যকারিতাটির পক্ষে ছিলেন। পরবর্তী জীবনে মহলানবীশ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। স্বাধীন ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অবদান রেখেছিলেন। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তিনি শিল্পায়নের ওপর জোর দিয়েছিলেন। উন্নত গণনার সুবিধার জন্যে আইএসআই-ই আমদানি করে ভারতের প্রথম কম্পিউটার। সালটা ১৯৫৬।
বিজ্ঞান ও সেবার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য তিনি ভারত সরকার থেকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ পেয়েছিলেন।
১৯৭২ সালের ২৮ জুন পরলোকগমন করেন প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ।
প্রশ্ন
১। প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ কাকে বিয়ে করেছিলেন?
২। রাশিবিজ্ঞানের যে জার্নালটি শুরু করেছিলেন প্রশান্ত চন্দ্র, তার নাম কী?
৩। ব্রাহ্ম সমাজের কার্যনির্বাহক সমিতিতে রবীন্দ্রনাথকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রশান্ত চন্দ্রের সাথে আর কে প্রস্তাব করেছিলেন?
কুইজ ৫৯-এর উত্তর
১। চিকনির চর
২। আমেরিকা আমি তোমাকে কোনোদিন ক্ষমা করবো না (২০০৫)
৩। উপন্যাস
কুইজ ৫৯-এর জয়ী
আফরোজা সুলতানা
মগবাজার, ঢাকা
আহমেদ আদনান
তেজগাঁও, ঢাকা
নিয়ম
পাঠক, কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ২৭ জুন সোমবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।
মহলানবীশ কলকাতার ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুলে প্রাথমিক শেষ করেছিলেন এবং ১৯০৮ সালে স্নাতক হন। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগ দেন, যেখানে তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু এবং প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। অন্যদের মধ্যে ছিলেন মেঘনাদ সাহা এক বছরের জুনিয়র এবং সুভাষচন্দ্র বসু দুই বছরের জুনিয়র। মহলানবীশ ১৯১২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য ১৯১৩ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান।
গণিত, বিজ্ঞান ও পরিসংখ্যানের পাশাপাশি প্রশান্ত চন্দ্রের ছিল নিখাদ সাহিত্যপ্রীতি। রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভেরও সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর। তিনি বেশ কিছুকাল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছিলেন। বলা হয়, মহলানবীশ নাকি প্রবৃত্তিগতভাবে ছিলেন একজন রাশিবিজ্ঞানী, আর বিশ্বাসের দিক থেকে ছিলেন একজন অর্থনীতিবিদ। প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ তখন ভারতীয় বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক আইকন। তাঁর আশপাশে জড়ো হতেন দেশবিদেশের নামজাদা প্রতিভা, অনন্য মনীষারা। প্রেসিডেন্সি কলেজেই মহলানবীশ প্রতিষ্ঠা করেন স্ট্যাটিসটিক্যাল ল্যাবরেটরি। এর গণ্ডির মধ্যেই রেজিস্টার্ড সোসাইটি হিসেবে ১৯৩১ সালে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু। এ দিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশিবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪১-এ, যা এশিয়ার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতকোত্তর স্ট্যাটিসটিক্স ডিপার্টমেন্ট। মহলানবীশ তাঁর বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব সামলান। ১৯৫৮-তে আমেরিকায় নর্থ ক্যারোলাইনার রিসার্চ ট্রায়াঙ্গলে যখন স্ট্যাটিসটিক্সের প্রথম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে গার্টরুড কক্সের নেতৃত্বে, আইএসআই হয়েছে তাঁর মডেল। একটি উন্নয়নশীল দেশের মডেল গ্রহণ করেছে একটি উন্নত দেশ, এমন উদাহরণ বাস্তবিকই বিরল। একাধিক মাত্রার পরিমাপের ওপর ভিত্তি করে কোনো বিতরণ থেকে একটি বিন্দু কতটা বিভক্ত হয় তা খুঁজে পাওয়ার জন্য মহলানবীশ দূরত্ব হলো এক বহুল ব্যবহূত মেট্রিক। এটি ক্লাস্টার বিশ্নেষণ এবং শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। এটি সর্বপ্রথম ১৯৩০ সালে জাতিগত তুলনামূলক গবেষণার প্রসঙ্গে মহলানবীশ প্রস্তাব করেছিলেন। তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলো বড় আকারের নমুনা সমীক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত। তিনি পাইলট সমীক্ষার ধারণাটি প্রবর্তন করেছিলেন এবং নমুনা পদ্ধতিগুলোর কার্যকারিতাটির পক্ষে ছিলেন। পরবর্তী জীবনে মহলানবীশ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। স্বাধীন ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অবদান রেখেছিলেন। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় তিনি শিল্পায়নের ওপর জোর দিয়েছিলেন। উন্নত গণনার সুবিধার জন্যে আইএসআই-ই আমদানি করে ভারতের প্রথম কম্পিউটার। সালটা ১৯৫৬।
বিজ্ঞান ও সেবার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য তিনি ভারত সরকার থেকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ পেয়েছিলেন।
১৯৭২ সালের ২৮ জুন পরলোকগমন করেন প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ।
প্রশ্ন
১। প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ কাকে বিয়ে করেছিলেন?
২। রাশিবিজ্ঞানের যে জার্নালটি শুরু করেছিলেন প্রশান্ত চন্দ্র, তার নাম কী?
৩। ব্রাহ্ম সমাজের কার্যনির্বাহক সমিতিতে রবীন্দ্রনাথকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রশান্ত চন্দ্রের সাথে আর কে প্রস্তাব করেছিলেন?
কুইজ ৫৯-এর উত্তর
১। চিকনির চর
২। আমেরিকা আমি তোমাকে কোনোদিন ক্ষমা করবো না (২০০৫)
৩। উপন্যাস
কুইজ ৫৯-এর জয়ী
আফরোজা সুলতানা
মগবাজার, ঢাকা
আহমেদ আদনান
তেজগাঁও, ঢাকা
নিয়ম
পাঠক, কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ২৭ জুন সোমবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।
মন্তব্য করুন