গ্রিন সুপার, বিজলি, স্টার প্লাস, আলতাববাদ, হোয়াইট মার্বেল- এগুলো কোনো মার্কেট, পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, অজানা স্থান বা টাইলসের নাম নয়। এগুলো এমন সব সবজির জাত যেগুলোর নাম হয়তো অনেকেই শোনেননি। শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া গ্রামে এমনই ব্যতিক্রমী সবজি চারার 'মেলা' বসেছে।

এটি প্রচলিত কোনো মেলা নয়; এ গ্রামে বিশাল এলাকাজুড়ে ৩২টি নার্সারি গড়ে উঠেছে। এসব নার্সারির মালিকরাই তাঁদের নার্সারিতে বিক্রি করছেন সবজির চারা। নার্সারিগুলোতে বগুড়া ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকে আসা কৃষক ও সবজি চারার ব্যাপারীদের সমাগম এতটাই বেড়েছে, যা মেলায় রূপ নিয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে চারা কিনতে আসা চাষিদের পদচারণায় কামারপাড়া গ্রাম এখন মুখর। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই মেলা।

সবজি চারা উৎপাদনকারীরা জানান, এ বছর প্রতি হাজার হাইব্রিড মরিচের চারা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, বেগুনের চারা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং ফুলকপির চারা ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দূর থেকে চারা কিনতে আসা সবজি চাষিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করছেন নার্সারি মালিকরা।

তারা আরও জানান, বিকাশ বা নগদে টাকা পাঠিয়ে অনেকেই অগ্রিম বুকিং দিচ্ছেন। হাইব্রিড মরিচের জনপ্রিয় জাতগুলো হলো- গ্রিন সুপার, বিজলি, বিজলি প্লাস, স্টার প্লাস, লাইট মাস্টার, লঙ্কা ১৮২০; বেগুনের জনপ্রিয় জাত- আলতাববাদ, মেন্টল, ভেঞ্চুরা, গ্রিনবল; ফুলকপির জনপ্রিয় জাত- রাইস বক্স, লিডার, ক্যাপ্টেন, হোয়াইট মার্বেল ইত্যাদি।

জারিফ-জামিল নার্সারির মালিক আবু সাঈদ জানান, এসব নার্সারিতে চারা উৎপাদন, পরিচর্যা ও বিপণনের কাজে সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

সবজির চারা কিনতে আসা সিরাজগঞ্জ জেলার শিমলা গ্রামের কৃষক আবদুল কাদেরের ভাষ্য, তিনি গত বছর ৬৪ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করে আড়াই লাখ টাকা এবং ৫৮ শতক জমিতে বেগুন চাষ করে ৩ লাখ টাকা লাভ করেছেন।

জামালপুরের চারা ব্যবসায়ী মোতাহার হোসেন বলেন, তিনি গত ছয় বছর ধরে চারার ব্যবসা করছেন। এখান থেকে চারা কিনে বেশ কয়েকটি জেলার কৃষকদের কাছে বিক্রি করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম জানান, চারা উৎপাদনকে গুরুত্ব দিয়ে বীজ, মাটি, চারা শোধনসহ সুষম সার, রোগ ও পোকা দমনে প্যাকেজ আকারে চারা উৎপাদন প্রযুক্তি কৃষকদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। এতে চারার মান ভালো হচ্ছে এবং চারা থেকে উৎপাদনও বাড়ছে।