রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক ঠিকাদারের কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০তলা বিজ্ঞান ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারের কাছে এই টাকা দাবি করা হয়। তবে ছাত্রলীগ নেতা মোমিন বলছেন- তিনি চাঁদা নয়, ‘ঈদ সালামি’ চেয়েছিলেন। এর আগেও ঈদের পূর্বে ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে তিনি সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি এই টাকা নেওয়ার  বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

২০ তলা বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ কাজের জন্য ঠিকাদারির দায়িত্ব পেয়েছেন ‘মজিদ অ্যান্ড সন্স’।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিজ্ঞান ভবনের নির্মাণ কাজ চলাকালে ছাত্রলীগ নেতা মোমিন সেখানে গিয়ে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় তিনি হল চালাতে তার খরচ হয় বলে জানান। এর আগে গত জুনের শেষ সপ্তাহে তিনি সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা চাঁদা নেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। শনিবারের চাঁদা চাওয়া বিষয়টি প্রকল্প পরিচালককে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি সমাধান করে।  

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণ কাজের দেখাশোনা করেন প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের ওই নেতা গত জুন মাসের শেষ দিকে একবার ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে। গত শনিবার ওই ছাত্রলীগ নেতা এসে ফের ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। হল চালাতে তার খরচ আছে দাবি করে তিনি চাঁদা চান।

তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। সোমবার প্রকল্প পরিচালক আমাদের জানিয়েছেন কাজ করতে সমস্যা হবে না।’

চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদা দাবি করিনি। ঈদ উপলক্ষে সালামি চেয়েছিলাম। তারা বলেছেন ঈদের পরে যোগাযোগ করতে তাই শনিবার গিয়েছিলাম সালামির জন্য।’ তবে গত জুনে সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী খন্দকার শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি প্রশাসনকে জানাই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রক্টর দপ্তরের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।’

তবে প্রক্টর আসাবুল হকের দাবি প্রক্টর দপ্তর এমন কিছু সমঝোতা করেনি। তিনি বলেন, ‘সমঝোতার বিষয়টি তোমার কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। এ সম্পর্কিত কোন সমঝোতা প্রক্টর দপ্তর থেকে করা হয়নি।’ তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ‘চাঁদা দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত আছে। তারা বিষয়টি চেপে যেতে চাচ্ছে। উপাচার্য নিজেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করেছেন।  

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘চাঁদা চাওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রক্টর দপ্তর এসব দেখেছে হয়তো।’ তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টির খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।