
জয়নবের ডান হাতে কলাপাতা রঙের গামছায় পেঁচানো খাবারের থালা ও বাটি। অন্য হাতে পুরোনো ফান্টার বোতলে পানি। বাবার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে গঙ্গাচড়া বিলে যাচ্ছে সে। সাহাবাড়ির পাকুড় গাছতলায় পৌঁছে আকাশের দিকে তাকায়। আষাঢ়ের আকাশ। সকাল-বিকাল আকাশজুড়ে কালো মেঘ লেগেই থাকে। নারকেল ও সুপারিপাতার ডাক শুনে আকাশের মেঘ বৃষ্টি হয়ে নামে। ভিজিয়ে দেয় জয়নবদের দুধল গ্রামের মেঠোপথ, স্কুল-মাদ্রাসা ও হাটবাজার।
আট বছর বয়সী জয়নবের পায়জামার কোঁচড়ে এক ছড়া পাকা বেতুন। খাবারের পুঁটলি ও পানির বোতল হাতবদল করার সময় পাঁচটি বেতুন মুখে পুরে। গতরাতে বুবুর কাছে শেখা নতুন শোলকটি সশব্দে আওড়ায়। শোলক পাঠের শব্দে কাগজি লেবুর ঝোপ থেকে দুই জোড়া লেজনাচানি যায় উড়ে। খাবারের বাটি নামিয়ে রেখে লেজনাচানির ওড়াউড়ি দেখে জয়নব। শিমুল তুলার মতো সাদা পশম লেজনাচানির গলায় ঝুলে থাকে। হেলিকপ্টারের পাখার মতো লেজের ছোঁয়ায় হলুদ সজনে পাতা ঝরে পড়ে। আবার আকাশ দেখে জয়নব। বেলা উঠেছে অনেক দূর। বাজানের কথা মনে পড়ে। হয়তো তাঁর ক্ষুধা পেয়েছে খুব। লেজনাচানিরাই তাঁকে দেরি করিয়েছে। পাখিদের পাশ কাটিয়ে দ্রুত পা চালায় সে। তার চেয়ে আরও দ্রুত পায়ে পেছন থেকে আসেন মজিদ মৃধা। দুধল গ্রামের শিশুরা তাঁকে ভয় পায়। তিনি ঘুমের মধ্যে হাঁটেন, কথা বলেন এবং গান বাঁধেন। ভয় পেলে একটি দোয়া পড়তে হয়। জয়নবের কিছুই মনে পড়ছে না। এক দৌড়ে মোল্লাবাড়ির উঠোনে ঢুকে যায় সে। কলাপাতার পর্দা ছিঁড়ে যায় জয়নবের হাতের টানে। আনাচ মোল্লার মেজ বউ বলে, 'ও মনু, ডর পাইছো?'
সূর্যের রোশনাই বেড়েছে। আর পাঁচ মিনিট হাঁটলেই গঙ্গাচড়া বিল। কারখানা নদীর তীর ধরে পা চালায় জয়নব। কারখানা নদীর ঘোলা জলে এগারোটি মহিষ দাঁড়িয়ে আছে। গোবগা ও ঝুঁটি শালিক খেলা করছে মহিষের মাথায় ও পিঠে। একটি গোবগার চঞ্চু চলে গেছে লোম ঝরে যাওয়া মহিষটির কানের ভেতর। মহিষের পাল দেখতে দেখতে পিয়াস লাগে জয়নবের। বুড়ো বটগাছের তলায় বসে ফান্টার বোতল থেকে পানি পান করে। বটের শরীর থেকে একটি কাঠবিড়ালি নামতে নামতে আবার উঠে যায়। জয়নবও উঠে দাঁড়ায়। দ্রুত হাঁটতে থাকে খাবারের বাটি হাতে।
বয়স :১+২+৩+৩ বছর; চতুর্থ শ্রেণি, এসকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকগঞ্জ
আট বছর বয়সী জয়নবের পায়জামার কোঁচড়ে এক ছড়া পাকা বেতুন। খাবারের পুঁটলি ও পানির বোতল হাতবদল করার সময় পাঁচটি বেতুন মুখে পুরে। গতরাতে বুবুর কাছে শেখা নতুন শোলকটি সশব্দে আওড়ায়। শোলক পাঠের শব্দে কাগজি লেবুর ঝোপ থেকে দুই জোড়া লেজনাচানি যায় উড়ে। খাবারের বাটি নামিয়ে রেখে লেজনাচানির ওড়াউড়ি দেখে জয়নব। শিমুল তুলার মতো সাদা পশম লেজনাচানির গলায় ঝুলে থাকে। হেলিকপ্টারের পাখার মতো লেজের ছোঁয়ায় হলুদ সজনে পাতা ঝরে পড়ে। আবার আকাশ দেখে জয়নব। বেলা উঠেছে অনেক দূর। বাজানের কথা মনে পড়ে। হয়তো তাঁর ক্ষুধা পেয়েছে খুব। লেজনাচানিরাই তাঁকে দেরি করিয়েছে। পাখিদের পাশ কাটিয়ে দ্রুত পা চালায় সে। তার চেয়ে আরও দ্রুত পায়ে পেছন থেকে আসেন মজিদ মৃধা। দুধল গ্রামের শিশুরা তাঁকে ভয় পায়। তিনি ঘুমের মধ্যে হাঁটেন, কথা বলেন এবং গান বাঁধেন। ভয় পেলে একটি দোয়া পড়তে হয়। জয়নবের কিছুই মনে পড়ছে না। এক দৌড়ে মোল্লাবাড়ির উঠোনে ঢুকে যায় সে। কলাপাতার পর্দা ছিঁড়ে যায় জয়নবের হাতের টানে। আনাচ মোল্লার মেজ বউ বলে, 'ও মনু, ডর পাইছো?'
সূর্যের রোশনাই বেড়েছে। আর পাঁচ মিনিট হাঁটলেই গঙ্গাচড়া বিল। কারখানা নদীর তীর ধরে পা চালায় জয়নব। কারখানা নদীর ঘোলা জলে এগারোটি মহিষ দাঁড়িয়ে আছে। গোবগা ও ঝুঁটি শালিক খেলা করছে মহিষের মাথায় ও পিঠে। একটি গোবগার চঞ্চু চলে গেছে লোম ঝরে যাওয়া মহিষটির কানের ভেতর। মহিষের পাল দেখতে দেখতে পিয়াস লাগে জয়নবের। বুড়ো বটগাছের তলায় বসে ফান্টার বোতল থেকে পানি পান করে। বটের শরীর থেকে একটি কাঠবিড়ালি নামতে নামতে আবার উঠে যায়। জয়নবও উঠে দাঁড়ায়। দ্রুত হাঁটতে থাকে খাবারের বাটি হাতে।
বয়স :১+২+৩+৩ বছর; চতুর্থ শ্রেণি, এসকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকগঞ্জ
মন্তব্য করুন